পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকার একতরফা ও ভোটারশুণ্য নির্বাচনের পথেই হাঁটছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। আচরণ বিধির ১৪ ধারায় বলা আছে, সরকারের সু্িবধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তার সরকারি কর্মসূচির সঙ্গে নির্বাচনী কর্মসূচি বা কর্মকান্ড যোগ করতে পারবেন না। এখন প্রশ্ন হচ্ছে-গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দেড়শো সেনা কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচনী কাজ করার যে অঙ্গীকার করেছেন তা কি আচরণ বিধি ভঙ্গ নয়? কেননা সেদিনের অনুষ্ঠানটি সরকারি কোন কর্মসূচি ছিল না। সরকারের সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে এবং রাষ্ট্রীয় ভবন গণভবনকে ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রীর কর্মকান্ড গ্রহণযোগ্য নির্বাচনকে বিতর্কিত করে তুলেছে। গতকাল (শুক্রবার) বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নির্মান করতে দিচ্ছেন না। প্রধানমন্ত্রী গত মঙ্গলবার বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রহমানসহ ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন তা অরুচিকর, অশ্রাব্য ও উস্কানিমূলক। তফশীল ঘোষনার পর প্রধানমন্ত্রী এ ধরণের বক্তব্য দিতে পারেন না।
তিনি বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধির ১১ ধারায় বলা আছে, কোন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তাদের মনোনীত কেউ বা তার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি উস্কানীমূলক বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান করতে পারবেন না। ঐ ধারা উপ-ধারা (ক) তে উল্লেখ আছে, নির্বাচনী প্রচারণাকালে ব্যক্তিগত চরিত্র হনন করে বক্তব্য প্রদান বা কোন ধরণের তিক্ত (উস্কানিমূলক বা মানহানিকর) বক্তব্য প্রদান করতে পারবেন না। যদিও নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী বর্তমানে সব ধরণের প্রচার-প্রচারণা বন্ধ তবু এই উস্কানীমূলক বক্তব্য প্রদান করে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, তফসিল ঘোষণার পর রাষ্ট্রীয় ভবন গণভবনে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার নিয়েছেন। রিটার্নিং অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বিভিন্ন মন্ত্রী-এমপিদের নিয়ে একতরফা নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার প্ল্যান করা হচ্ছে বলে আমাদের কাছে খবর এসেছে। নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসার ও বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপারদের নানা ধরণের নির্দেশনাও দেয়া হচ্ছে। নির্বাচনী আচরণবিধির ১৪ (২) ধারা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী গণভবনের মতো একটি রাষ্ট্রীয় ভবনে থেকে জনবিরোধী কার্যকলাপ এবং জনগণের ভোটারাধিকার হরণের ষড়যন্ত্র কোনভাবেই করতে পারেন না। এই পরিস্থিতিতে গত তিন দিন আগে বিকাল ৫টায় গণভবনে দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলো কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) খাত থেকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১৮ লাখ কম্বল দিতে যাচ্ছে বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের নামে কম্বলসহ ত্রাণসামগ্রী আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও তাদের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে বিতরণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে আনুষ্ঠানিকভাবে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। শুধু আশ্বাসে নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখছে কমিশন। নির্বাচন কমিশনের গতি-প্রকৃতি লক্ষ্য করলে বিস্মিত হতে হয়, সত্যি বিচিত্র নির্বাচন কমিশন
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, দলবাজ নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কখনোই সাহসী হতে পারবেন না। মূলত: জাল-জোচ্চুরি-প্রহসনের ভোটের জন্য নির্বাচন কমিশন সরকারকে সব ধরণের সহযোগিতা করে যাচ্ছে। সুস্পষ্টভাবে প্রধানমন্ত্রী আচরণবিধি অমান্য করলেও নির্বাচন কমিশন তাতে কর্ণপাত না করে নির্বাচন নিয়ে সরকারের গোপন মিশনগুলির অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করছে। প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন কমিশনের পক্ষে বিধিভঙ্গকারী প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কার্যত: ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব নয়।
কমিশনকে সতর্ক করে তিনি বলেন, এখনো সময় আছে, নিজেদেরকে সরকারের ছাতার নিচে থেকে বের করে জনগণের ছাতার তলে আসুন। জনগণের হরণকৃত ভোটারাধিকার ফেরত দেয়ার চেষ্টা করুন। আশা করবো, বিধিভঙ্গের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দ্রæত ব্যবস্থা নিয়ে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করবেন। যদি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আরেকটি নির্বাচনের চিন্তা করে থাকেন, তাবে আপনারা রেহাই পাবেন না। অন্যায় বা অবিচারের পন্থা অবলম্বন করলে দেশের সাধারণ মানুষ তা রুখে দিতে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। কঠিন পরিনতি ভোগ করতে হবে আপনাদের।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী সদস্য সাইফুল ইসলাম পটু প্রমূখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।