বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি মাত্র নয় দিন। কালীগঞ্জ উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১১ ইউনিয়ন এবং সদরের চার ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ঝিনাইদহ-৪ সংসদীয় আসন। ভোটের দিন যতই এগিয়ে আসছে সরকার দলীয় প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তারা উৎফুল্ল আর ফুরফুরে আমেজে ভোটের মাঠে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার দলীয় সমর্থকরা প্রতিদিনই নির্বাচনী এলাকার মোড়ে মোড়ে সভা সমাবেশ করছে। তবে বিএনপির প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নির্বাচনী এলাকার সবখানে নৌকা প্রতিকের পোষ্টার দেখা গেলেও ধানের শীষের কোন পোষ্টার দেখা যায়নি। এখনো পর্যন্ত প্রকাশ্যে প্রচার প্রচারনায় দেখা যায়নি বিএনপি সমর্থকদের। তারা কৌশলে ভোটের প্রচারনা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। প্রতিদিনই নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের আটক করছে পুলিশ।
এ আসনে আওয়ামীলীগের নৌকার প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল আজীম আনার। তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হলে বাকি উন্নয়ণ কাজগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করবেন বলে অঙ্গীকার করে ভোট প্রার্থনা করছেন। এছাড়া একটি পাবলিক লাইব্রেরী, ফুডগোডাউন ও বিসিক শিল্পনগরী মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবেন বলেও জানান এই তরুণ সংসদ সদস্য।
অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থী স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাইফুল ইসলাম ফিরোজ। যিনি নির্বাচিত হলে প্রথমে কালীগঞ্জকে মাদকমুক্ত করবেন বলে ঘোষনা দিয়েছেন। এছাড়া উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া এলাকাগুলোতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়ণ কাজ করবেন বলে ইস্তেহার দিয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনি “তারুণ্যের প্রত্যয়” স্লোগান নিয়ে নির্বাচনী ইস্তেহার প্রচার করেছেন। নির্বাচিত হলে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করে সম্পুর্ণ দূর্নীতি এবং সন্ত্রাস নৈরাজ্য দমনে পদক্ষেপ নেবেন বলে অঙ্গিকার তার।
এছাড়া এ আসনে ভোটের মাঠে রয়েছে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের এইচ আই মোমতাজুর রহমান, এলডিপির খন্দকার মেহেদী হাসান এবং জাকের পাটির ইছাহক আলী বিশ^াস।
এ আসনে মোট ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৮১ হাজার ৬৮০ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৪১ হাজার ৭৫৪ জন এবং নারী ১ লাখ ৩৯ হাজার ৯২৬ জন। এখানে ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১১৬টি।
হাসপাতালে চালক না থাকায় নিজেই এ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে সড়ক দূর্ঘটনায় আহতদের যশোর হাসপাতালে পৌছে দিয়ে হৈচৈ ফেলে দেন সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। গত ৫ বছরে কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পুলিশ প্রটেকশন ছাড়াই মটরসাইকেল নিয়ে উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন ও নির্বাচনী এলাকার গ্রামের পর গ্রাম ঘুরে ভোটারদের নজর কেড়েছেন। যেখানেই হিন্দু-মুসলিম মৃত্যুর খবর সেখানেই হাজির হয়ে যান তিনি। এমনও দিন আছে ১০ মৃত ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে আলোচনায় এসেছেন সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার।
অন্যদিকে সাইফুল ইসলাম ফিরোজ ছাত্রজীবন থেকে জাতীয়তাবাদি আদর্শে গড়ে উঠলে নির্বাচনের মাঠে এবারই প্রথম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার সময় ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক এবং পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দ্বায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন।
নৌকার প্রার্থী আনোয়ারুল আজিম আনার জানান, গত ৫ বছরে আমার নির্বাচনী এলাকায় অর্ধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্টেডিয়াম, সড়ক পাকাকরণ, প্রতিটি গ্রাম শতভাগ বিদ্যুৎতায়ন, ব্রীজ কালভাট নির্মাণ, গরীব-অহসায় জনগনের সরকারি অনুদানসহ ব্যপক উন্নয়ন করেছেন। এখনো কিছু কাজ বাকি আছে, যা আবারো নির্বাচিত হলে শেষ করতে চাই। আবারো নির্বাচিত হলে একটি পাবলিক লাইব্রেরী, ফুডগোডাউন ও বিসিকনগরী মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবো।
ধানের শীষের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ফিরোজ জানান, নির্বাচিত হলে সুখে-দুঃখে জনগনের পাশে থাকবো। আমার নির্বচনী এলাকায় অনেক জনপ্রতিনিধি মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। আমি নির্বাচিত হলে প্রথমে মাদকমুক্ত করবো। এছাড়া এখনো অনেক এলাকা রয়েছে যেখানে কোন রাস্তা ও বিদ্যুৎ নেই। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেসব উন্নয়ণ কাজগুলো করবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।