বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনে বিএনপির মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক কর্ণেল (অব.) এম.আনোয়ারুল আজিম অভিযোগ করে বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট ডাকাতি করার লক্ষ্যে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে একই আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মো.তাজুল ইসলামের ‘অস্ত্রধারী ক্যাডার’রা। নির্বাচন কমিশনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অব্যাহতভাবে নৌকার প্রার্থীর লোকেরা প্রকাশে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে প্রতিটি এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর হামলা ও তাঁদের বাড়ি-ঘরে ভাঙচুর চালিয়ে গেলেও প্রশাসন ওই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একবারের জন্যও কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। এছাড়া নৌকার প্রার্থীর এসব ক্যাডারদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমানসহ এই পর্যন্ত চার বার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং রিটার্নিং অফিসার কুমিল্লার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাইনি বলে অভিযোগ তাঁর। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাতে সিইসি ও রিটার্নিং অফিসারসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে সরকারি ডাকযোগে একটি লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন তিনি। তার পরও মিলছে না কোন প্রতিকার। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কুমিল্লা-৯ আসনের নির্বাচনের সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
ধানের শীষের প্রার্থী কর্ণেল (অব.) এম.আনোয়ারুল আজিম অভিযোগ করে বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে কুমিল্লা-৯ নির্বাচনী এলাকার সর্বত্র ছাত্রলীগ, যুবলীগ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলারদের নেতৃত্বে নৌকার প্রার্থী ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স ও হ্যালমেট বাহিনী’ নামে সসস্ত্র ক্যাডার বাহিনী গঠন করেছেন। ওই ক্যাডাররা মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে সমগ্র নির্বাচনী এলাকায় তান্ডব চালিয়ে ভোটারদের মাঝে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে চলেছেন। যার ফলে আমি কিংবা আমার কোন কর্মীসমর্থরা প্রচার প্রচারণায় অংশ নিতে পারছেনা। এছাড়া আমি এবং আমার নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এই অবস্থায় নির্বাচনী মাঠে নামলে সহিংসতা, রক্তপাত এবং প্রাণনাশের আশংকা রয়েছে। আমি শৃংখলিত জীবনের একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা। সংঘাত-সংঘর্ষকে আমি কখনো প্রশয় দেইনি। আর বল প্রয়োগ করে কোন সাফল্য অর্জনেও আমি বিশ্বাসী নই। কারন আমি নির্বাচন করতে এসেছি, যুদ্ধ করতে আসিনি।
আনোয়ারুল আজিম আরো অভিযোগ করেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে নৌকার প্রার্থীর সন্ত্রাসীদের সহিংসতায় এই পর্যন্ত আমার ৫০ জনেরও বেশী নেতাকর্মী গুরতর আহত হয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের ২০ থেকে ২৫ ট বাড়ি-ঘর ভাংচুর হয়েছে। নৌকার প্রাার্থীর নির্দেশে অস্ত্রধারী এসব বাহিনী আমাকেও নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা করতে দিচ্ছে না। আমি নিজ বাড়িতে অবস্থানকালে গত বুধবার বিকেলে আমার বাড়িতে এবং আমার উপর হামলার উদ্দেশ্যে নৌকার প্রার্থীর ওই ক্যাডাররা আমার বাড়ির অদূরের বাদামতলী বাজারে প্রকাশ্যে অস্ত্র উচিঁয়ে মোটরসাইকেল মহড়া দিয়েছে ভোটারদের ভয় দেখিয়ে গেছে। সিইসি নির্দেশনা দিলেও একজন প্রার্থী হিসেবে আমাকে কোন প্রকার নিরাপত্তা দিচ্ছে না প্রশাসন। পাশাপাশী তাঁর (নৌকার প্রার্থী) নির্দেশে লাকসাম-মনোহরগঞ্জ থানা পুলিশ বিনা অপরাধে আমার নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা অব্যাহত রেখেছে। নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বারবার সাজানো মামলায় জড়ানো হচ্ছে। তাই আমি সিইসি ও রিটার্নিং অফিসারসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকলকে বলতে চাই নির্বাচনের সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করতে হলে এখনই নৌকার প্রার্থীর অস্ত্রধারী এসব ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স ও হ্যালমেট বাহীনি’র ক্যাডারদের নিয়ন্ত্রণ এবং গ্রেপ্তার করতে হবে। আর এসব অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার না করা হলে আমাদেরও সহিংসতার পথ বেছে নেওয়া ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা থাকবে না সেটাও পরিস্কারভাবে জানিয়ে দিতে চাই তাঁদের।
কুমিল্লা-৯ আসনের বিএনপির প্রার্থীর এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রির্টানিং অফিসার ও কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো.আবুল ফজল মীর বলেন, ওই প্রার্থীর আগের এবং বর্তমান অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে এসব ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জন্য আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলা হয়েছে। এছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আমরা সকল প্রকার প্রদক্ষেপ গ্রহন করছি।
এদিকে, এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মো.তাজুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।