নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ব্যাপারটা অনুমিতই ছিল। বিশ্লেষকদের সেই অনুমান সত্যি করে এবারের ব্যালন ডি’অর জিতলেন লুকা মদরিচ। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ফুটবল বিশ্বে চলমান লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর আধিপত্যে যতিচিহ্ন বসালেন ক্রোয়েশিয়ার এই মিডফিল্ডার।
২০০৭ সালে ফিফা ব্যালন ডি’অর জিতেছিলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা কাকা। এরপর থেকে চলে আসছিল মেসি-রোনালদোর আধিপত্য। দুজনেই এসময় পুরস্কারটি ভাগাভাগি করে নিয়েছেন সমান পাঁচবার করে। এবার মেসি অবশ্য বেশ পিছিয়ে ছিলেন। গত এক দশকে এবারই প্রথম শীর্ষ তিনে জায়গা হয়নি আর্জেন্টাইন তারকার। বিশ্বকাপে দল ভালো না খেলা ও ইউরোপিয়ান ফুটবলে তার দল তেমন ভালো ফল না করায় পিছিয়ে ছিলেন ফুটবল জাদুকর। যদিও এবারো মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল ছিল বার্সা অধিনায়কেরই।
বর্তমান জুভেন্টাস তারকা রোনালদোর ঝুলিতে ছিল কেবল রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে জেতা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি। ওদিকে পর্তুগিজ তারকার সাবেক সতীর্থ মদরিচের ঝুলিতে একই ট্রফি তো ছিলই, পাশাপাশি ক্রোয়েশিয়ার মত সাধারণ মানের দলকে নিয়েছিলেন বিশ্বকাপের ফাইনালে। যার স্বীকৃতীস্বরুপ রাশিয়া বিশ্বকাপে মদরিচের হাতে ওঠে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ‘গোল্ডেন বল’। গত আগস্টে ৩৩ বছর বয়সী জেতেন উয়েফা বর্ষসেরার খেতাব। পরের মাসে জিতে নেন ফিফা বর্ষসেরা ‘দ্য বেস্ট’ ট্রফিও। এসবের কারণেই ‘ফ্রান্স ফুটবল’ সাময়িকীর দেওয়া ব্যালন ডি’অরে এগিয়ে ছিলেন মদরিচ।
সেই এগিয়ে থাকা কতটা তা তার অর্জিত পয়েন্টের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। সর্বোচ্চ ৭৫৩ পয়েন্ট পেয়ে এই ট্রফি জিতলেন তিনি। ৪৭৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রোনালদো এবং ৪১৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় অঁতোয়ান গ্রিজম্যান। মেসির অবস্থানে পাঁচে। তার আগে রয়েছেন ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী আরেক তারকা কিলিয়ান এমবাপে (৩৪৭)। বর্ষসেরা তরুণ খেলোয়াড় ‘কোপা’ ট্রফি জিতে নিয়েছেন এমবাপে। অনূর্ধ্ব-২১ খেলোয়াড়দের জন্য এ বছর থেকে দেওয়া শুরু হয়েছে এই পুরস্কার।
তার মানে এবারো বিশ্বকাপের বছরে বিশ্বকাপজয়ী কোন তারকার হাতে ওঠেনি ব্যালন ডি’অর ট্রফি। অনেকে ধারণা করেছিলেন ট্রফিটি গ্রিজম্যানের হাতে উঠতে পারে। কিন্তু তাদের ভবিষ্যদ্বানী ভুল করে এবারো প্রমাণিত হলো বিশ্বকাপ নয়, বর্ষসেরা হতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
এর আগের তিন বিশ্বকাপের বছরেও ঘটে একই ঘটনা। ২০১৪ বিশ্বকাপে ম্যানুয়েল নয়্যার, টনি ক্রুস, থমাস মুলারদের ছাপিয়ে বর্ষসেরা হন রোনালদো। ২০১০ বিশ্বকাপে ইনিয়েস্তা-জাভিদের মত তারকাদের দর্শক বনে যেতে হয় ক্লাবের হয়ে জাদকরী মৌসুম কাটানো মেসির কাছে। তার আগের তিন বছর অবশ্য বিশ্বকাপজয়ী তারকার হাতেই ওঠে ব্যালন ডি’অর পুরস্কার।
মদরিচ তাই তার জেতা ট্রফিটি সেই সব ‘বঞ্চিত’ খেলোয়াড়দের উৎসর্গ করেছেন, ‘এর আগে বেশ কয়েকজন এ পুরস্কার জয়ের যোগ্য ছিল। ইনিয়েস্তা, জাভি কিংবা স্নেইডারের কথাই ধরুন। এই ট্রফি সেই সব খেলোয়াড়দের প্রতি যারা সম্ভবত যোগ্য হয়েও জিততে পারেনি। এ বছরটা সত্যিই আমার জন্য বিশেষ কিছু।’ তবে গত দশ বছর মেসি-রোনালদোরা ‘অসাধারণ পর্যায়ে ছিলেন’ বলেও মানেন মদরিচ। প্যারিসের এই জমকালো অনুষ্ঠানে যোগ দেননি মেসি, রোনালদো ও নেইমার।
অনুর্ধ্ব-২১ বর্ষসেরার এর মত এবারই প্রথম দেওয়া হলো বর্ষসেরা নারী ফুটবলার পুরস্কার। লিঁওর হয়ে ঘরোয়া লিগ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ী ২৩ বছর বয়সী নরওয়ের স্ট্রাইকার আদা হেগেরবার্গ জিতে নিয়েছেন এই পুরস্কার। তবে নারী পুরস্কারের শুরুতেই এর গায়ে লেগেছে ‘যৌন হয়রানি’র কালিমা। কালিমাটা ছিটিয়েছেন অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ডিজে মার্টিন সলভেইগ নিজেই। ট্রফি হাতে হেগেরবার্গকে কিছু একটা করে দেখাতে বলেন সলভেইগ যা তার দক্ষতার বাইরে। একথা বলে হেগেরবার্গকে নাচ করতে বলেন সলভেইগ। বাজনার তালে তখন কোমর দুলিয়ে যে নাচের কথা বলা হয়েছিল তা ছিল যৌন উত্তেজনাকর। হেগেরবার্গ এই প্রস্তাবে তাৎক্ষণিক ‘না’ বললেও অনিচ্ছা সত্বে কিছু সময় নাচেন।
ব্যাপারটা ভালোভাবে নেননি সেখানে উপস্থিত অনেকেই। ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক ক্রীড়া তারকারা সমালোচনা করেছেন। পরে অবশ্য ক্ষমা চেয়েছেন সলভেইগ। ব্যাপারটা ‘সহজভাবে’ নিয়েছেন বলে জানান হেগেরবার্গও।
সেরা দশে যারা
ক্রম. খেলোয়াড় ক্লাব/দেশ
প্রথম লুকা মদরিচ রিয়াল মাদ্রিদ/ক্রোয়েশিয়া
দ্বিতীয় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদ,জুভেন্টাস/পর্তুগাল
তৃতীয় অঁতোয়ান গ্রিজমান অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ/ফ্রান্স
চতুর্থ কিলিয়ান এমবাপে পিএসজি/ফ্রান্স
পঞ্চম লিওনেল মেসি বার্সেলোনা/আর্জেন্টিনা
ষষ্ঠ মোহাম্মদ সালাহ লিভারপুল/মিশর
সপ্তম রাফায়েল ভারানে রিয়াল মাদ্রিদ/ফ্রান্স
অষ্টম এডেন আজার চেলসি/বেলজিয়াম
নবম কেভিন ডি ব্রুইনে ম্যান সিটি/বেলজিয়াম
দশম হ্যারি কেইন টটেনহ্যাম হটম্পার/ইংল্যান্ড
আগের ১০ বারের বিজয়ীরা
সাল ব্যালন ডি’অর ফিফা বর্ষসেরা
২০০৮ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
২০০৯ লিওনেল মেসি লিওনেল মেসি
একীভূত ফিফা ব্যালন ডি’অর
২০১০ লিওনেল মেসি
২০১১ লিওনেল মেসি
২০১২ লিওনেল মেসি
২০১৩ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
২০১৪ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
২০১৫ লিওনেল মেসি
ব্যালন ডি’র দ্য বেস্ট ফিফা মেনস প্লেয়ার
২০১৬ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
২০১৭ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।