মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : তিউনিসিয়ায় কয়েক হাজার পুলিশ বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সামনে গত সোমবার এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। গত সপ্তাহ থেকে চলা বেকারত্ব বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ শেষ না হতেই পুলিশের এই বিক্ষোভ প্রধানমন্ত্রী হাবিব এসসিদের জন্য নতুন সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। তিউনিসিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী দেশের ইসলামী জঙ্গি গোষ্ঠী মোকাবেলার যুদ্ধে সরাসরি জড়িত। এই জঙ্গি গোষ্ঠীরা গত বছর আর্মি চেকপয়েন্ট, পর্যটক হোটেল, জাদুঘর এবং প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডসহ বিভিন্ন স্থানে বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলা চালায়।
কার্থেজে প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসের সামনে সাধারণ পোশাকে বিক্ষোভে অংশ নেয়া পুলিশেরা শ্লোগান দিচ্ছিল, আমাদের বেতন এখনো কম, আমরা দেশকে রক্ষাকরী, আমরা আমাদের অধিকার চাই। পুলিশ ইউনিয়নের মুখপাত্র চকরি হামাদা বলেন, অন্যান্য সেক্টরের মত আমাদের অবস্থারও উন্নতি দেখতে চাই, কারণ আমরা দেশ রক্ষায় সম্মুখভাগে থাকি। প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ড বাহিনী ঐ অংশের রাস্তা আটকে রেখেছে যেখানে প্রায় ৩ হাজার পুলিশ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। উল্লেখ্য, তিউনিসিয়ার ২০১৪ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে ধর্মনিরপেক্ষ নিদা তিউনিস দল জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। এর আগে ২০১১ সালে আরব বসন্তের শুরুতে শাসক জয়নাল আবেদিন বেন আলির পতনের পর প্রথম নির্বাচনে জয়লাভ করে দেশটির বৃহত্তম ইসলামপন্থী দল এন্নাহদা পার্টি। বর্তমানে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন নিদা তিউনিস পার্টির প্রধান বেজি চেইদ এসেবসি। শাসক বেন আলীর সময় সংসদের স্পিকার ছিলেন এসেবসি। এসেবসির শাসনে দেশটি আবারো দীর্ঘ প্রতিষ্ঠিত এলিট বা অভিজাতদের শাসনে ফিরে গেছে বলে সমালোচকরা বলছেন।
এর আগে খবরে বলা হয়, তিউনিসিয়ায় বেকারত্ব সমস্যা নিয়ে সৃষ্ট আন্দোলন দেশটির প্রধান প্রধান শহরগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারি চাকরি প্রত্যাশীদের তালিকায় নিজের নাম না থাকার হতাশায় এক তিউনিস তরুণ বৈদ্যুতিক তারে শরীর জড়িয়ে আত্মহত্যা করার পর উত্তরাঞ্চলীয় কাসেরিন প্রদেশে আন্দোলন শুরু হয়। ২০১১ সালে স্বৈরশাসক জয়নাল আবেদিন বেন আলিকে আরব বসন্তে’র মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে দেশটিতে বেকারত্ব বাড়তে থাকে। বর্তমানে দেশটিতে এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি তরুণ বেকার এবং ৬২% তিউনিস গ্রাজুয়েটের কোনো কর্মসংস্থান নেই। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় তিউনিসিয়ার কাসেরিন, সিদি বৌজিদ, ফেরিয়ানা ও রাজধানী তিউনিসে আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সিদি বৌজিদ শহরে আন্দোলনকারীরা সকল প্রকার রাস্তা কেটে দিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। আন্দোলনকারীদের সাথে ব্যাপক সংঘর্ষে ফেরিয়ানা শহরে এক পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংঘর্ষে কমপক্ষে ৫৯ জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সংঘর্ষে কমপক্ষে ৪০ আন্দোলনকারী আহত হন।
এদিকে, রাজধানী তিউনিসে হাজার হাজার আন্দোলনকারী বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। এছাড়া দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর গুনেবেলিতে আন্দোলন সমর্থকরা একটি পুলিশ স্টেশন ও বিভিন্ন সরকারি ভবনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট বেজি কাইদ ইসেবসি জানিয়েছেন, সরকার কাসেরিনবাসীর জন্য ৬ হাজার চাকরির ব্যবস্থা করছে। এছাড়া তিনি দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তেরও আশ্বাস দেন। এদিকে, দেশটির প্রধানমন্ত্রী হাবিব এসিদ তার ইউরোপ সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে বলেছেন, আমাদের হাতে জাদুর কাঠি নেই যার মাধ্যমে রাতারাতি বেকারত্ব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। রয়টার্স, বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।