Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রাঙ্গুনিয়ায় আমনের বাম্পার ফলন

রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। সবকয়টি বিলে আমন ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের চোখে-মুখে আনন্দের ঝিলিক দেখা দিয়েছে। আমন ধানে ভরে গেছে মাঠ। যতদূর চোখ যায় মাঠে সোনালি ধানের শীষ। চারদিকে মৌ মৌ গন্ধ। এখন কৃষাণ-কৃষাণিরা গোলা, খলা, আঙ্গিনায় পরিষ্কার করার কাজে ব্যস্ত।
উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় আগাম জাতের কিছু ধান পাকলেও ১০/১৫ দিনের মধ্যে আমন ধান পুরোদমে কাটা-মাড়াই শুরু হবে। গত বছর বন্যার কারণে গুমইবিল ডুবে যায় এবং কোটি কোটি টাকা কৃষকদের লোকসান গুনতে হয়। চলতি বছর প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হওয়ায় এবং সময়মত পানি সেচ পাওয়ায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চন্দ্রঘোনা, হোছনাবাদ, মরিয়মনগর ও স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়ন নিয়ে গুমাইবিলে জমির পরিমাণ হচ্ছে ৩২৩৮ হেক্টর। চলতি মৌসুমে আমন চাষ হয়েছে ৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। গুমাইবিল এলাকায় ১২টি ব্লকে ৭ হাজার ৫০০ কৃষক আমন চাষ করেছেন। ১৫টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় প্রায় ১৪ হাজার ৯শ’ ৬০ হেক্টর জমিতে ব্রি-৪৯, ব্রি-৫১, ব্রি-৫২, ব্রি-৭৫, পাইজাম, বিআর-১১, বিআর-২২, বিআর-২৩ জাতের আমনের চাষাবাদ হয়েছে। আবহাওয়া ও অনুকূল পরিবেশ থাকায় এবার আমন ধানে বিভিন্ন রকমের রোগবালাই কম হয়েছে বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে। গুমাইবিলের হোছনাবাদ ব্লকের কৃষক মো. রহিম বলেন, দুই কানি জমিতে আমন চাষ করেছি। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর ফলন ভালো হয়েছে। প্রতিকানি জমিতে ৮০-১০০ আড়ি (এক আড়ি ১০ কেজি) ফলন হয়েছে। দুই কানি জমিতে ২৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ধানের দাম ভালো থাকলে লাভবান হবেন বলে জানান।
গুমাইবিল চন্দ্রঘোনা ব্লকের সিআইপি ফসল সমবায় লিমিটেড এর সভাপতি ফোরকান উদ্দিন বলেন, এবছর ৭ কানি জমিতে আমনের চাষ করেছি। প্রতিকানি জমি চাষ করতে খরচ পড়েছে ১২ হাজার টাকা ব্রি-৪৯ জাত ধান ও স্থানীয় জাত সাদা পাঞ্জা চাষ করেছি। প্রতি কানি জমিতে গড়ে ৭০-৯০ আড়ি ধান উৎপাদন হয়েছে। গত বছর প্রতিকানি জমিতে ৪০-৫০ আড়ি ধান উৎপাদন হয় এবং প্রতিকানিতে ৬ হাজার টাকা উপরে লোকসান গুনতে হয়। চলতি মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। মরিয়মনগরের কৃষক মো. আইয়ুব আলী বলেন, কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
গত বছরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা কিছুটা লোকসান কাটিয়ে লাভবান হচ্ছেন। আমন ধান কাটা শুরুর মধ্য দিয়ে কৃষকদের আমন উৎসব শুরু হয়েছে। আমার প্রতিবেশীরা ১০/১২ দিন পর ধান কাটবে। শিলক ইউনিয়নের কামাল চৌধুরী বলেন, দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার পদুয়া, শিলক, কোদালা ও সরফভাটা ইউনিয়নে শত শত একর জমিতে বন্য হাতির আক্রমন না থাকলে কৃষকরা আরো বেশি লাভবান হতো। কৃষকরা দলবদ্ধ হয়ে রাত জেগে পাহাড়া, বৈদ্যুতিক বাতি জ্বেলে আলো ছড়ানো, ডাকঢোল, ফটকা ফাটিয়ে হাতি থেকে ধানক্ষেত রক্ষা করেছেন। বন্য হাতি ধানক্ষেত নষ্ট করে। উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রোকন বিশ্বাস বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক তদারকিতে যথাসময়ে সার পাওয়া, কীটনাশকের যথাযথ ব্যবহার, পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাসেম খালে সময়মত পানি সেচ ব্যবস্থা ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার বৃদ্ধি করায় ভাল ফলন হয়েছে। গুমাইবিলসহ রাঙ্গুনিয়ায় আশাতীত আমন ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আমন

২৬ নভেম্বর, ২০২২
৫ অক্টোবর, ২০২২
১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২
২৫ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ