পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার বিরুদ্ধে পক্ষপাতমুলক আচরণের অভিযোগ তুলে ওই পদে পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরামের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি জানান।
ড.কামাল হোসেন বলেন, সিইসির ওপর প্রথম থেকেই আমরা সন্তুষ্ট ছিলাম না। এখনো সন্তুষ্ট নই। তার আচরণে আমরা মনে করি তার পক্ষে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। তার পরিবর্তে একজন বিশ্বাসযোগ্য লোককে আনতে হবে। আমি ওনাকে আবারও বলছি, এখনো সময় আছে, এতদিন যা করেছেন করেছেন, এখন থেকে পরিবর্তন হন। তা না হলে তার রিপ্লেস করা হোক। আমরা ওনার রিমুভ (সরিয়ে দেয়া) চাই না। ওনার রিপ্লেস (বদলি) চাই।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) ভাগ্নে এস এম শাহজাদা সাজু পটুয়াখালি-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। এতে সিইসির নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের বিষয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
ড.কামাল বলেন, আমরা একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। জনগণ দেশের মালিক। ভোটে তাদের নেতা নির্বাচনের সুযোগ দেওয়া উচিত। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায় বর্তমান ধরপাকড়। এখনই পাইকারি হারে গ্রেপ্তার বন্ধ হওয়া দরকার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত ধরপাকড় না করে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো সরকারের বাহিনী না, তারা রাষ্ট্রের বাহিনী সবার বাহিনী।
নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ ইভিএমের ব্যবহার বাতিল করেছে। এটা নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য না। এটাতে বিশেষ কায়দা করলে এক জায়গার ভোট অন্যজনের ওপর পড়তে পারে। এটা দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেনের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে গণফোরাম নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ৩০ ডিসেম্বর সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে পরিস্থিতি সৃষ্টির কথা ছিল, নির্বাচন কমিশন তা করতে পারেনি। গণভবন, মন্ত্রীদের বাসা ও সরকারি অফিস সরকার দলীয়রা রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করছে, যা নির্বাচনী আচরণবিধি ১৪/১,১৪/২ এর লঙ্ঘন। অথচ নির্বাচন কমিশনের এতে কোনো ভূমিকা নেই। তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বহিনী নির্বাচন কমিশনের পুরোপুরি কর্তৃত্বের মধ্যে থাকলেও আজ অবধি প্রশাসনিক কর্মকর্তা, নির্বাচনী কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আইন বহির্ভূতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী বিরোধীপক্ষের ওপর হাজার হাজার মামলা, নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করতে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি অব্যাহত রেখেছে। এমনকি নির্বাচনে যারা প্রার্থী হবেন তাদেরকেও উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনায় মামলা ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
ইসি বলছে তাদের নির্দেশে পুলিশ সব গ্রেফতার করছে। এ বিষয়ে আপনার বকতব্য কি? জবাবে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল বলেন, কেনো, কোন অপরাধে লোকদের গ্রেফতারের ব্যাপারে আপনি আদেশ দিচ্ছেন- ভেঙ্গে বলুন, তথ্য সহকারে বলুন। যাতে আমরা এটা যাছাই করে দেখতে পারি যে আপনি যুক্তিসঙ্গত কারণে গ্রেফতার করাচ্ছেন না সরকারের একজন সহায়ক হিসেবে এ কাজ করছেন। আমরা মনে করি, যেভাবে ধরপাকড় ও অন্তুরীন করা হচেছ তা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়ক নয়। আমরা বলতে চাই, পাইকারী হারে গ্রেপ্তার বন্ধ করা দরকার। একটা মুক্ত পরিবেশের জন্য পুলিশকে বলা দরকার যে, তোমাদের কাজ হলো নির্বাচনের জন্য সুন্দর পরিবেশ তৈরি করা যেখানে প্রার্থীরা তার সমর্থকদের কাছে গিয়ে বক্তব্য রাখতে পারবে। পুলিশের কাজ হচ্ছে তাদের কাজে সহায়তা করা বাঁধা প্রদান নয়। তিনি বলেন, পুলিশ কোনো দলীয় নয়, সরকারেরও বাহিনী নয়, পুলিশ রাষ্ট্রের বাহিনী। তারা সরকারের যেমন নিরাপত্তা দেবে তেমনি আমরা যারা সাধারণ নাগরিক আমাদেরও নিরাপত্তা এবং আইনের সুযোগ সুবিধা দেবে পুলিশ। তাই আমি পুলিশের প্রতি আহবান জানাব নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করুন। তিনি বলেন, গণগ্রেপ্তার হচ্ছে। জেলখানা কিভাবে ভর্তি হয়ে গেছে আমরা পরিসংখ্যান দেবো। সেখানে লোক রাখারও জায়গা নেই। অনেককে ছেড়ে দিয়ে নেতাকর্মীদের রাখা হচ্ছে। এটা তো সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ হতে পারে না। সরকারি দলের প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন তাদের প্রটোকলসহ সার্বিক সহযোগিতা করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিরোধী দলের প্রার্থীদের প্রচারনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
ড. কামাল হোসেন বিএনপি নেতা ও প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরীকে যেভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে তার আলোকচিত্র সাংবাদিকদের দেখান।
এই সংবাদ সম্মেলনে সদ্য দলে যোগ দেয়া আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে অর্থনীতিবিদ ড. রেজা কিবরিয়া, সেনা বাহিনীর কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন উপস্থিত ছিলেন।
২০০১ সালের নির্বাচনে কুড়িগ্রাম- ২ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য প্রার্থী আমসা আমিন বলেন, আমি আওয়ামী লীগে ছিলাম জেলা পরিষদেরও দায়িত্ব পালন করেছি। একটা পর্যায়ে আমি সরে আসতে বাধ্য হই, সরে এসছি। আমি মনে করি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যে প্লাটফর্ম দাঁড়িয়েছে, এই প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে আমি কাজ করতে পারব। এই নেতৃত্বের জন্য আমি গর্বিত।
আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, সবাই যদি শক্তভাবে না দাঁড়ায় তাহলে দেশে যে অবস্থা হতে যাচ্ছে এটা আমার কাছে মারাত্মক মনে হচ্ছে। এটা পুনরুদ্ধার করতে অনেক সময় লাগবে। এখনই সময় প্রতিরোধ করার। সবাইকে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এর প্রতিরোধ করতে হবে। আমরা দেশের ভবিষ্যৎ, কী রকম বাংলাদেশ চাই, সেই ধরনের বাংলাদেশের জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বের প্রতি আমি গর্বিত। আমার ড. কামাল হোসেনের সাথে সম্পর্ক অনেক পুরনো। আমি যখন অক্সফোর্ডে পড়াশুনা করতাম তখন উনি সেখানে অধ্যাপনা করতেন।
ড. রেজা বলেন, গণমাধ্যমের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। তবে এখন নিষেধাজ্ঞা আছে, কালো আইন আইসিটি আছে এই সত্তে¡ও দেশের যে আসল অবস্থা গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা তুলে ধরেছেন এবং দেশ-বিদেশের সব বাঙ্গালীরা জানে এই দেশের শাসন ব্যবস্থা যেভাবে পরিণত হয়েছে সাড়ে ৯ বছরে। এটার সাথে আমাদের স্বাধীনতার চেতনা বা আদর্শের সম্পর্ক খুবই কম। আমি এখন গণফোরামের সদস্য। এর মাধ্যমে আমি আমার এওলাকার মানুষের এবং দেশের সেবা করতে চাই। আশা করি আমি সে সুযোগ এবার পাব।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খান, জগলুল হায়দার আফ্রিক, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মোহাম্মদ মনসুরসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।