Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০৯ জুলাই ২০২৪, ২৫ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

দক্ষিণাঞ্চলের ছয় জেলার ২১ আসনে ভোটের দামামা বেজে উঠেছে, প্রতিদন্ধীতায় থাকছেন ১২২প্রার্থী

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৭:৩০ পিএম

সারা দেশের সাথে দক্ষিনাঞ্চলের ৬টি জেলার একুশটি আসনেও প্রতিক বরাদ্বের পরে ভোটের দামামা বেজে উঠেছে। বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকবাঠী জেলার রিটার্ণিং অফিসারগন গতকাল সকাল থেকে প্রতিক বরাদ্ব করেন। দুপুর থেকেই বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিনাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা উপজেলাগুলোতে প্রার্থীরা মাইকযোগে প্রচারনা শুরু করেছেন। যদিও নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তনুযায়ী আজ (মঙ্গলবার)থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচরানা শুরুর কথা।
এর আগে গত রবিবার প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় বিভিন্ন দলের ৩৯প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি আসনে ১২২জন প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে রয়েছেন। এরমধ্যে আওয়ামী লীগের ১৯, বিএনপির ২১, জাতীয় পার্টির ৯, ওয়ার্কার্স পার্টির ৩, ইসলামী আন্দোলনের ১৯, জামাত ইসলামীর ১জন ছাড়াও কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছেন। একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন হলে এসব প্রার্থীদের থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ৬২ লাখ ২১ হাজার ১১০জন ভোটার তাদের পছন্দের ২১জনকে প্রার্থীকে এমপি নির্বাচিত করার কথা।
বরিশাল জেলায় ভোটের চুড়ান্ত লড়াইয়ে প্রার্থী রয়েছেন ৩৯জন। যার মধ্যে বিএনপি সহ ঐক্য ফ্রন্টের ৬জন, আওয়ামী লীগের ৪জন, জাপার ৪জন, জাকের পার্টির ১জন , ইসলামী আন্দোলনের ৬জন, ওয়ার্কার্স পার্টির ৩জন, এনপিপির ২জন, বিকল্প ধারার ১জন, বিএনএফ-এর ১জন, ইসলামী ঐক্যজোটের ১জন, খেলাফত মজলিসের ২জন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ১জন, বিজেপির ১জন, জাতীয় সমাজান্ত্রিক দলের ১জন ও জেপির ১জন ছাড়াও জাসদের ১জন ও স্বতন্ত্র ১জন প্রার্থী রয়েছেন।
পটুয়াখালীর ৪টি আসনে ৯ জন প্রার্থীতা প্রতাহারের পরে চুড়ান্ত প্রার্থী রয়েছেন ২৩ জন। এ জেলা সদরে রুহুল আমীন হাওলাদারের মনোনয়নপত্র বাতিলের পরে মহাজোটের মূল শরিক আওয়ামী লীগের শাহজাহান মিয়ার সাথে প্রতিদন্ধীতা হচ্ছে জেলা বিএনপির সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরীর। এছাড়াও পটুয়াখালীÑ২ আসনে বিএনপি প্রার্থী শহিদুল আলম তালুকদার হাইকোর্ট থেকে প্রার্থীতা ফিরে পাওয়ায় চীফ হুইপ আসম ফিরোজের সাথে সরাসরি প্রতিদন্ধীতা হচ্ছে। জেলার তিন নম্বর আসনটিতে সদ্য বিএনপিতে যোগ দেয়া সাবেক এমপি গোলাম মাওলা রনির সাথ সরাসরি প্রতিদন্ধীতা হচ্ছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সিইসির ভাগ্নে এসএম শাহজাদার।
ভোলার ৪টি আসনে ৭ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পরে ভোটের লড়াইয়ে থাকছেন ১৫ জন। এজেলায় বানিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমদ বন ও পরিবেশ উপমন্ত্রী জ্যাকব ছাড়াও মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, নাজিমুদ্দিন আলম প্রার্থী রয়েছেন। পিরোজপুর জেলার ৩টি আসনের চার প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পরে প্রার্থী রয়েছেন ২১জন। পানি সম্পদ মন্ত্রী ও জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সুপ্রীম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক এ্যাডেভোকেট স ম হ রেজাউল হক ও রুস্তম আলী ফরাজী ছাড়াও জামায়াত নেতা সাবেক এমপি দেলওয়ার হোসেন সাঈদীর পুত্র শামীম সিদ্দিকী এ জেলার ৩টি আসনে প্রার্থী রয়েছেন।
বরগুনার ৩টি আসনে ৪জন প্রার্থীতা প্রত্যাহারের পরে ১৫জন চুড়ান্ত লড়াইয়ে রয়েছেন। সাবেক উপ-মন্ত্রী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ছাড়াও সুপ্রীম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব উদ্দিন এজলার দুটি আসনে প্রতিদন্ধী। তবে সম্ভু অনেকটা নিভৃার হয়েছ তার নিজ দলেরই জনপ্রিয় নেতা জাহাঙ্গীর সড়ে দাড়াবার কারনে।
তবে জাপা প্রার্থী মাসুদ পারভেজ নিজেকে বরিশালÑ২ আসনে মহাজোট প্রার্থী দাবী করে নির্বাচনে রয়েছেন। ফলে এখানে মহাজোটে কিছুটা অস্বস্তি কাজ করছে।
অপরদিকে এবারের ভোটের লড়াইয়ে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে বিএনপি আর ঐক্য ফ্রন্টের প্রার্থী বাছাইয়ে মহাজোট প্রার্থীরা অনেকটাই স্বস্তিতে আছেন। বরিশালÑ৩, বরিশালÑ৪, বরগুনা-২ ও ঝালকাঠী-২ আসন সহ দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি আসনে বিএনপিকে ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলোর অনৈতিক আবদার ও দাবী রাখতে গিয়ে অনেকটাই বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। এছাড়াও অনুরোধে ঢেকি গিলতে গিয়েও এঅঞ্চলে বিএনপি’র ঘরে কাঙ্খিত ফসল ঘরে নাও উঠতে পাড়ে বলে মনে করছেন মহলটি।
বরিশাল-৩ আসনে সেলিমা রহমানের পরিবর্তে এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন-এর মুখোমুখি হতে হচ্ছে মহাজোট প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টির টিপু সুলতানকে। ফলে সুলতান এখন বাদশাহী খোশ মেজাজে আছেন। বরিশাল-৪ আসনে পঙ্কজ দেবনাথকে সাবেক এমপি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদের পরিবর্তে নাগরিক ঐক্যের জেএম নুরুল জাহাঙ্গীরকে মনোনয়ন দিয়েছে ঐক্য ফ্রন্ট। যাকে স্থানীয় কতভাগ মানুষ চেনে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলে।
এছাড়া ঝালকাঠী-২ আসনে সাবেক এমপি ইলেন ভ’ট্টোর পরিবর্তে জেবা আমীন খান ও বরগুনা-২ আসনে নুরুল ইসলাম মনির পরিবর্তে খন্দকার মাহবুব উদ্দিনকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে । যা দল ও ফ্রন্টের জন্য খুব সুখকর খবর নাও আনতে পাড়ে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। তবে এসব পূর্বাভাস কেবল একটি অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বচনের ওপরই নির্ভরশীল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ