Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সিটিজেনশিপ বিলের বিরুদ্ধে আসামে বিক্ষোভ

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

শুক্রবার আসাম পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার অভিজিৎ গোগোই ইউনাইটেড লিবারেশান ফ্রন্ট অব আসামে (উলফা-ইন্ডিপেন্ডেন্ট) যোগ দিয়েছেন। সম্ম্প্রতিকালে যেসব তরুণ সশস্ত্র এই গ্রুপটিতে যোগ দিয়েছে, তাদের মধ্যে গোগোই একজন মাত্র ব্যক্তি। অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়নের (এএএসইউ) দেরগাঁও ইউনিটের ভাইস প্রেসিডেন্ট ২৫ বছর বয়সী পঙ্কজ প্রতীম দত্ত যখন অক্টোবরে প্রথম আন্ডারগ্রাউন্ড এই গ্রুপে যোগ দেন, প্রথম আঘাতটা তখনই আসে। পরিবারের সদস্য এবং এএএসইউ-এর সদস্যদের কাছে ক্ষমা চেয়ে তিনি ফেসবুকে একটা ভিডিও আপলোড করেন, যেটা দেখে আরও অনেকেই উলফাতে (আই) যোগ দিয়েছে। ১৩ নভেম্বর এক রিপোর্টে বলা হয় যে, লেখাপানি এলাকার ১৬ বছর বয়সী কিকবক্সার কারিশমা মেচও এতে যোগ দিয়েছে। উলফা (আই) চেয়ারম্যান পরেশ বড়–য়ার ভাইপো মুনা বড়–য়া এতে যোগ দেয় ১৫ নভেম্বর। এই নতুন শিক্ষিত শ্রেণীর উলফাতে যোগদানের পেছনে একটা কারণ অভিন্ন - সেটা হলো বিজেপির সিটিজেনশিপ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০১৬ এখানে তাদেরকে বিদ্রোহী হতে উসকে দিয়েছে।
সিটিজেনশিপ বিল
ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়টি সহজ করার জন্যই সিটিজেনশিপ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০১৬ পাসের চেষ্টা করা হচ্ছে। বর্তমানে যে ফর্মে এই বিলটির কথা ভাবা হচ্ছে, তাতে এর অধীনে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে কাগজ-পত্র ছাড়া আগত হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টানরা নাগরিকত্বের জন্য উপযুক্ত বিবেচিত হবে। সিটিজেনশিপ অ্যাক্টের তৃতীয় শিডিউলে স্বাভাবিকভাবে নাগরিকত্ব পাওয়ার পূর্বশর্তগুলো উল্লেখ রয়েছে। এখানে উল্লেখ রয়েছে যে, অবৈধ অভিবাসীদের জন্য এটা প্রযোজ্য হবে না এবং নাগরিকত্ব পেতে হলে অধিবাসীদের একটানা ১২ বছর ভারতে বসবাস করতে হবে। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে এই সময় কমিয়ে ছয় বছর করা হয়েছে। বিলে ধরে নেয়া হয়েছে যে, এই স¤প্রদায়গুলো থেকে যারাই ভারতে আসবে, তারা সবাই মূলত নির্যাতিত। তবে এই দেশগুলোতে যেহেতু নাস্তিকরাও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, তাই এই প্রশ্ন উঠতেই পারে যে নাস্তিকদের কেন এই তালিকায় রাখা হয়নি।
যৌথ পার্লামেন্টারি কমিটিতে মতভেদ
যদিও বিলটি চলতি বছরের বর্ষা মওসুমে পার্লামেন্টে উপস্থাপনের কথা ছিল, কিন্তু যৌথ পার্লামেন্টারি কমিটি (জেপিসি) এটা আসন্ন শীতের মওসুমে উপস্থাপনের ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। এটা আসামসহ অন্যান্য উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে এবং স্থানীয়রা আশঙ্কা করছে যে, নিজের মাটিতে তারা সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে। বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন (এনইএসও)। বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ বাড়তে থাকায় এবং উলফার ক্যাডার সংখ্যা বাড়ার প্রেক্ষিতে আসামের অর্থমন্ত্রী ও বিজেপির নীতি নির্ধারক হিমান্ত বিশ্ব শর্মা একটি চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছেন। উলফা নেতা পরেশ বড়–য়ার প্রতি তিনি বলেছেন, উলফা যদি প্রকাশ্যে এসে আলোচনায় অংশ নেয়, তাহলে বিলটি বাতিল করা হবে।
উলফার পরিবর্তিত কৌশল ও পদ্ধতি
এদিকে, উলফা ইসলামিক স্টেট এবং হিজবুল মুজাহিদিনদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উলফাকে যোগদানকারী নতুন সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও আপলোড করছে।
বড়–য়া এক বিবৃতি থেকে এটা বেরিয়ে এসেছে যে, সশস্ত্র রাজনৈতিক এই গ্রুপটির উপর চাপ রয়েছে যাতে তারা ক্ষমতার লড়াই এড়িয়ে শান্তিপূর্ণ উপায়ে উত্তরাধিকার বাছাইয়ের কৌশল গ্রহণ করে। এটা যে কোন সরকারের উপর আলোচনা আয়োজনের একটা চাপ সৃষ্টি করবে। তবে, সিটিজেনশিপ বিলের বিরোধিতার কারণে উলফা এখন নেতা বেছে নেয়ার জন্য একদল মেধাবি মানুষ পেয়ে গেছে। সূত্র : এসএএম।



 

Show all comments
  • Nannu chowhanna ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:৫৭ পিএম says : 0
    Eai varotio Bjp moslim bad dia onnoder ctizens biller aowtai nagoritto debe ar amader shorkar eai Bjp shorkarke shob kisu ojar kore desher shartho sere detese...
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আসামে বিক্ষোভ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ