Inqilab Logo

শুক্রবার, ৩১ মে ২০২৪, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

স্যার আর ভাই নিয়ে সিলেট-১ আসনে নির্বাচনী লড়াই

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৮:৩৭ পিএম

রাজনীতিক দলের অংশ গ্রহনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন। রাজনীতিক দলের মধ্যে নেতাকর্মীদের পারস্পরিক সর্ম্পক ভাই, ক্ষেত্র বিশেষে লিডার। এই নাম-ডাক রাজনীতিকদের অহংকার, অলংকার। ভাই ডাকে কর্মীদের সাথে গভীর সর্ম্পকের নিবিড়তা প্রকাশ পায় পদবী-ধারী নেতাদের। তবে লিডার ডাকের মহাতœ রয়েছে আলাদা। শীষ নেতাদের লিডার ডেকেই তৃপ্তি পান তারা। নেতারাও বেশ মজেন সেই ডাকে। তবে স্যার ডাক একেবারে আলাদা রাজনীতিক ভাষায়। কিন্তু রাজনীতিকদের উপর যখন আমলা বা অরাজনৈতিক হেভিওয়েট পার্সন চড়ে বসেন তখন স্যার ডাকেই অপ্রত্যাশিতভাবে মানিয়ে নিতে হয়ে দলের নেতাকর্মীদের। বিশেষ করে নির্বাচনী মাঠে এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয় দলের নেতাকর্মীদের। সিলেটের নির্বাচনী মাঠে সিলেট-১ আসন ঘিরে দীর্ঘ দিন থেকে স্যাররাই চড়ে বসছেন রাজনীতিকদের ঘাড়ে। বিএনপির প্রার্থী মরহুম এম সাইফুর রহমানকে স্যার বলতেন নেতাকর্মীরা, তারপর আওয়ামীলীগের স্পিকার মরহুম হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতকে স্যার অভিধায় ডাকতে হয় নেতাকর্মীদের। এবার স্যার ডাক থেকে বের হতে সিলেট-১ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলেন ভাই পরিচয়ের একাধিক ভরসাপূর্ণ রাজনীতিক আ‘লীগের। আওয়ামীলীগের কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক, এক সময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ও দলের কেন্দ্রিয় নেতা, সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। তৃণমুল রাজনীতির মধ্যে তারা এখন দলের পরিক্ষিত কান্ডারী। নেতাকর্মীদের আত্মার-আত্মীয় তারা। রাজনীতিতে ধ্যান-জ্ঞান সার্বক্ষণিক তাদের। কিন্তু তারা মনোনয়ন যুদ্ধে হেরে যান স্যার ডাকের ড. একে আব্দুল মোমেনের কাছে। তাই স্যারকে নিয়ে ভোট রাজনীতিতে পথ চলতে হচ্ছে আ‘লীগ নেতাকর্মীদের। বিএনপি প্রার্থী তালিকায় উঠে এসেছিলেন আরেক স্যার ইনাম আহমদ চৌধুরী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন লাভে ব্যর্থ হন তৃণমুল নেতাকর্মীদের পছন্দের ভাই ডাকের মুক্তাদিরের নিকট। তবে সেই স্যার দ্রুত দল বদল করে আ‘লীগে যোগ দিয়েছেন। এখন স্যার আর ভাইকে নিয়ে ভোট রাজনীতিতে তুমুল ব্যস্ত দুই প্রধান দলের নেতাকর্মীরা। জমিয়ে তুলছেন প্রচার প্রচারনাও তারা। স্থানীয় এক রাজনীতিক বিশ্লেষকের মতে, ভাই অগ্রাধিকার দেন দলের নেতাকর্মীদের মতামত, আর স্যারকে গুরুত্ব দিয়ে চলতে হয়ে রাজনীতিক নেতাকর্মীদের। স্থানীয় একাধিক নেতাকর্মীরা বলেন, সুসময়ের স্যারদের আনাগোনা থাকলেও, দলের বা কর্মীদের দু:সময়ের রাজনীতিক ভাইদের গুরুত্ব অপরিসীম। সামন থেকে নেতৃত্ব দিয়ে পরীক্ষিত হয়ে উঠেন দলের নেতাকর্মীদের কাছে এই রাজনীতিক ভাইরা। বিপদে-আপদে সার্বিক সার্পোট দিয়ে চাঙ্গা রাখেন রাজনীতির প্রোফাইল । মন খুলে কথা বলা যায় তাদের সাথে ব্যক্তিগত বা রাজনীতির। দলে জবাবদিহিতাও করতে হয় তাদের। তাই সেই ভাইদের জন্য জীবনবাজী রাখতে প্রস্তুত থাকেন দলের নেতাকর্মীরা। কিন্তু স্যার তো উপর তলার নিরাপদ ব্যক্তি। রাজপথে পোড়া খেতে হয় না, কর্মীদের সাথে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গড়ে উঠে না আতœার সর্ম্পক। তারা ভোট রাজনীতিতে সফল হলে, রাজনীতিক পরিচয়ধারী কিছু সুবিধাভোগী বা অরাজনৈতিক নিজস্ব ব্যক্তি বলয়ে অভ্যন্ত হয়ে পড়েন। দল সরকার গঠন করলে অনেকের মধ্যমনি, হারলে তারা রাজনীতি ময়দান ছেড়ে দুরে চলে যান নিরাপদে। প্রসঙ্গত, ৪ দলীয় জোট সরকারকালীন প্রাইভেটাইজেশন বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক আমলা ইনাম আহমদ চৌধুরী। গত ১০ বছরে আ‘লীগ সরকারের সময় দলের নেতাকর্মী সহ শীষ রাজনীতিকরা মাঠে-ময়দানে অগ্নি-পরীক্ষার মুখোমুখি হলেও তিনি ছিলেন নিরাপদ। দলের ভাইস চেয়ারম্যান পদ অলংকিত করলেও রাজপথে বা কর্মসূচীতে তার অবস্থান ছিল না সেইভাবে । নির্বাচনী পরিবেশ দেশে আসতেই বিএনপির মনোনয়ন যুদ্ধে নেমে পড়েন কোমর বেঁধে। মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ আসনে তিনি হতে চেয়েছিলেন দলের প্রার্থী। কিন্তু সিলেটের রাজপথে দলের কর্মসূচী বা বিগত মেয়র নির্বাচনে দলের প্রার্থীর পক্ষে নিজের উপস্থিতির মাধ্যমে তৃণমুল নেতাকর্মীদের সাথে পরিক্ষীত সর্ম্পক গড়ে উঠেনি তার। হয়তো এর প্রয়োজনও বোধ করেনি এই স্যার। সে কারনে স্যার রাজনীতিক পরীক্ষায় আত্মার-আত্মীয় হয়ে উঠতে পারেননি বলে থাকেনি কোন পিছুটান। তাই ভবিষ্যত কোন নির্ভরযোগ্য আশ্বাসে হয়তো দল বদল করে এখন যোগ দিয়েছেন আ‘লীগে, এরকম মনে করছেন কিছু স্থানীয় রাজনীতিক।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ