মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আগামী বছর গুরু নানকের জন্মের ৫৫০ বছর পূর্তি। সেই উপলক্ষে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কর্তারপুর করিডর গড়ায় সায় দিয়েছে মোদী সরকার। ভারতের পাঞ্জাব থেকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত সেটি। সীমান্তের ওপারে পাকিস্তানেও একই ধরনের একটি করিডর গড়ে উঠবে, যাতে উপকৃত হবেন পুণ্যার্থীরা। সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের কর্তারপুর গুরুদোয়ারা নানকের সমাধিস্থলে পৌঁছতে আর সমস্যায় পড়তে হবে না তাদের। যে কোনও আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের মতো সুযোগ সুবিধা মিলবে ওই করিডরে। এই গুরুদোয়ারা নিয়ে কিছু তথ্য দেয়া হল-
লাহোর থেকে ১২০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের নানকানা সাহিব শহরে ইরাবতী নদীর তীরে অবস্থিত কর্তারপুর গুরুদোয়ারা। তার পুরো নাম গুরুদোয়ারা দরবার সাহিব কর্তারপুর। পৃথিবীর সর্বপ্রথম গুরুদোয়ারা সেটি। তাই ঐতিহাসিক গুরুত্ব অসীম। ১৫২২ সালে গুরুদোয়ারাটি স্থাপন করেন প্রথম শিখ ধর্মগুরু।
ভারতের পঞ্জাবের গুরদাসপুরের ডেরা নবাব সাহিব রেল স্টেশন থেকে গুরুদোয়ারাটির দূরত্ব চার কিলোমিটার।
জীবনের ১৮টি বছর ওই গুরুদ্বারেই কাটান প্রথম গুরু নানক। ১৫৩৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে বিশ্বাস ভক্তদের। তার একটি সমাধিও রয়েছে সেখানে। তাই প্রতিবছর সেখানে ভিড় জমান ভক্তরা।
দেশভাগের পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তিক্ততা ক্রমশ বাড়লেও, কর্তারপুর গুরুদ্বারের জন্যই আজও সম্পর্কের শেষ সুতোটুকু টিকে রয়েছে দুই দেশের মধ্যে। ভিসা পাসপোর্ট ছাড়াই প্রতিবছর বিশেষ দিনগুলিতে ভারত থেকে হাজার হাজার শিখ পুণ্যার্থী হাজির হন সেখানে।
যদিও স্বাধীনতার পর থেকেই সেখানে যাওয়ার অবাধ সুযোগ ছিল না ভারতীয়দের। ১৯৭৪ সালে প্রথমবার ভারতের গুরুদোয়ারাটি সকলের জন্য খুলে দেওয়ার প্রস্তাব ওঠে। তার বাস্তবায়ন হয় অবশ্য ১৯৯৯ সালে। সে বছর বাসে চড়ে লাহোর গিয়েছিলেন তৎলীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারি বাজপেয়ী। তিনিই প্রথম করিডর গড়ার প্রস্তাব দেন। ২০০০ সালে দুই দেশের সরকারই তাতে সম্মত হয়। কিন্তু অজানা কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি।
২০০৪ এবং ২০০৮ সালে ইউপিএ সরকারের পক্ষ থেকে নতুন করে করিডর গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। ২০১০ সালে পাঞ্জাব সরকারও কেন্দ্রকে তা নিয়ে চাপ দেয়। ২০১৭ সালে বিষয়টি সংসদে উঠলে দুই দেশের মধ্যে তিক্ততা বাড়ার অজুহাতে পার্লামেন্টারি স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্টে তা খারিজ হয়ে যায়।
বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক নতুন বরে আলোচনা শুরু হয় চলতি বছরের অগস্ট মাসে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যান পঞ্জাবে কংগ্রেসের মন্ত্রী নভজ্যোত সিংহ সিধু। সেখানে পাক সেনা প্রধান কামার জাভেদ বাজওয়াকে আলিঙ্গন করেন তিনি। তার জন্য ‘দেশদ্রোহী’ উপাধি জোটে তার কপালে। বিজেপির থেকে তার আচরণের তীব্র নিন্দা করা হয়। তবে সিধু জানান, পাক সেনাপ্রধান করিডর গড়ায় সায় দেওয়াতেই তাকে আলিঙ্গন করেন তিনি। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে দেখাও করেন সিধু। যাতে করিডর নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কথা শুরু হয়।
যার পর ২২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। সেখানে করিডরের প্রস্তাবে সায় মেলে। এ ব্যাপারে পাকিস্তান সরকারকেও উদ্যোগ নিতে বলা হয়। বুধবার পাকিস্তানে করিডরটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ইমরান খান। সুষমা স্বরাজকে সেখানে হাজির থাকতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি। আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংহকেও। তবে তারা দু’জনেই আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দিয়েছেন। কেন্দ্রের অনুমতি নিয়ে গিয়েছেন শুধু সিধু। সূত্র: আনন্দবাজার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।