পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন নির্বাচনে কারচুপির আশংকা করে আবারও সবাইকে ভোট কেন্দ্র পাহারা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘লঞ্চিং গণফোরাম-লিড পাবলিক পলিসি ইনিশিয়েটিভ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। ড. কামাল হোসেন বলেন, জনগণের ভোটে বাধা দেয়া স্বাধীনতা বিরোধী কাজ। যারা ভোটে বাধা দেবে তারা স্বাধীনতা বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত হবে।
তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্র পাহারা দেয়া মানে গৃহযুদ্ধ বাধিয়ে দেয়া নয়। যারা গৃহযুদ্ধ বাধিয়ে দেয়ার কথা বলেন তারা কোন যুক্তিতে এসব কথা বলেন। তাদের মন মানসিকতাই বা কি? জনগণের ভোটাধিকার পাহারা দিতে হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন জানান, যথাসময়ে নির্বাচন হবার বিষয়ে তিনি আশাবাদী। আসন বণ্টন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পিঠা ভাগাভাগি করতে গেলে কিছু টানাটানিতো হবেই। এ কাজটি কঠিন। তবে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা যে এতো দ্রুত ঐক্য গড়ে তুলতো পারবো তা ভাবিনি। মাত্র দেড় ঘন্টার মধ্যে আমরা ঐক্যমতে পৌঁছেছিলাম। এখনো এসব বিষয়ে কোন সমস্যা হবে না। আমারা এগিয়ে যাব। ড. কামাল হোসেন বলেন, গণফোরাম ও বিএনপির মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে কোনও সংকট হয়নি। জোট হলে তো আসন ভাগ করতেই হয়। আলোচনা কিছুটা শুরু হয়েছে। ফাঁস হওয়া বিএনপির দুই নেতার ফোনালাপে ‘ব্ল্যাকমেইল’ শব্দের ব্যবহার নিয়ে করা আরেক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল বলেন, আশা করছি এ ধরনের ভাষা আমরা ব্যবহার থেকে বিরত থাকবো। ভাষার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে লালন করতে হলে রাজনীতিবিদসহ সকলকে মার্জিত ভাষা ব্যবহার করতে হবে। তিনি বলেন, উপনিবেশিক আমলে আমরা শোষক শাসক শব্দ ব্যবহার করেছি। প্রতিপক্ষ হুমকি দিয়ে বরা দেখে নেব-এসব শব্দ এখন না ব্যবহার করা উচিত। আসলে বিভিন্ন রাজনৈতিক আমলে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা ঢুকে পরে এধরণের শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। সে সময় কোন কারণ না বলে মানুষকে তুলে নিয়ে যাওয়া হত। তিনি বলেন অনেক লোক একাত্তরে জীবন দিয়েছে। কিন্তু এখনও রাজনীতিতে গুনগত পরিবর্তন হয়নি। তাহলে প্রশ্ন এত লোক জীবন দিল কেন? স্বাধীনতার অর্থই হল জনগণ ক্ষমতার মালিক। এ দেশের মানুষ এখনো ভালো মানুষকে সম্মান করে। তারা ভালো মানুষকে মূল্যায়ন করতে ভুলে যায়নি।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব কিনা, এ ব্যাপারে মত জানতে চাইলে গণফোরাম সভাপতি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা নিরাশ হতে চাই না। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরীর চেষ্টা আমরা করে যাচ্ছি। আশা করছি পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে। ভোটে বাধা দেওয়া হলে তা স্বাধীনতার বিরোধিতার সমান। কারণ, ভোট জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার। যারা নির্বাচনে অংশ নেবেন শুধু তারাই বঞ্চিত হবে না, পুরো দেশের মানুষ বঞ্চিত হবেন।
ঐক্যফ্রন্ট জয়ী হলে কী করবে, সে ব্যাপারে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন তিনি গণফোরামের পক্ষ থেকে কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন। ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, আমার মনে হয় তাতে অনেক ভুল রয়েছে। ঐক্যফ্রন্টের সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেগুলো শুধরে নেওয়া হবে। সবার জন্য সমতা, কোয়ালিটি অব পাবলিক সার্ভিস, কোয়ালিটি অব পলিটিক্স নিশ্চিত করা হবে। যে শিক্ষার্থী ঢাকায় এবং যে শিক্ষার্থী গ্রামে পড়ালেখা করেন তাদের মধ্যে পার্থক্য আছে। তবে এই পার্থক্য দূর করা সম্ভব। আমরা গ্রামের শিক্ষা ব্যবস্থাতেও শহরের সুযোগ সুবিধা যাতে থাকে সে ব্যবস্থা করা হবে। সরকারি কর্মকর্তারা ভুলে যান, জনগণের টাকায় দেশ চলে, তারা চলেন। গণফোরাম ও ঐক্যফ্রন্টের সরকার এলে এই বৈষম্যগুলো আর থাকবে না। অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমাদের নীতিমালাতেই তা নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, আমাদের সময় চাকরি হবে মেধা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে। ব্যাংকিং খাতে সুশাসন আনা হবে। বাজেট রিফর্ম করা হবে। বাজেট প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় রিফর্ম করার সুযোগ রয়েছে। আমাদের সরকার গতানুগতিক কোনো সরকার হবে না। জনগণ সরাসরি তাদের মতামত জানাতে পারবেন-সেই সুযোগ রাখা হবে। আমাদের স্বপ্ন অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র। ব্যক্তি কেন্দ্রীক গণতন্ত্র চর্চার দিন শেষ। বর্তমান সময়টা দেশের ইতিহাসের জন্য একটা টার্নিং পয়েন্ট। এ সময়ে আপনি অন্যায়ের পক্ষে থাকবেন না ন্যায়ের পক্ষে থাকবেন সে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু, মোকাব্বির খান, অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, রফিকুল ইসলাম পথিক, রুপু আজম, মোহাম্মদ উল্লাহ মধু প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।