নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী : গত ১৫ বছরে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের বেতন বেড়েছে জ্যামিতিক হারে। এই সময়ের মধ্যে বেতন বৃদ্ধির হার ৯ গুণ। ৩৩ হাজার টাকা থেকে বেতন বাড়তে বাড়তে এখন তা উন্নীত হয়েছে ৩ লাখ টাকায়। তবে বিসিবি’র কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারদের বেতন ৯ গুণ বাড়লেও আনুপাতিক হারে বাড়েনি ম্যাচ ফি। গত ৩ বছরে তিন দফায় ক্রিকেটারদের বেতন বর্ধিত হলেও স্থির হয়ে আছে ম্যাচ ফি। অনুসন্ধানে বেরিয়েছে এ তথ্য।
ইংলিশ ক্রিকেটাররা এখনো টেস্ট খেলে পায় সর্বোচ্চ সম্মানী। টেস্ট ম্যাচ প্রতি অ্যালিস্টার কুক, ইয়ান বেলরা পান ১২ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশী মুদ্রায় ১৩ লাখ ৬২ হাজার ১২০ টাকা)। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটাররা সেখানে পান ১৪ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার (বাংলাদেশী মুদ্রায় ৮ লাখ ১৯ হাজার ৭০০ টাকা), ভারতীয় ক্রিকেটারদের টেস্ট ফি’র অংক সেখানে ৫ লাখ রূপী (বাংলাদেশী মুদ্রায় ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা)। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মতো আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল না হয়েও শ্রীলংকা ক্রিকেটারদের টেস্ট ম্যাচ ফি ৫ হাজার মার্কিন ডলার (বাংলাদেশী মুদ্রায় ৪ লাখ টাকা)। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি টেস্টে বাংলাদেশী মুদ্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৪২ টাকা। আর দেউলিয়ার পথে থাকা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও তাদের ক্রিকেটারদের টেস্ট ম্যাচ প্রতি দিচ্ছে ৪ লাখ রূপী (বাংলাদেশী মুদ্রায় ৩ লাখ টাকা)। সেখানে টেস্ট ম্যাচের ম্যাচ ফি বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের জন্য বরাদ্দ ২লাখ টাকা!
টেস্ট ক্রিকেটে ম্যাচ ফি’র চিত্রটা বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের জন্য করুণই মনে হবে। ২০০১ সালে টেস্টে ম্যাচ ফি প্রবর্তন করে সে সময়ে তা ধার্য করা হয়েছিল ১ হাজার মার্কিন ডলার (বাংলাদেশী মুদ্রায় বর্তমানে ৮০ হাজার টাকা), চার ধাপে ম্যাচ ফি বাড়িয়ে ১৫ বছর পর তা ঠেকেছে ২ লাখ টাকায়। প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ টেস্ট খেলতে উৎসাহিত করতে ৫ম দিনে ম্যাচ টেনে নিতে পারলে ম্যাচ প্রতি সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন সে সময়ে বিসিবি। তার সুফলও পেয়েছে বাংলাদেশ সে বছর গল টেস্টে শ্রীলংকার বিপক্ষে,চট্টগ্রামে নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলংকার বিপক্ষে পুরো ৫ দিন কর্তৃত্ব নিয়ে ড্র’ করে। এখন ক্রিকেটারদের সেই চ্যালেঞ্জটা আর নেই। গত ৩ বছর ধরে ২ লাখ টাকাতেই স্থির হয়ে আছে টেস্ট ম্যাচের ফি । চলমান বছরে ক্রিকেটারদের বেতন ২৫ শতাংশ বর্ধিত করা হলেও ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি বর্ধিত করার প্রস্তাবই আসেনি ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির পক্ষ থেকে!
ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রতিদ্ব›দ্বী দলে আত্মপ্রকাশ করে, ২০১৫ সালে বিস্ময়কর পারফরমেন্সে ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে ৯ থেকে ৭ এ উঠে আসার পরও লাভ হয়নি ক্রিকেটারদের। বরং ওয়ানডে ম্যাচ ফি স্থির হয়ে আছে গত ৩ বছর। ২০০১ সালে ওয়ানডে ম্যাচে ম্যাচ ফি যেখানে পেতেন ক্রিকেটাররা ৫শ’ মার্কিন ডলার, ১৫ বছর পর তা উন্নীত হয়েছে ১ লাখ টাকায়। অথচ ওয়ানডেতে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া,ভারত, শ্রীলংকাও পাকিস্তান ক্রিকেটারদের বর্তমান ম্যাচ ফি’র হার সেখানে যথাক্রমে বাংলাদেশী মুদ্রায় ৪লাখ ৯ হাজার ৮৫০,৫ লাখ ৬৭ হাজার ৫৫০, ৩লাখ ৫৪ হাজার,২ লাখ ৪০ হাজার এবং ২লাখ ২৫ হাজার টাকা!
টি-২০ ম্যাচ ফি’র অংকটা অবশ্য তুলনামুলক খারাপ নয় বাংলাদেশে। ২০০৬ সালে টি-২০ তে পা রাখা বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা যেখানে সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটে ম্যাচ ফি পেতেন ২৫০ মার্কিন ডলার (টেস্টের চার ভাগের এক ভাগ) সেখানে এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ হাজার টাকায়। গত ৩ বছরে ম্যাচ ফি শুধু বেড়েছে টি-২০তেই। ৬০ হাজার টাকা থেকে ৭৫ হাজারে হয়েছে উন্নীত ২০১৪ সালে।
ম্যাচ ফি স্থির হয়ে আছে, তা নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই সংশ্লিষ্ট বিভাগের। ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত পারফরমেন্স উদ্বুদ্ধ করতে পারফরমেন্স বোনাস প্রবর্তন করে তার সুফল পেয়েছিল বিসিবি। টেস্টে সেঞ্চুরি অথবা ৫ উইকেটে ১ লাখ টাকা, ওয়ানডেতে ৫০ হাজার টাকা অর্থ পুরস্কার ক্রিকেটারদের পারফরমেন্সে করেছিল উদ্বুদ্ধ। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে সেটাও উঠিয়ে দিয়েছে বিসিবি’র সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
বিসিবি’র সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন অবশ্য ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি’র অংক বর্ধিত করার পক্ষেÑ ‘ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি বাড়–ক, তা আমি নিজেও চাই। এটা তাদের যৌক্তিক দাবিও। এ ধরনের প্রস্তাবটা আসলেই ম্যাচ ফি বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।