পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে শোভাযাত্রা করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ঢাকার বিভিন্ন প্রার্থীদের ছবি, পোস্টার, আর বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী এতে অংশগ্রহণ করে। শোভাযাত্রায় বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা, জিয়াউর রহমানকে ধন্যবাদ, খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং ধানের শীষ প্রতীকে ভোট চেয়ে স্লেগানে স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন তারা। গতকাল (রোববার) দুপুর পৌনে ১২টায় নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এই শোভাযাত্রা নাইটিঙ্গেল মোড়, কাকরাইল মোড় হয়ে শান্তিনগর মোড় ঘুরে আবার নয়াপল্টনে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রার উদ্বোধন করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নজিরবিহীন পক্ষপাতিত্ব, নির্যাতন, হামলা, মামলা চলছে। মির্জা আব্বাসের ওপর হামলা হয়েছে। প্রার্থীর ওপর এভাবে হামলা হয়? নির্বাচন কমিশন, সরকার তাকিয়ে থাকে, কিছুই করে না। মাহবুব উদ্দিন খোকনকে গুলি করা হয়েছে, তিনি এখন চিকিৎসাধীন। সুব্রত চৌধুরীর ওপর হামলা করা হয়েছে। সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি, গ্রেপ্তার বন্ধ করুন। না হলে এর দায়দায়িত্ব সবকিছু আপনাদের নিতে হবে। এই দেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার দায়িত্ব নিতে হবে।
এর আগে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ট্রাকে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চ থেকে শোভাযাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি ও ঢাকা-৬ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী সুব্রত চৌধুরী, ঢাকা-১৩ আসনের প্রার্থী আবদুস সালাম, ঢাকা-১ আসনের প্রার্থী খন্দকার আবু আশফাক, ঢাকা-৯ আসনের প্রার্থী আফরোজা আব্বাস, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা, সানাউল্লাহ মিয়া, আবদুস সালাম আজাদসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তাদের সমানে মহিলা দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন, ধানের শীষ হাতে নিয়ে এগিয়ে যান। আর পেছনে ঢাকা মহানগর বিএনপি, যুবদল, শ্রমিক দল, কৃষক দলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। এ সময় শোভাযাত্রার সামনে-পেছনে বিপুলসংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যা। তবে শোভাযাত্রায় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি এবং কোনো ধরনের আটক বা গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া যায়নি।
শোভাযাত্রায় অংশ নিতে ঢাকা-৬ আসনের প্রার্থী সুব্রত চৌধুরী কর্মী-সমর্থকরা মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে আসেন। ঢাকা-৯ আসনের প্রার্থী আফরোজা আব্বাস ধানের শীষ দিয়ে সাজানো একটি ট্রাকে চড়ে বিশাল মিছিল নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেন। তার ট্রাকেও জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বড় প্রতিকৃতি ছিলো। বিজয় শোভাযাত্রায় ব্যান্ড দলও ছিলো, যারা মুক্তিযুদ্ধের গান পরিবেশন করে। শান্তিনগর মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে শোভাযাত্রার সমাপ্তি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব। সেখান থেকে স্লোগান দিতে দিতে নেতাকর্মীরা আবার নয়াপল্টন ফিরে যান।
শোভাযাত্রা শুরুর আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা কথা বলেন। শুরুতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকের এই বিজয় দিবস হওয়া উচিত ছিল আনন্দের, উৎসবের। ৪৮তম এই বিজয় দিবসে আমাদের আনন্দিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজকে অত্যন্ত ভারাক্রান্ত, আতঙ্কিত, উৎকণ্ঠিত এই দেশে গণতন্ত্র টিকে থাকবে কি টিকে থাকবে না। নির্বাচন কমিশন যে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে, সেই নির্বাচন কমিশন নির্বাচন নিরপেক্ষভাবে পরিচালনা করতে ব্যর্থ হচ্ছে। নির্বাচনে সব রকমের পক্ষপাতিত্ব শুরু করেছে সরকার। আমরা কখনো এ ধরনের নির্বাচন দেখিনি। নজিরবিহীনভাবে সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মী এমনকি প্রার্থীদেরও গ্রেপ্তার করছে, মিথ্যা মামলা দিচ্ছে এবং সবভাবে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই নির্বাচন দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনে সিদ্ধান্ত হবে যে বাংলাদেশের মানুষ স্বৈরতন্ত্রে থাকবে, নাকি গণতন্ত্রে থাকবে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের স্বাধীনতার ফল ভোগ করবে কি ভোগ করবে না। বাংলাদেশের মানুষ নির্যাতিত হয়ে একটি স্বৈরতন্ত্রের মধ্যে, একটি একদলীয় শাসন ব্যবস্থার মধ্যে যাবে, নাকি বহুমাত্রিক গণতন্ত্রের দিকে যাবে; এই বিষয়গুলো আজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, এই নির্বাচনে সিদ্ধান্ত হবে, বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়াকে এই অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার থেকে তাঁকে মুক্ত করা সম্ভব হবে কি না।
তিনি আরও বলেন, আজ শোভাযাত্রা ছিল দুটি, সেটা পরিবর্তন করে তাঁরা সকাল ১০টার মধ্যে নিয়ে এসেছেন। শত বাধা-বিপত্তি, নির্যাতন উপেক্ষা করে শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ দেন তিনি। পাশাপাশি সব ধরনের হামলা-মামলা, গ্রেপ্তার বন্ধ করার আহবান জানান তিনি।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা একটি লড়াইয়ের মধ্যে আছি। এ লড়াই হলো ভোটের লড়াই। ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারি ভোটের নামে এই দেশে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সেই থেকে এই দেশে যত নির্বাচন করা হয়েছে, সব নির্বাচন ছিনতাই করেছে। মানুষ কেউ ভোট দিতে যায়নি, প্রার্থীদের ওপর নির্যাতন করেছে, গ্রেপ্তার করেছে। তিনি আরও বলেন, নতুন নির্বাচনেও তারা (আওয়ামী লীগ) মনে করেছে আগের নির্বাচনের মতো ওয়াকওভার দেওয়া হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবার ওয়াকওভার দেব না। আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্রার্থী দিয়েছি এটা দেখে সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। মির্জা ফখরুলের গাড়িবহরে হামলা করা হয়েছে, সারা দেশে নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করা হয়েছে।
গণফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। আপনারা সকলে অবগত আছেন, এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে আমরা নির্বাচনে যেতে রাজি হয়েছি। যারা ক্ষমতাসীন আছেন তারা জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে আবার ক্ষমতায় থাকার জন্য নীল নকশার ষড়যন্ত্র, নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। আমাদের পুলিশ বাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় কাজে ব্যবহার করে এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করেছে যাতে আমরা নির্বাচনের মাঠ ছেড়ে দিই। ১৬ কোটি মানুষ ও ১০ কোটি ভোটারের ওপর নির্ভর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বিএনপি এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। ৩০ ডিসেম্বর জনগণ ধানের শীষ প্রতীকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে রায় দিয়ে বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করবে।
শোভাযাত্রায় বিএনপি নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আশরাফউদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল, মুনির হোসেন, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, হারুনুর রশীদ, আনোয়ার হোসেইন, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, শাহ নেসারুল হক, হেলাল খান, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, দেবাশীষ রায় মধু, প্রদীপ কুমার সরকার, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ প্রমূখ অংশ নেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।