Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টিসি দেয়ায় ভিকারুনন্নেছা ছাত্রীর আত্মহত্যা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

বিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র (টিসি) দেয়া এবং শিক্ষার্থীর সামনে বাবাকে অপমান করায় ভিকারুনন্নেছা নূন স্কুলের বেইলী রোড শাখার এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। নিহত ছাত্রীর নাম অরিত্রি অধিকারী (১৫)। সে নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে, বাবাকে অপমানের অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যক্ষ বলেন, পরীক্ষার হলে মোবাইল ব্যবহার করে নকল করায় প্রতিষ্ঠানের আইন অনুযায়ী ওই ছাত্রীকে টিসি দেওয়া হয়েছে।

অরিত্রির বাবা দিলীপ অধিকারী জানান, বড় মেয়ে অরিত্রি অধিকারী ও ছোট মেয়ে ঐন্দ্রীলা অধিকারী ভিকারুনন্নেছা নূন স্কুলের শিক্ষার্থী। তিনি জানান, অরিত্রি’র বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। রোববার ইতিহাস পরীক্ষা ছিল। স্কুলে মোবাইল নেওয়া নিষেধ থাকা সত্তে¡ও অরিত্রি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। পরে মোবাইলটি দেখতে পেয়ে শিক্ষকরা তা নিয়ে যায় এবং অরিত্রিকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেয়।
অরিত্রির বাবা জানান, সোমবার সকালে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য স্কুলে যায় অরিত্রি। কিন্তু তাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না দিয়ে বাবা-মাকে স্কুলে নিয়ে আসতে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তখন আমি ও আমার স্ত্রী স্কুলে গেলে স্কুল কতৃপক্ষ জানিয়ে বলে, অরিত্রি পরীক্ষায় মোবাইল ব্যবহার ও নকল করেছে। তাকে স্কুল থেকে টিসি দেওয়া হয়েছে। টিসি না দেওয়ার জন্য স্কুলের শিক্ষকদের অনেক অনুরোধ করেন তারা। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের কোন কথা না শুনে অরিত্রিকে স্কুলে রাখা যাবে না বলে স্রফে জানিয়ে দেয়।
দিলীপ অধিকারী বলেন, স্কুল থেকে বের হয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্ত্রী ও মেয়ে বাসায় ফিরে যায়। বাসায় যাওয়ার পর অরিত্রি রুমের ভেতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। অনেকক্ষন ডাকাডাকি করলেও দরজা না খোলায় দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে অরিত্রিকে ফ্যানের সাথে ওড়না দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পান। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ইসলামী হাসপাতালে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, শিক্ষকদের অনেক অনুরোধ করা হলেও তারা কথা রাখেননি বরং তারা আমাকে অপমান করেছেন। এ ক্ষোভে মেয়েটি অভিমান থেকে আত্মহত্যা করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
ভিকারুনন্নেছার অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস বলেন, ওই ছাত্রী পুরো বই মোবাইলে কপি করে নিয়ে এসেছে। যার কারণে তার বাবা-মা’কে সাথে নিয়ে আসতে বলা হয়। অধ্যক্ষ বলেন, গতকাল অভিভাবকরা আসলে প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী নকলের অভিযোগে মেয়েটিকে পরবর্তী পরীক্ষায় অংশ নিতে না দিয়ে টিসি দেওয়া হয়। তখন তার পরিবার অনুরোধ করলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে পরবর্তীতে জানানো হবে বলে অভিভাবকদের জানানো হয়।



 

Show all comments
  • Rajib Sarkar ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১৩ এএম says : 0
    বাংলাদেশ বলে কিছুই হবে না। ইউরোপ আমেরিকা হলে এই শিক্ষকেরা এখন দৌড়ের উপর থাকত।। ভুল করলে শাসন করার অনেক উপায় আছে। বিদেশ হলে এই মেয়েটাকে আলাদাভাবে বোঝাত,, সাইকোলজিস্ট কাউন্সিলিং করত, তার সমস্যা বোঝার চেস্টা করা হত, সমাধানের পথ দিত। কখনই এরকম অপমান না।
    Total Reply(0) Reply
  • Munshat Chowdhury ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১৪ এএম says : 0
    এই স্কুলের টিচার রা আগেও জানোয়ারের মত আচরন করেছে। কচু বনে শেয়াল রাজা টাইপ অবস্থা এদের। বাংলাদেশে যেখানে ভাল কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই, সেখানে ভিকারুননিসাই সেরা। আর নিজেদের তারা একেকজন সম্রাট সম্রাজ্ঞীই ভাবেন। অনেক ছাত্রী আর তাদের অভিভাবকদের আতংকের নাম এই শিক্ষক নামের বর্বরগুলো
    Total Reply(0) Reply
  • Showkat Ali ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১৫ এএম says : 0
    এই হল আমাদের সমাজ, একটি মেয়ে ভুল করছে, ক্ষমা চেয়েছে,কিন্তু তার ক্ষমা নাই,শিক্ষিত হলে কি হবে যদি বিবেক না থাকে।
    Total Reply(0) Reply
  • Faija Khan ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১৫ এএম says : 0
    এই ভিকারুননিসা স্কুলকে আমরাই এতো অহংকারী হতে সাহায্য করেছি। ছাত্রীর আসন সংখ্যা ৩০০ আর আমরা ফরম কিনি ৩০ হাজার তাহলে বুঝেন আমরা কই নিয়া গেছি স্কুল টাকে ----। ভালো রেজাল্ট এক জিনিস-- আর ভালো শিক্ষক, ভালো স্কুল কমেটি, --আর এক জিনিস। মেয়েটা বিরাট ভুল করেছে..মানছি ।বাট সেই ভুলের শাস্তিকে ২ গুন বড় ভুল দিয়ে সমাধান করতে হবে এটা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না ।।
    Total Reply(0) Reply
  • Samira Binte Hossain ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১৬ এএম says : 0
    এমন দুঃখজনক, মর্মান্তিক, বেদনাদায়ক খবর পড়ে মনটাই ভারাক্রান্ত হয়ে গেল! অবিলম্বে অভিযুক্ত অপমানকারীদের গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তি চাই।
    Total Reply(0) Reply
  • Sultana Purvin ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১৭ এএম says : 0
    বিষয়টি খুবই দুঃখ জনক! আমাদের দেশে এখনও অনেক নামিদামী স্কুলে টিচাররা বাচ্চাদের মানসিক নির্জাতন করে এ বিষয়ে অভিভাবকদের সোচ্চার হওয়া উচিত ।
    Total Reply(0) Reply
  • Sakir Sulov ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১৭ এএম says : 0
    শিক্ষকের একটু অনুপ্রেরনা একজন ছাত্রকে দশ হাত এগিয়ে দেয়,, কিন্তু একটু অবহেলা পঞ্চাশ হাত পিছনে ঠেলে দেয়। এর দায় পুরোটা প্রিন্সিপালের.
    Total Reply(0) Reply
  • Sha Moen Shohag ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১৯ এএম says : 0
    ভিকারুননিসা স্কুল সমাজে বিত্তবান ভিক্ষুক দের অহংকার এর জায়গা,এখানে নৈতিক কতার শিক্ষা যা দেওয়া হয় তার চেয়ে বেশী গুরুত্ব দেওয়া হয় কার বাপ কতো রোজগার করে,এখনই এই শিক্ষক দের আত্মহত্যার প্রয়োচনার দায়ে মামলা দেওয়া উচিৎ।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Kowaj Ali khan ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৩:৩৭ এএম says : 0
    খবরদার কেহ আত্বহত্যা করিও না আত্বহত্যা করিয়া জীবন ধংস করিয়া জাহান্নামে জাইও না। জীবন অনেক মূল্যবান।
    Total Reply(0) Reply
  • Nizam ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৬:১৯ এএম says : 0
    Very sad
    Total Reply(0) Reply
  • Simoon Hassan ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১০:৪২ এএম says : 0
    Shame,Etai hosse Bangladesh er education System er Behal Dosha
    Total Reply(0) Reply
  • Minar ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:৫৯ পিএম says : 0
    সংবাদটি ও মন্তব্যগুলি পড়ে শরীরটা শিউরে উঠল, কারণ আমারও ছোট মেয়ে আছে। নামকরা স্কুলের পরিনতি যদি এইহয় তাহলে অবিভাবকদের উচিত এই স্কুলে সন্তান ভর্তি না করে স্কুলটিকে সারা বাংলাদেশের 5000 সিরিয়ালের উপরে রাখা উচিত।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আত্মহত্যা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ