বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মেঘ কমে যাচ্ছে দেশের মর্যাদাপূণ সিলেট-১ আসনে বিএনপির প্রার্থীতা ঘিরে। অবশেষে মুক্তাদিরের পাশে এসে দাড়িয়েছেন ভোট রাজনীতির শক্তিমান নায়ক সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সেকারনে উজ্জীবিত দলের নেতাকর্মীরা। মুলত ইনাম আহমদ চৌধুরীকে নিয়ে দুরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল আরিফের সাথে মুক্তাদিরের। আওয়ামীলীগের হেভিওয়েট প্রার্থীর বিপরীতে ইনাম আহমদ চৌধুরী মানানসই সেই বাস্তবতায় অনড় ছিলেন আরিফের নেতৃত্ব বিএনপির একটি প্রভাবশালী অংশ। অতীতের নির্বাচনী ইতিহাসে প্রার্থীদের লড়াইও হয়েছে সেই বিবেচনায়। কিন্তু দলের সিদ্ধান্তে বাদ পড়েন ইনাম আহমদ চৌধুরী, মনোনয়ন যুদ্ধে এগিয়ে যান দলের চেয়ারপার্সন উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। হেভিওয়েট প্রার্থীর বিরুদ্ধে মুক্তাদিরের লড়াই ভবিষ্যত ভেবে কপালে ভাঁজ দেখা দেয় দলের সক্রিয় নেতাকর্মীদের। কিন্তু উল্লাসে বলিয়ান হয়ে উঠে দলের তৃণমুল কর্মী-সমর্থক। নির্বাচনী লড়াইর আগেই টিকিট যুদ্ধে বিজয়ের আনন্দে তারা হয়ে উয়ে সাহসী, তেজদৃীপ্ত। এরপর আরিফসহ দলের মনোনয়ন বিরোধীদের মন জয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন খন্দকার মুক্তাদির। আরিফের অফিস, বাসায় গিয়ে সমর্থন আদায়ে মনোযোগি হয়ে উঠেন তিনি। বুধবার সকালে আবারো মেয়রের বাসায় গিয়ে নির্বাচনের জন্য তার সহযোগিতা চান মুক্তাদির। আর এর জবাবে তাঁকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন মেয়র আরিফ। সেই আশ্বাস-বিশ্বাসে আরিফ-মুক্তাদিরের ঐক্যের সুরে বাজিমাত করতে চায় সিলেট- আসন বিএনপির তৃণমুল নেতাকর্মীরা।
স্বাভাবিক নির্বাচনী মাঠে হেভিওয়েট প্রার্থী সিলেট-১ আসনের অলংকার হলেও বর্তমান বাস্তবতা একেবারে ভিন্ন। কঠিন বাস্তবতা এখন মুখোমুখি নির্বাচনী পরিস্থিতি। গত ১০ বছরের সরকার বিরোধী আন্দোলনে দলের নেতাদের পাশাপাশি তৃণমুল নেতাকর্মীরা হয়ে পড়ে বিপর্যস্ত। চলমান এই রাজনীতির মাঠে সামনে দাড়িয়ে নেতৃত্ব ও আগলে রাখার বিবেচনায় খন্দকার মুক্তাদিরের অবদান ভূলতে পারেনি তৃণমুল নেতাকর্মীরা। সেকারনে দু:সময়ের এই নেতার প্রার্থীতা নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু হয়। গত সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও দলের প্রার্থী মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর পাশে ছিলেন মুক্তাদিরও তার অনুসারীরা। এছাড়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দেশব্যাপী মহাসমাবেশর প্রথম সমাবেশ (গত ২৪ অক্টোবর) সিলেট অনুষ্টিত হয়। সমাবেশ শেষে বিকালে পুলিশের হাতে বন্দি হন মুক্তাদির। রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার পর জেল অভিজ্ঞতার সংযোগ ঘঠে তার জীবনে। নির্বাচনের আগে থেকেই প্রার্থীরা তালিকায় বিভিন্নভাবে উঠে আসতে থাকে মুক্তাদিরের নাম। কিন্তু পুরানো প্রথায়, হেভিওয়েট প্রার্থীরা খোঁজে থাকে বিএনপির একটি ত্যাগি অংশ। তাদের কারনেই সিলেট-১ আসনে প্রাইভেটাইজেশন বোর্ড এর সাবেক চেয়ারম্যান ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমদ চৌধুরীর আবির্ভাব ঘটে। মনোনয়ন যুদ্ধে নেমেই, আলোচিত হয়ে উঠেন তিনি। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের বাসায় সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হতে গিয়ে দলের একটি অংশের প্রচন্ড বিরোধীতায় পড়েন তিনি। তবে বুদ্ধিবৃত্তিক মহল তথা শান্তিপ্রিয় নাগরিক সমাজে বিষয়টি প্রশংসা কুড়ায়। কিন্তু মনোনয়নের শেষ লড়াইয়ে টিকে থাকতে পারেননি তিনি। টিকিট তৃণমুলে পছন্দের প্রার্থীর খন্দকার মুক্তাদির-ই। একারনে দলের সক্রিয় প্রভাবশালী একটি অংশ চরম ভাবে মনক্ষুন্ন হয়। বিয়য়টি আঁচ করতে পেরে দফায় দফায় মান-অভিমান ভাঙ্গতে তৎপর হয়ে উঠেন মুক্তাদির। বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আরিফের কুমারপাড়াস্থ বাসভবনে যান তিনি। সেখানে উভয় নেতা বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। আলাপচারিতা শেষে মেয়র আরিফের বাসার সামনে দু’জনে হাত তুলে উপস্থিত নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান। তাদের এই ঐক্যে মুর্হুতে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটে যান নেতাকর্মীদের মধ্যে। বরফ গলে ভোটের জোয়ার এখন বইছে ধানের অনুকূলে। নেতাকর্মীরা সিলেট-১ আসন রাজনীতিকের হাতে তুলে দিতে ঘাম ঝরাচ্ছে প্রতিনিয়ত। দলের সু:সময়, দু:সময়ে পাশে থাকার অংগিকারও করছেন মুক্তাদির। ভোটের হালচিত্র অনুসন্ধনে দেখা যায়, সদর-সিটি করোপরেশন নিয়ে সিলেট -১ আসন। সদর উপজেলায় আপামর মানুষের কাছে সংহত অবস্থান ব্যক্তি মুক্তাদিরের।
তার পিতা মরহুম খন্দকার আব্দুল মালিকের (সাবেক এমপি) পথ ধরেই সেই সর্ম্পক অটুট রাখতে পেরেছেন তিনি। দল ও সরকার বিরোধী সাধারন ভোটারদের সমর্থন এখন মুক্তাদিরের পক্ষে। সেই সমর্থন কাজে লাগিয়ে মুক্তাদিরের বিজয় নিশ্চিত করতে চায় বিএনপি তৃণমুল নেতাকর্মীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।