পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আজ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করবে আওয়ামী লীগ। ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ মূল গ্লোগান সংবলিত এই ইশতেহারে ২১ বিশেষ অঙ্গীকারকে প্রাধান্য দিচ্ছে দলটি।
হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে সকাল ১০টায় জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হবে। ১০টা ২০ মিনিটে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী এবং ১০টা ৪০ মিনিটে ইশতেহার তুলে ধরবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। ডিজিটাল পদ্ধতিতে এই ইশতেহার তুলে ধরা হবে। ৬৪ পৃষ্ঠার এই ইশতেহারে সরকারি চাকরিতে প্রবেশসীমা বাড়ানোর বিষয়ে অঙ্গীকার থাকছে। ইশতেহার উপকমিটির একাধিক সদস্য এসব তথ্য জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সূত্র জানিয়েছে, ভবিষ্যত দিকদর্শনে আজকের বাংলাদেশ আগামীতে কোথায় থাকবে, কী কী পদক্ষেপ ও পরিকল্পনার কর্মসূচিতে এগিয়ে যাবে সেই রূপরেখা রয়েছে এবারের ইশতেহারে। এতে ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালনসহ জাতিসংঘ ঘোষিত ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পরিকল্পনা রয়েছে। আওয়ামী লীগের এবারের ইশতেহারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বিশেষ উদ্ধৃতি ব্যবহার করা হয়েছে। সেটি হলো: ‘এ স্বাধীনতা আমার ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমার মানুষ পেট ভরে ভাত না খায়। এই স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এ দেশের মানুষ, যারা আমার যুবক শ্রেণি আছে তারা চাকুরি না পায় বা কাজ না পায়।’
জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর এই উক্তিকে সামনে রেখেই ২১টি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে ইশতেহারে। এগুলো হলো— আমার গ্রাম- আমার শহর: প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণ; তারুণ্যের শক্তি-বাংলাদেশের সমৃদ্ধি: তরুণ-যুবসমাজকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর ও কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা; দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ; নারীর ক্ষমতায়ন; লিঙ্গ সমতা ও শিশু কল্যাণ; পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা; সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ নির্মূল; মেগা প্রজেক্টসমূহের দ্রুত ও মানসম্মত বাস্তবায়ন; গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করা; সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি; দারিদ্র্য নির্মূল; সকল স্তরে শিক্ষার মান বৃদ্ধি; সকল স্তরে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা; বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা; সার্বিক উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তির অধিকতর ব্যবহার; আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা; দক্ষ ও সেবামুখী জনপ্রশাসন; ব্লুম-ইকোনমি, তথা সমুদ্র সম্পদ উন্নয়ন; নিরাপদ সড়কের নিশ্চয়তা; প্রবাসী কল্যাণ কর্মসূচি এবং টেকসই ও অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়ন।
আওয়ামী লীগের এবারের ইশতেহারে রয়েছে সাতটি অধ্যায়। প্রথম অধ্যায়ে রয়েছে ইশতেহারের অঙ্গীকার, দ্বিতীয় অধ্যায়ে রয়েছে পটভূমি, তৃতীয় অধ্যায়ে রয়েছে গত দুই মেয়াদে সরকারের সাফল্য ও আগামী মেয়াদের জন্য পরিকল্পনা, চতুর্থ অধ্যায়ে দেশের অর্থনীতির চিত্র, পঞ্চম অধ্যায়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব, ষষ্ঠ অধ্যায়ে ভবিষ্যৎ দিক দর্শন এবং সপ্তম অধ্যায়ে রয়েছে দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান। এসব অধ্যায়ের মধ্যে আবার উপ-অধ্যায়ে ভাগ করে তুলে ধরা হয়েছে বিভিন্ন বিষয়।
দ্বিতীয় অধ্যায়ের বিষয়গুলো হলো: ২.১ উপ-অধ্যায়ে গৌরবোজ্জল পাঁচ বছর (জুন-১৯৯৬-২০০১): স্বাধীনতার আকঙ্ক্ষা পূরণের সুবর্ণ সময়; ২.২ উপ-অধ্যায়ে বিএনপি জামাত জোট সরকার: লুণ্ঠন, দুঃশাসন ও দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ; ২.৩ উপ-অধ্যায়ে অধ্যায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল: গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও উত্তরণ; ২.৪ উপ-অধ্যায়ে আওয়ামী লীগ শাসনামল: সংকট উত্তরণ এবং দিন বদলের পথে যাত্রা (জানুয়ারি ২০০৯-ডিসেম্বর ২০১৩) এবং ২.৫ উপ-অধ্যায়ে আওয়ামী লীগ শাসনামল: উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে বিশ্বের বিস্ময় বাংলাদেশ (জানুয়ারি-২০১৪ থেকে ডিসেম্বর২০১৮)।
তৃতীয় অধ্যায়ে ২০০৯ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত সরকারের দুই মেয়াদের সাফল্য ও অর্জন এবং ২০১৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত পাঁচ বচরের লক্ষ্য ও পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে সবিস্তারে। এই অধ্যায়ের বিষয়গুলো হলো— ৩.১ উপ-অধ্যায়ে গণতন্ত্র, নির্বাচন ও কার্যকর সংসদ; ৩.২ উপ-অধ্যায়ে আইনের শাসন ও মানবাধিকার সুরক্ষা; ৩.৩ উপ-অধ্যায়ে দক্ষ, সেবামুখী ও জবাবদিহিতামূলক প্রশাসন; ৩.৪ উপ-অধ্যায়ে জনবান্ধব পুলিশ প্রশাসন গড়ে তোলা; ৩.৫ উপ-অধ্যায়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ এবং ৩.৬ উপ-অধ্যায়ে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও মাদক।
চতুর্থ অধ্যায়ে সামষ্টিক অর্থনীতি, উচ্চ আয়, টেকসই ও অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে। এই অধ্যায়ের বিষয়গুলো হলো— ৪.১ উপ-অধ্যায়ে অবকাঠামো উন্নয়নে বৃহৎ প্রকল্প (মেগাপ্রজেক্ট), ৪.২ উপ-অধ্যায়ে আমার গ্রাম- আমার শহর: প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণ; ৪.৩ উপ-অধ্যায়ে তরুণ যুব সমাজ: তারুণ্যের শক্তি-বাংলাদেশের সমৃদ্ধি; ৪.৪ উপ-অধ্যায়ে দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈষম্য হ্রাস; ৪.৫ উপ-অধ্যায়ে কৃষি, খাদ্য ও পুষ্টি: খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের নিশ্চয়তা; ৪.৬ উপ-অধ্যায়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি; ৪.৭ উপ-অধ্যায়ে শিল্প উন্নয়ন; ৪.৮ উপ-অধ্যায়ে শ্রমিক কল্যাণ ও শ্রমনীতি; ৪.৯ উপ-অধ্যায়ে স্থানীয় সরকার: জনগণের ক্ষমতায়ন; ৪.১০ উপ-অধ্যায়ে শিক্ষা; ৪.১১ উপ-অধ্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবারকল্যাণ; ৪.১২ উপ-অধ্যায়ে যোগাযোগ; ৪.১৩ উপ-অধ্যায়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি: ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নপূরণ; ৪.১৪ উপ-অধ্যায়ে সমুদ্র বিজয়: ব্লুম-ইকোনমি; সমুদ্র বিজয়- উন্নয়নের দিগন্ত উন্মোচন; ৪.১৫ উপ-অধ্যায়ে জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সুরক্ষা; ৪.১৬ উপ-অধ্যায়ে শিশু কল্যাণ; ৪.১৭ উপ-অধ্যায়ে প্রতিবন্ধী ও প্রবীণ কল্যাণ; ৪.১৮ উপ-অধ্যায়ে নারীর ক্ষমতায়ন; ৪.১৯ উপ-অধ্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন; ৪.২০ উপ-অধ্যায়ে সংস্কৃতি; ৪.২১ উপ-অধ্যায়ে ক্রীড়া; ৪.২২ উপ-অধ্যায়ে ক্ষুদ্র নৃতাত্তি¡ক জনগোষ্ঠী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও অনুন্নত সম্প্রদায়; ৪.২৩ উপ-অধ্যায়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অবাধ তথ্য প্রবাহ; ৪.২৪ উপ-অধ্যায়ে প্রতিরক্ষা: নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতার সুরক্ষা; ৪.২৫ উপ-অধ্যায়ে পররাষ্ট্র; ৪.২৬ উপ-অধ্যায়ে এনজিও; ৪.২৭ উপ-অধ্যায়ে মুজিববর্ষ পালন: উন্নয়ন অগ্রযাত্রার শপথ গ্রহণ; ৪.২৮ উপ-অধ্যায়ে ২০৩০ সালে এসডিজি বাস্তবায়ন এবং ৪.২৯ উপ-অধ্যায়ে ব-দ্বীপ বা ডেল্টা পরিকল্পনা ২১০০।
এছাড়া, পঞ্চম অধ্যায়ে ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার সম্মোহনী নেতৃত্বের বিশ্বজনীন স্বীকৃতি’, ষষ্ঠ অধ্যায়ে ‘ভবিষ্যৎ দিক দর্শন’ এবং সপ্তম অধ্যায়ে ‘দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান’ রেখে শেষ করা হয়েছে এবারের আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।