মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : সিরিয়ায় লাতাকিয়া প্রদেশের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ রাবিয়া শহর বিদ্রোহীদের কাছ থেকে দখল করে নিয়েছে সরকারি বাহিনী। হোমস শহরের আশপাশেও সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আইএসের সংঘর্ষ চলছে বলে খবর দিয়েছে সংবাদসংস্থাগুলো। গত সোমবার আসাদ বাহিনী জানায়, উপকূলীয় প্রদেশ লাতাকিয়ায় বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা রাবিয়া শহর দখল করে নিয়েছে তারা। গুরুত্বপূর্ণ শহরটির পতনের ফলে পুরো প্রদেশে বিদ্রোহীদের একমাত্র ঘাঁটি হিসেবে এখন কেবল সালমা টিকে রইলো। প্রায় একমাস ধরে সেই শহরটিও অবরোধ করে রেখেছে সরকারি বাহিনী। এদিকে, সিরিয়া সংকট নিয়ে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠেয় আলোচনা শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়নি। সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো- বিশেষ করে বিদ্রোহীদের প্রতিনিধিত্ব কে করবে তা নিয়ে মতানৈক্যের কারণেই প্রত্যাশিত বৈঠকটি হয়নি। ভবিষ্যতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে তাতে কোন ধরনের ছাড় দেবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে সিরিয়া সরকার। এরই মধ্যে পশ্চিমাঞ্চলীয় হোমস শহরের আশপাশের এলাকাগুলোতেও আইএস জিহাদিদের সাথে সরকারি বাহিনীর তুমুল লড়াই চলছে বলে জানা গেছে। এ অভিযানে সিরিয় বাহিনীকে বিমান হামলার মাধ্যম সহায়তা করছে রাশিয়া। প্রাণ বাঁচাতে এরই মধ্যে ঐ অঞ্চল ছেড়ে গেছে বহু মানুষ। এইসব সংঘাত আর সংঘর্ষ থামাতে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় জেনেভায় শান্তি আলোচনা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হতে পারেনি। কি কারণে এ শান্তি আলোচনা হচ্ছে না, তা কোন পক্ষ থেকেই স্পষ্ট করে জানানো না হলেও, পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, কারা বিরোধী পক্ষের প্রতিনিধিত্ব করবে তা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এবং বিরোধীদের নিজেদের মধ্যেও মতপার্থক্য থাকায় শেষ পর্যন্ত জেনেভা বৈঠক বসেনি। এদিকে বাশার সরকারের এক শীর্ষ কর্মকর্তা হিলাল আল হিলাল জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে জেনেভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও তাতে কোন ধরনের ছাড় দেবে না তার সরকার। এর আগে সিরিয়ার প্রধান বিরোধী দলগুলোর বরাতে বার্তা সংস্থা জানায়, রুশ বিমানবাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা বন্ধ না করলে এবং সরকারি বাহিনী বিদ্রোহী অধ্যুষিত এলাকাগুলো থেকে অবরোধ তুলে না নিলে আলোচনায় বসবেন না তারা। জাতিসংঘের শান্তি প্রস্তাবে ৬ মাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন এবং ১৮ মাসের মধ্যে সেই সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের কথা বলা হয়েছে। এ অবস্থায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, কেবলমাত্র রাজনৈতিক মতপার্থক্য দূর করতে পারলেই সিরিয়ায় শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক সারিকিস কাসারগিয়ান বলেন, ইউরোপে শরণার্থীদের ঢল, প্যারিস হামলা, তেলের দরপতনের মত ঘটনার দিকে তাকালেই বোঝা যায়, সিরিয়া সংকটের সমাধান কতটা জরুরি। এই মুহূর্তে এর কোন বিকল্প নেই। আরেক রাজনীতি বিশ্লেষক হাসান আব্দুল আজিম বলেন, আমার মনে হয়, একটি সার্বজনীন গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক সমাধানের সব ক্ষেত্রই প্রস্তুত রয়েছে। সিরিয়ায় যখন এ পরিস্থিতি তখন ইরাকে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে আনবার প্রদেশের রাজধানী রামাদির পশ্চিমাঞ্চলে ১৭ আইএস জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। এ সময় জঙ্গিদের কয়েকটি গাড়ি বোমাও নিষ্ক্রিয় করে নিরাপত্তা বাহিনী। রয়টার্স, বিবিসি।
চলতি সপ্তাহেই শান্তিবৈঠক চায় জাতিসংঘ
ইনকিলাব ডেস্ক : সিরিয়ায় যুদ্ধ বন্ধে চলতি সপ্তাহেই শান্তি আলোচনা শুরু করতে চায় জাতিসংঘ। তবে সিরীয় সরকার ও রাশিয়ার জোট যদি বিমান হামলা বন্ধ না করে, তাহলে আলোচনায় বসবে না বলে জানিয়েছে বিরোধীরা। এতে দীর্ঘ দুই বছর ধরে সিরিয়ায় চলা গৃহযুদ্ধ বন্ধ হওয়ার যে আশা দেখা দিয়েছিল তা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া বিরোধীদের মধ্যে কে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে আলোচনায় প্রতিনিধিত্ব করবেন তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, জাতিসংঘের প্রতিনিধি স্ট্যাফান ডি মিসতুরা বলেছেন, আগামী শুক্রবারের মধ্যেই আলোচনা শুরু করতে দুই পক্ষের কাছে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। প্রাথমিকভাবে ছয় মাস আলোচনা চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আলোচনার শুরুতেই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করা হবে। এ বিষয়ে সম্মত হলে ধীরে ধীরে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা হবে। দুই বছর ধরে চলা এই গৃহযুদ্ধে নিহত হয়েছেন আড়াই লাখেরও বেশি মানুষ। এ ছাড়া যুদ্ধের কারণে গৃহহীন হয়েছেন ১০ মিলিয়ন বা এক কোটি মানুষ। যুদ্ধবিরতিতে যদি দুই পক্ষই রাজি হয় তাহলে, পুরো দেশেই তা কার্যকর হবে। তবে ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও আল-কায়েদা নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলো যুদ্ধবিরতির বাইরে থাকবে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান জাতিসংঘের প্রতিনিধি স্ট্যাফান। সরকারবিরোধী একটি বিদ্রোহী গ্রুপের মুখপাত্র জানিয়েছেন, যত দিন পর্যন্ত বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলো অবরুদ্ধ করে রাখা হবে এবং তাদের ওপর বিমান হামলা চালানো হবে তত দিন পর্যন্ত কোনো ধরনের শান্তি আলোচনা শুরু করা সম্ভব নয়। বিদ্রোহী গ্রুপ আলিয়াত সাইফ আল শামের মুখপাত্র আবু গিয়াত আল-সামি বলেন, এই অবস্থায় যদি আমরা আলোচনায় অংশ নিই, তাহলে তা হবে আমাদের শহীদদের সঙ্গে প্রতারণা। এদিকে আলোচনায় কোন কোন গ্রুপ অংশ নেবে তা দ্রুত জানানোর তাগিদ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। সেই সঙ্গে সিরিয়ার শান্তি আলোচনার জন্য নিযুক্ত জাতিসংঘের প্রতিনিধির প্রতি নিজের পূর্ণ সমর্থনও জানিয়েছেন তিনি। শান্তি আলোচনার বিষয়টি সিরিয়ার দুই পক্ষকেই গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। তা না হলে যুদ্ধ চলতেই থাকবে। পুরো বিষয়টিই এখন তাদের ওপর নির্ভর করছে। আপনি একটি ঘোড়াকে পানির কাছে নিয়ে যেতে পারবেন, তবে তাকে পানি খেতে বাধ্য করতে পারবেন না, বললেন কেরি। সিরিয়ায় সর্বশেষ শান্তি আলোচনা হয়েছিল ২০১৪ সালে। সিরিয়া ও ইরাকের কিছু অংশে খিলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়ে এসব অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয় আইএস। একপর্যায়ে এই যুদ্ধে বিশ্বের পরাশক্তিগুলোও যুক্ত হয়। ২০১৪ সাল থেকেই আইএস জঙ্গিদের ওপর বিমান হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া প্রায় চার মাস আগে থেকে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের ওপর বিমান হামলা চালাতে থাকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের মিত্র রাশিয়া। সিরিয়ার সেনাবাহিনীকেও বিভিন্নভাবে সহায়তা করছে রাশিয়া। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে আইএসের প্রবেশ এবং রাশিয়ার যুক্ত হওয়া পুরো যুদ্ধকে নতুন মোড় দিয়েছে। এই যুদ্ধ বন্ধ করতে এবং সিরিয়ায় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের উদ্যোগে শান্তি আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।