নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : ঘরোয়া হকির মৌসুম সুচক টুর্নামেন্ট মার্সেল ক্লাব কাপ থেকে বিদায় নিয়েছে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। অন্যদিকে টুর্নামেন্টের ফাইনালে জায়গা করে নিলো ঊষা ক্রীড়া চক্র। গতকাল বিকালে মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে আসরের প্রথম সেমিফাইনালে হাড্ডা হাড্ডি লড়াই করেছে মোহামেডান ও ঊষা। শেষ পর্যন্ত নাটকীয় জয় পেলো ঊষাই। তারা শুট আউটে মোহামেডানকে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট কাটে। নির্ধারিত সময়ের খেলা ৩-৩ গোলে অমিমাংসিত ছিলো। তাই খেলা শেষে ফলাফল নির্ধারণের জন্য পেনাল্টি শুটআউটের ব্যবস্থা করা হয়। এতে ঊষা চারটি গোল করলেও মোহামেডান দু’টি গোল করতে সক্ষম হয়। ফলে শুটআউটে ঊষা জয় পায় ৪-২ গোলের। সব মিলিয়ে ম্যাচে ঊষা ৭-৫ গোলে হারায় মোহামেডানকে।
ক্লাব কাপের প্রথম সেমিতে কাল মোহামেডান-ঊষা নিজেদের কৌশলকে যাচাই-বাছাই করার মানসিকতা নিয়ে বেশ ধীরগতিতেই খেলা শুরু করে। বিশেষ করে চার পাকিস্তানী দলে যোগ দেয়ায় ম্যাচে মোহামেডানের মাঝমাঠ ও রক্ষণভাগের দুর্বলতা চোখে পড়েনি এ ম্যাচে। তবে প্লে-মেকার রাসেল মাহমুদ জিমির হ্যামস্ট্রিং সমস্যার কারণে ম্যাচে অনুপস্থিতি নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা ছিলো মোহামেডানের জন্য। তারপরও ম্যাচের প্রথম আক্রমণটি করে মোহামেডানই। ছয় মিনিটে তাদের পাকিস্তানি ফরোয়ার্ড ওমর ভুট্টুর পাসে বক্সের মাঝামাঝি থেকে রিভারসুইপ নিয়েছিলেন রুবেল। কিন্তু বল সাইডপোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। তবে প্রথম পেনাল্টি কর্নার (পিসি) থেকেই গোল করে ৯ মিনিটে এগিয়ে যায় ঊষা। পিসির পুশটি করেছিলেন অধিনায়ক কৃষ্ণ কুমার। সারোয়ারের স্টপের পর মালয়েশিয়ান ফরোয়ার্ড জুলহাইরি বিন হাশিম গতানুগতিক স্কুপ বা হিট না করে কব্জির মোচড়ে বল পাস দেন কৃষ্ণ কুমারকে। আলতো ছোয়ায় বল পোস্টে প্রবেশ করান তিনি (১-০)। পিছিয়ে পরার পর মোহামেডান প্রতিপক্ষের উপর বেশ চাপ সৃষ্টি করে খেললেও দক্ষ ফিনিশারের অভাবে গোল পায়নি তারা। ২৫ মিনিটে সালমান হোসেনের পুশ বিপদমুক্ত করেন ঊষার গোলরক্ষক আবু সাইদ নিপ্পন। পরের মিনিটেই কৃষ্ণ কুমার ও পুষ্কর ক্ষিসা মিমোর ওয়ান-টুর পর মোহামেডান গোলরক্ষক জাহিদের গায়ে বল মারেন ইসমাইল বিন আবু। ৩০ মিনিটে প্রথম পিসি পায় মোাহমেডান। ওমর ভুট্টুর পুশ, রানার স্টপে তাসাওয়ার আব্বাসের নিচু হিট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে রক্ষা করেন ঊষা গোলরক্ষক নিপ্পন। পরের মিনিটেই একটি সংঘবদ্ধ আক্রমণ থেকে গোল পায় সাদাকালোরা। এসময় কামরুজ্জামান রানার বক্সের উপর থেকে দেওয়া পাসে রিভার্স সুইপে সমতা আনেন তাসাওয়ার আব্বাস (১-১)।
বিরতির পাঁচ মিনিট পর সালমান হোসেনের অসাধারণ স্টিক ওয়ার্কে মোহামেডানকে এগিয়ে নেন তাসাওয়ার আব্বাস। ডানপ্রান্ত দিয়ে দ্রæত গতিতে এক হাতে স্টিক নিয়ে কোনাকুনি বল পাস দেন বক্সের মাঝামাঝি দাঁড়ানো আব্বাসকে। ফাঁকা পোস্টে বল ঠেলতে ভুল করেননি এই পাকিস্তানি ফরোয়ার্ড (২-১)। ৪৫ মিনিটে আবার ম্যাচে ফিরে ঊষা। পর পর তিনটি পিসির শেষটিতে কৃষ্ণ কুমারের পুশ সারোয়ারের স্টপের পর কোনাকুনি হিটে গোল করেন মালয়েশিয়ান ডিফেন্ডার শফিক জোলান (২-২)। খেলা শেষ হওয়ার চার মিনিট আগে কৃষ্ণর পাওয়ার হিটে ফ্লিপ করতে ব্যর্থ হন সারা ম্যাচেই নিষ্প্রভ থাকা মিমো। ৬৮ মিনিটে গোল করে মোহামেডানকে এগিয়ে নেন ওমর ভুট্টু। তাসাওয়ার আব্বাসের পাসে বক্সের বাঁমপ্রান্তে জায়গা করে নেন এই পাকিস্তানি ফরোয়ার্ড। সুবিধাজনক জায়গা থেকে জোরের উপর নেয়া রিভার্স হিটে গোল করেন তিনি (৩-২)। তবে ম্যাচের নির্ধারিত সময়ে ঊষাকে হারের হাত থেকে বাঁচান পুষ্কর ক্ষিসা মিমো। ইসমাঈল বিন আবুর ডানপ্রান্ত থেকে নেয়া পাওয়ার হিটে ফ্লিক করে ম্যাচে সমতা আনেন মিমো (৩-৩)। খেলা শেষ হতে তখন বাকি মাত্র ১০ সেকেন্ড। পরে পেনাল্টি শুটআউটে খেলার ফলাফল নির্ধারণ হয়। দল ফাইনালে ওঠার পর তাৎক্ষণিক ঊষার হকি কমিটির চেয়ারম্যান তারেক-এ আদেল খেলোয়াড়দের এক লাখ টাকা বোনাস দেন। আজ ক্লাব কাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আবাহনী লিমিটেডের প্রতিপক্ষ ঢাকা মেরিনার ইয়াংস ক্লাব। বিকাল ৪টায় মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে খেলাটি শুরু হবে। এ ম্যাচে জয়ী দল ফাইনালে ঊষার মুখোমুখি হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।