Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্বিচারে অতিথি পাখি নিধন

সাঁথিয়া(পাবনা) উপজেলা সংবাদদাতা: | প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

পাখি পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলেও পাবনার সাঁথিয়ায় গাজারিয়া বিলসহ বিভিন্ন বিলে রাতের আঁধারে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে অতিথি পাখি। শীতের আগমনে এসব এলাকার বিভিন্ন বিলে অতিথি পাখির আনাগোনা বেড়ে যায়। আর এ সুযোগে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে এসব পাখিকে। সরেজমিনে উপজেলার করমজা ইউনিনের আফড়া গ্রমের গজারিয়া বিল ঘুরে দেখা যায় অতিথি পাখির আনাগোনা। মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্তের রসনা বিলাসের জন্য পাখি শিকারীরা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী এসব পাখি রাতের আধারে মাছ মারা টেটাঁ দিয়ে হত্যা করছে আর দিনের বেলায় এয়ারগানের পাশাপাশি যাঁতিকল, বিষটোপ, ঘুমের ওষুধ, দিয়ে কৌশলে পাখি শিকার করছে।
উপজেলার শামুকজানি গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিকারি বলেন, আমি শখের বসে বন্ধুদের সাথে নিয়ে রাতে পাখি মারতে গিয়েছিলাম ৫০-৬০টি পাখি পেয়েছি। তিনি জানান বিলের মধ্যে ধান ক্ষেতে থাকা এসব পাখি টর্চ ও মাছ মারা টেটা দিয়ে মেরেছি। শুধু আমি না অনেকেই এভাবে পাখি মারছে ।

জানা গেছে, এখানে প্রতি বছর শীত প্রধান অঞ্চল থেকে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে আসে নানা প্রজাতির পাখি। যেগুলো অতিথি পাখি নামে পরিচিত। আবহাওয়া পরিবর্তন, খাদ্যের সন্ধান ও প্রজননসহ নানা কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগমন ঘটে এদের। এখানে গিরিয়া হাঁস, ভূতি হাঁস, বক, ডাডুক, ডুবুড়ি, পানকৌড়িসহ অন্যান্য জলচর পাখি এখন ভিড় জমাচ্ছে গজারিয়া বিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে। এ পাখিদের সঙ্গে মিলেমিশে এক হয়ে গেছে স্থায়ীভাবে বাস করা অন্যান্য পাখিগুলো। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলাকার গজারিয়া বিল, কাটিয়াদহ বিল, মুক্তরের বিল, সেনাই বিল, বড় বিল, ছোট বিল, গাঙ ভাঙ্গার বিল, টেংড়াগাড়ীর বিল এবং পার্শ্ববর্তী গাজনার বিলেও চলছে অবাধে পাখি হত্যা।

রাজশাহী পরিবেশ ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, পাখি হত্যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ অনুযায়ী যদি কোনো ব্যক্তি পাখি হত্যা করেন তাহলে তার সর্বোচ্চ ১ বছরের কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে। এমনকি একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে সর্বোচ্চ ২ বছর কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এছাড়া পাখির দেহের কোনো অংশ সংগ্রহ, কেনাবেচা কিংবা পরিবহন করলে সর্বোচ্চ ৬ মাস কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ত্রিশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে সর্বোচ্চ ১ বছর কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

তিনি বলেন, যারা পাখি হত্যা করে তারা বিকৃত মনের মানুষ। পাখি আমাদের পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলবো। জনসচেতনতার অভাব ও আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় এসব পাখি নির্বিচারে হত্যা হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাখি নিধন

১১ ডিসেম্বর, ২০১৯
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ