পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, উন্নয়নের নামে এ সরকার ব্যাপক লুটপাট করেছে। ব্যাংক সেক্টর থেকে লুটপাট করেছে ২ লক্ষ কোটি টাকা। বাংলাদেশ থেকে গত ১০বছরে পাচার হয়েছে ৬ লাখ ৮৬৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০১৪ সালে পাচার হয়েছে ৭২ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা। যৌক্তিকভাবে অনুমান করা যায় বর্তমানে এ অংক কমপক্ষে ১ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। অথচ অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার একটা রক্ষাকবচ হিসেবে বর্তমান সরকার তথাকথিত উন্নয়নকে ব্যবহার করছে। গতকাল রাজধানীর পুর্বাণী হোটেলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার ঘোষণায় তিনি এ কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, পৃথিবীর যে কোনো দেশের তুলনায় চার পাঁচ থেকে গুণ বেশি ব্যয়ে সেতু রেলপথ তৈরি করা হয়েছে উন্নয়নের নামে। কিন্তু এই তথাকথিত উন্নয়নের সুফল হাতে গোনা কিছু মানুষের কাছেই পৌঁছেছে। এর ফলে সমাজে ভয়ংকর রকম বৈষম্য বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যুরো অফ স্ট্যাটিস্টিক এর হিসেব বলছে সবচেয়ে দরিদ্র ৫ শতাংশের খানা প্রতি আয় (হাউজহোল্ড ইনকাম) ২০০৫ সালে ছিল ১১০৯ টাকা যা ৩৫ শতাংশ কমে ২০১৬ সালে ৭৩৩ টাকায় দাঁড়িয়েছে। ধনী ৫ শতাংশের থানা খানা প্রতি আয় ৩৮ হাজার ৭৯৫ টাকা বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ এর বেশি ৮৮ হাজার ৯৪১ টাকা
শুধুমাত্র নিজ দলের এবং সমাজে তাদের পদলেহী নানাভাবে ক্ষমতাশালী বিভিন্ন শ্রেণীর কিছু সদস্যদের জন্য রাষ্ট্রীয় যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা অবারিত করার মাধ্যমে লুটপাট করার এই চর্চা, যা অর্থনীতিতে ‘ক্রনি ক্যাপিটালিজম’ হিসেবে কুখ্যাত সেটা বিপুল পরিমাণ দুর্বৃত্ত পুঁজি তৈরি করেছে। সরকারের প্রত্যক্ষ প্রভাব ব্যবহার করে নানা বৃহৎ প্রকল্পের যৌক্তিক বাজেটের চাইতে কয়েকগুন বেশি বাজেট নির্ধারণ করে মুনাফা করা সরকারি ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করা, পুঁজিবাজারে প্রতারণা করে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ নির্বিচারে শ্রমশোষণ উৎপাদিত পণ্য বা সেবার মানোন্নয়ন ছাড়াই অতি মুনাফা কর ফাঁকি এবং যথা ভাবে সম্ভব সরকারের নিকট হতে সুবিধা আদায় করে নেয়াটাই এই প্রাণীদের মূল লক্ষ্য থাকে। এভাবে তৈরি হওয়া স্বাভাবিক পরিণতি হলো পাচার হওয়া যেটা আমরা এরমধ্যে দেখেছি।
ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গেøাবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) হিসেব অনুযায়ী ২০০৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে প্রায় ৭ হাজার ৫৮৫ কোটি ডলার বা ৬ লাখ ৮৬৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০১৪ সালে পাচার হয়েছে প্রায় ৯১১ কোটি ডলার ৭২ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা। যৌক্তিকভাবে অনুমান করা যায় বর্তমানে অংক কমপক্ষে ১ লক্ষ কোটি টাকা হবে।
এইক ক্রুনিরাই সরকারের সহযোগিতার সীমাহীন লুটপাট চালিয়েছে ব্যাংকিং সেক্টরে। এই মুহূর্তে ব্যাংকিং সেক্টরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ (অবলোপনকৃত ঋণ এবং সুদ সহ) প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণ নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করা বিশিষ্ট অর্থনীতিবীদ ড. মইনুল ইসলাম বিশ্বাস করেন, নানাভাবে রিশিডিউলিং এবং নতুন ঋণের মাধ্যমে শ্রেণীকৃত ঋণ কমিয়ে ফেলার ‘ক্যান্সার’ বিবেচনায় নিলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমপক্ষে ৩ লক্ষ কোটি টাকা হবে
তথাকথিত উন্নয়নের ডামাডোল এর মধ্যে আমাদের কর্মহীন তরুণদের দীর্ঘশ্বাস শুনতে পাই চারদিকে। বর্তমান আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) এশিয়া-প্যাসিফিক এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল আউটলুক ২০১৮ শীর্ষক প্রতিবেদনে দেখা যায় বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে বেকারত্ব ২০১০ সালের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে ২০১৭ সালে ১২ দশমিক ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে উচ্চ শিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্ব ১০ দশমিক ৭ শতাংশ যা এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় ২৮ টি দেশের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বাংলাদেশের ‘জবলেস গ্রোথ’ এর স্বীকৃতি বর্তমান সরকারের অর্থমন্ত্রীও দিয়েছেন। সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রদের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় আন্দোলন করা তাদের কর্মহীনতারই বহিঃপ্রকাশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।