পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও মহাজোট ফুরফুরে মেজাজে নিশ্চিন্ত মনে অর্থাৎ ‘নো টেনশন’ ভাব নিয়ে থাকার কথা ছিল। কিন্তু এই মুহূর্তে ভোট রাজনীতির মাঠে বাস্তবে তেমনটি দেখা যাচ্ছে না। বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের প্রার্থীকে মোকাবিলার মতো ‘শক্ত’ প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ নিয়ে টেনশন তো আছেই। যেহেতু অতীতে ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনী ফলাফল থেকেই বারে বারে প্রমাণিত হয় যে, বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলটি জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী শক্তির মজবুত ঘাঁটি। এবারের জাতীয় নির্বাচনে ঘরের সমস্যা তীব্র রূপ নেয়ার কারণে চট্টগ্রামে মাঠের রাজনীতিতে তৃণমূল পর্যায়ে চরম বেকায়দায় রয়েছে আওয়ামী লীগ-মহাজোট। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে এ নিয়ে ‘নৌকা’র প্রার্থীদের অধিকাংশেরই দুশ্চিন্তা ভর করছে। প্রকাশ্যে ও রুদ্ধদ্বার বৈঠকে প্রার্থীদের হাতে হাত উঁচিয়ে ধরে হাসিমুখে ‘ঐক্যের ডাক’ দিচ্ছেন। তা সত্তেও চাপা কোন্দল-গ্রুপিং, মনোনয়ন বঞ্চিতদের ক্ষোভ-অসন্তোষ তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বৃহত্তর চট্টগ্রামের অধিকাংশ আসনে পুরনো কলহ-কোন্দল নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। অনেক এলাকায় আন্তঃকোন্দল গ্রুপিং প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে, দিন দিন ফুঁসে উঠছে। আবার অনেক জায়গায় তা ছাইচাপা অবস্থায় রয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগরী ও জেলায় এবং পার্বত্য জেলায়ও আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বেশিরভাগই এখন বঞ্চিত তালিকায়। অথচ তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, দীর্ঘদিন মাঠে আপামর মানুষের সাথে থেকেও ‘ভিআইপি-সিআইপি’ না হওয়ার কারণেই ৫ বছর অপেক্ষার প্রহর গুণে মনোনয়ন থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। এ কারণে তাদের বিরাট সংখ্যক সমর্থক হতাশ হয়েছেন।
বর্তমানে বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকার রাজনীতি সচেতন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের নেতা-কর্মী, সমর্থক এবং প্রতিপক্ষ জোটের নেতা-কর্মীসহ সমগ্র তৃণমূলের সতর্ক চোখ মহাজোটের মনোনয়ন বঞ্চিতদের দিকেই। তাদের মতিগতি কোন দিকে গড়ায় তা নিয়ে সবখানে চলছে সবার কৌত‚হলী আলোচনা ও গুঞ্জন।
গত ২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের আগে থেকেই চট্টগ্রামের আসনগুলোতে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের প্রার্থীরা তাদের সমর্থিত তৃণমূল নেতা-কর্মীদের নিয়ে ছুটে চলেছেন নিজেদের নির্বাচনী এলাকায়। প্রতিদিনই হচ্ছে কর্মীসভা, মতবিনিময়, উঠান বৈঠক, শলা-পরামর্শ ইত্যাদি। তাছাড়া চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা পর্যায়েও ইতোমধ্যে একাধিক বর্ধিত সভা, সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নেতাদের ড্রয়িং রুমেও ঘন ঘন বসছে বৈঠক। প্রার্থীদের হাতে হাত রেখে সিনিয়র নেতারা হাসিমুখে এবং পরস্পর মিষ্টিমুখ করে ছবি পোজ দিচ্ছেন, সামাজিক মাধ্যমগুলোতে পোস্ট করছেন- ‘ঐক্যের বার্তা’ দিয়ে। যার মূল উদ্দেশ্য ঘর গুছিয়ে ভোটের মাঠ গোছানো।
কিন্তু খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, এসব বৈঠকী আয়োজনের বিপরীতে চট্টগ্রামে সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের মনোনয়ন বঞ্চিত এবং তাদের সমর্থিত নেতা-কর্মীদের হতাশার মাত্রা প্রকটভাবে ফুটে উঠছে। এ ধরনের বৈঠকগুলোতে মনোনয়ন বঞ্চিতরা কেউই হাজির হতে দেখা যাচ্ছে না। বঞ্চিতদের সমর্থিত নেতা-কর্মীরাও সেসব বৈঠক অঘোষিতভাবে বর্জন বা এড়িয়ে চলছেন। যেমন- চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের তিন জন মনোনয়ন বঞ্চিত সিনিয়র নেতার কেউই তাদের নিজ নিজ এলাকায় মনোনীত প্রার্থীদের কোনো ধরনের সভায় উপস্থিত হতে দেখা যায়নি।
তাদের সমর্থিত কর্মীরাও ভোটের মাঠে গরহাজির। একইভাবে চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলার বিভিন্ন আসনে মনোনয়ন বঞ্চিতরা দল ও মহাজোটের প্রার্থীদের সাথে সম্পর্ক এড়িয়ে চলেছেন। চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি), চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) এবং চট্টগ্রাম- (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) এই তিনটি নির্বাচনী আসনে মহাজোটের ছোট শরিক দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এর তীব্র ও বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে। সেসব এলাকায় ইতোমধ্যে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ হয়েছে।
তাছাড়া মহানগর, চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলা এবং তিনটি পার্বত্য জেলার দুইটিতে আওয়ামী লীগের পুরনো কলহ-কোন্দলের ক্ষত আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে নুতন করে মাথাচাড়া দিয়েছে। আছে নেতায় নেতায় দ্ব›দ্ব। কোথাও কোথাও একে অপরের মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। এহেন গ্রুপিং, দ্ব›দ্ব-কলহের প্রভাব পড়েছে দল ও মহাজোটের তৃণমূলের বিভিন্ন পর্যায়ে।
চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই), চট্টগ্রাম-৩ (স›দ্বীপ), চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুন্ড) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিতদের মাঝে ক্ষোভ-অসন্তোষ অব্যাহত রয়েছে। চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী), চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী-হালিশহর), চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা), চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ), চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া), চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) এবং তিনটি পার্বত্য জেলার মধ্যে রাঙ্গামাটি এবং খাগড়াছড়িতে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের যারা মনোনয়ন বঞ্চিত তারা ভোট রাজনীতির মাঠ থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। চলে গেছেন দূরত্বে। মহাজোটের অপরাপর শরিকদলের সাথেও রয়েছে চাওয়া বনাম বঞ্চনার ক্ষোভ, হতাশা, অসন্তোষ। তাছাড়া সরকারের দুই মেয়াদে দশ বছরের শাসনকালে ‘সুযোগ-সুবিধা’ বঞ্চিতদের মাঝে ক্ষোভ-হতাশা, অসন্তোষ ভোটের আগে এবার দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় ভোটের মাঠে নিজেদের ঘর সামলাতেই বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।