Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ঘাঁটি উদ্ধারে মরিয়া বিএনপি

চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১৯ আসন

রফিকুল ইসলাম সেলিম | প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম | আপডেট : ১২:০৮ এএম, ২ ডিসেম্বর, ২০১৮

নিজেদের ঘাঁটি উদ্ধার করতে চায় বিএনপি। আর এই লক্ষ্যে নানা ছক আঁকছেন দলের নেতারা। ১৯৯১ সাল থেকে এ পর্যন্ত সবকটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই অঞ্চলের বেশির ভাগ আসনে জয় পেয়েছে দলটি। দলের নেতারা বলছেন, চট্টগ্রাম থেকেই মহান স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ঘোষণা দেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়াউর রহমান। চট্টগ্রামের মাটিতেই তিনি শাহাদাত বরণ করেন। আর এই কারণে চট্টগ্রাম জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী শক্তির দুর্জয় ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। এবার ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনী মাঠে বিএনপি। অনেক প্রার্থী এখনও কারাবন্দী, মামলার পাহাড় নেতাদের মাথায়। তবে নেতারা আশাবাদী অনেক বাধা, প্রতিবন্ধকতার পরও ভোটের হাওয়া তাদের অনুক‚লে। কারণ জনগণ পরিবর্তন চায়, শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির অবসান চায়।
টানা একযুগ বিএনপি ক্ষমতার বাইরে। গত পাঁচ বছর তারা সংসদেও নেই। ওয়ান ইলেভেন পরবর্তি সিডর কাটিয়ে উঠতেই বিগত ২০০৮ সালের নির্বাচনে পরাজয়। এরপর নেতাকর্মীদের উপর নেমে আসে চরম জুলুম নির্যাতন। খুন, গুম, অপহরণ, গায়েবি মামলা, হুলিয়া, ধরপাকড়। এতকিছুর পরও বিএনপির নেতাকর্মীরা হাল ছাড়েনি। তৃণমূলের নেতারা দলের ঐক্য টিকিয়ে রেখেছেন। সরকারের নানা জুলুম নির্যাতনে বিএনপির প্রতি মানুষের সমর্থন আর ভালবাসা আরও সুদৃঢ হয়েছে বলে মনে করেন দলের নেতারা। তারা বলছেন, আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে চট্টগ্রামের জনগণ সেই ভালবাসার প্রমাণ দেবে।
দলের হারানো ঘাঁটি ফিরে পেতে এবার বিএনপি নানা কৌশল গ্রহণ করছে। প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে হেভিওয়েট নেতাদের পাশপাশি তরুণদেরও প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। দলের পদ-পদবির চেয়ে ব্যক্তি ইমেজকে প্রাধান্য দিয়ে প্রার্থী দিয়েছেন দলের নীতি নির্ধারকেরা। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে এবারের নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের অন্তত তিনটি শরিকদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১১ বন্দর-পতেঙ্গা), শরিক দল এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল অব. অলি আহমদ বীরবিক্রম (চট্টগ্রাম-১৪ চন্দনাইশ), বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এম মোরশেদ খান (চট্টগ্রাম-৮ চান্দগাঁও-বোয়ালখালী), আবদুল্লাহ আল নোমান (চট্টগ্রাম-১০ ডবলমুরিং-পহাড়তলী), মীর মোহাম্মমদ নাছির উদ্দীন (চট্টগ্রাম-৫ হাটজারী), ও গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী (চট্টগ্রাম-৭ রাঙ্গুনীয়া), সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর (চট্টগ্রাম-১৬ বাঁশখালী) মতো ভিআইপি আছেন।
প্রার্থী হয়েছেন তরুণ নেতা মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন (চট্টগ্রাম-৯ কোতোয়ালী), দলের যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী (চট্টগ্রাম-৪ সীতাকুন্ড), তরুণ ব্যবসায়ী ও তৎকালীন পাকিস্তানের অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট ও স্পিকার মরহুম ফজলুল কাদের চৌধুরীর দৌহিত্র শামির কাদের চৌধুরী (চট্টগ্রাম -৬ রাউজান)। আছেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীব বীরপ্রতিক, সাবেক আইজিপি ও সচিব ওয়াই বি সিদ্দিকী, জামায়াতের নায়েবে আমির আ ন শামসুল ইসলাম, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমদ। এখনও প্রার্থী তালিকা চ‚ড়ান্ত না হলেও এবার চট্টগ্রামের ১৯টি আসনে বিএনপি জোটের প্রার্থীরা সবদিক থেকে গ্রহণযোগ্য বলে দাবি করেন জোটের নেতারা।
তারা বলছেন, একক প্রার্থী নির্ধারণ নিয়ে জোটে কোন জটিলতা নেই। কৌশল হিসাবে একাধিক নেতা মনোনয়ন পত্র দাখিল করলেও দলের সিদ্ধান্ত মেনে একক প্রার্থীর সমর্থনে অন্যরা প্রার্থীতা প্রত্যাহার করবেন। শুধু তাই নয় তারা সবাই জোটের প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নেমে পড়বেন। দল এবং জোটে কোন কলহ বিরোধ নেই আর তাই নির্বাচনে বাড়তি সুবিধা পাবেন বলে মনে করেন জোটের নেতারা। এছাড়া এই অঞ্চলের ভোটারদের চিন্তা চেতনা আর মন মানসিকতার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ভোটের প্রচারে নামবে বিএনপি জোট।
তারা বলছেন, এই অঞ্চলের মানুষ রাজনৈতিকভাবে যেমনি সচেতন তেমনি দেশপ্রেম এবং ইসলামি মূল্যবোধের ব্যাপারে আপোসহীন। ইসলামি শক্তির সাথে বিএনপির নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্পর্ক আরও বাড়ানো হবে। বিগত দিনে বিএনপির সময়ে চট্টগ্রামে ব্যাপক উন্নয়ন হয়। বিগত দশ বছরে সরকার অনেক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে পারেনি। এবারের নির্বাচনে বিএনপি তাদের প্রচারে এ বিষয়কেও ইস্যু করবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ