গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
রাজধানীসহ সারা দেশে গণসংযোগকালে অব্যাহতভাবে বাধার মুখে পড়ছেন বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থীরা। বেশির ভাগ জায়গায় তারা ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের বাধা ও হামলার মুখে পড়ছেন। কোনো কোনো জায়গায় সরাসরি বাধা দিচ্ছে পুলিশ। শনিবার প্রচারণা চালানোর সময় হামলার শিকার হয়েছেন ঢাকা-৮ আসনের বিএনপি প্রার্থী মির্জা আব্বাস। শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট এলাকায় আনুষ্ঠানিক প্রচারণার আয়োজন করেছিলেন ঢাকা-১৩ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী আবদুস সালাম। কিন্তু পুলিশের বাধায় তিনি সেটা করতে পারেননি। বৃহস্পতিবার প্রচারণাকালে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হামলার মুখে পড়েছিলেন ঢাকা-৯ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আফরোজা আব্বাস। শুক্রবার তিনি মাদারটেক এলাকায় প্রচারণা শুরুর পর তার চারপাশে অবস্থান নেয় পুলিশ।
একপর্যায়ে পুলিশের বাধার কারণে তিনি ছাদখোলা গাড়িতে চড়ে প্রচারণা শুরু করেন। কিন্তু পুলিশের দুইটি গাড়ি আফরোজা আব্বাসের গাড়িকে কোথাও দাঁড়াতে দিচ্ছিল না। একপর্যায়ে ছাত্রদল নেতা আক্তারকে গ্রেফতার করলে পুলিশের অতি তৎপরতার কারণে গণসংযোগ বন্ধ করে ফিরে যান আফরোজা আব্বাস।
অন্যদিকে ওয়ারীতে এদিন গণসংযোগে বেরিয়েছিলেন ঢাকা-৬ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ও গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। সেখানে তিনিও পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। তার দুইজন প্রচারকর্মীকে আটক করে পুলিশ। পরে তিনিও প্রচারণা বন্ধ করে ফিরে যান। এ ছাড়া ঢাকা-১৪ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিকও ক্ষমতাসীনদের হামলার মুখে পড়েন।
ওদিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মিরপুরে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের গাড়িবহরে হামলা চালিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা। শুক্রবার সকাল পৌনে ৯টায় শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষস্থানীয় নেতা আ স ম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না ও জগলুল হায়দার আফ্রিক তার গাড়িবহরে ছিলেন। হামলা ও ভাঙচুরের সময় আ স ম রবের গাড়িচালকসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর উত্তরখানে ঢাকা-১৮ আসনের প্রার্থীর পক্ষে আনুষ্ঠানিক গণসংযোগের সূচনা করতে গিয়ে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের হামলার মুখে পড়েন ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা আ স ম আবদুর রব ও মাহমুদুর রহমান মান্না। ঢাকা-১২ আসনে প্রচারণায় বাধা পাওয়ার কথা জানিয়েছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রার্থী জোনায়েদ শাকী।
একই পরিস্থিতি ঢাকা মহানগরসহ দেশের বেশির ভাগ জেলার। শনিবার বিকালে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন বিএনপির প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। বিকালে নির্বাচনী সমাবেশ শেষে লিফলেট বিতরণের সময় ক্ষমতাসীনরা বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর হামলা ও দোকানপাট ভাঙচুর শুরু করলে পুলিশ এিনপি কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি করে।
এদিকে সিরাজগঞ্জে গণসংযোগের প্রস্তুতিকালে শুক্রবার সন্ধ্যার পর জেলা বিএনপি কার্যালয়ে হামলা চালায় ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা। তাদের ধাওয়া দিলে পুলিশ বিএনপি কর্মী-সমর্থকদের লাঠিচার্জ করে। এতে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। একপর্যায়ে পুলিশের ছোড়া গুলিবিদ্ধ হন জেলা বিএনপি সভাপতি ও সিরাজগঞ্জ-২ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী রুমানা মাহমুদসহ বিএনপি অঙ্গদলের অন্তত ২০ নেতাকর্মী।
এদিকে রাজধানীর ফকিরাপুল প্রেস পাড়ায় কয়েকদিন ধরে নিয়মিত হানা দিচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। তারা বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থীদের ছাপানো পোস্টার ও লিফলেট ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বিএনপির প্রার্থীদের পোস্টার না ছাপতে প্রেস মালিকদের ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ঝিনাইদহ-৪ আসনের বিএনপি দলীয় প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ফিরোজের পোস্টার ও লিফলেট নিতে ফকিরাপুল প্রেসপাড়ার ঝর্ণা প্রিন্টার্সে গিয়েছিলেন ছাত্রদলের শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক আবুু ফায়সাল জিহাদ। তিনি জানান, ৩০ হাজার পোস্টার ও ১ লাখ লিফলেট কার্টুনে করে ঝিনাইদহে নেয়ার জন্য মিনি ট্রাকে তোলা হচ্ছিল। রাত সোয়া ১০টার দিকে হঠাৎ করেই যুবলীগ-ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী সেখানে আসেন। তারা পোস্টার ও লিফলেট ভর্তি মিনি ট্রাকটি দখলে নেন। তারপর ঝর্ণা প্রিন্টার্সসহ আশপাশের প্রেসে হানা দিয়ে বিভিন্ন এলাকার বিএনপিদলীয় প্রার্থীর হাজার হাজার পোস্টার-লিফলেট জোর করে তুলে মিনি ট্রাকসহ নিয়ে যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।