Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রামে আসন বণ্টনে টেনশন

আ.লীগের মাথাব্যথা জনসংহতি-ইউপিডিএফ প্রার্থীরা ছুটছেন শীর্ষ নেতাদের দ্বারে

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

নির্বাচনী লড়াইয়ের আগে মনোনয়নের জন্যই চূড়ান্ত লড়াই এখন। সম্ভাব্য প্রার্থী বা মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ঘুম হারাম করে দিয়েছে এই একটি টেনশন- কপাল খুলবে কার, পুড়বে কার! তদুপরি জোট-মহাজোটের সাথে আসন ভাগাভাগির হিসাব-নিকাশ। বন্দরনগরীর তিনটি আসনসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের ১৬টি এবং তিনটি পার্বত্য জেলার তিন আসন মিলিয়ে এ অঞ্চলে একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনী আসন সংখ্যা ১৯টি।
এরমধ্যে সবক’টি আসনে না হলেও গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি আসনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট এবং বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে আসন ভাগাভাগির হিসাবের অঙ্ক মেলাতে হচ্ছে। মহানগরী ও চট্টগ্রাম জেলায় ভাগাভাগির প্রশ্ন জড়িত রয়েছে এমন আসনগুলোতে জোট এবং মহাজোটের মনোনয়ন প্রার্থীরা পড়েছেন প্রচন্ড টেনশনে। নিজ নিজ দল ও জোটগত মনোনয়ন নিশ্চিত করতে তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের দুয়ারে ঘন ঘন ধরণা দিয়ে যাচ্ছেন।
কেননা একেতো আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করার জটিল হিসাব-নিকাশ, তদুপরি জোটগত ভাগাভাগির জন্য আসতে হচ্ছে নিজেদের মধ্যকার সমঝোতা বা সমাধানে। ভোটযুদ্ধের জন্য একক প্রার্থিতা চ‚ড়ান্ত করা এবং জনসমর্থনের আশায় এলাকাবাসীর কাছে যাওয়ার জন্য হাতে পর্যাপ্ত সময় দরকার। ভোটের লড়াইয়ে সময়ের সদ্ব্যবহার করতে চান সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
এদিকে তিনটি পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির তিনটি আসনে দুই প্রধান প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি জোটগত নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে যাচ্ছে। তবে পাহাড়ের তিনটি আসনে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এবং ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হচ্ছে। দুই বিপরীত মেরুতে অবস্থানকারী এই দু’টি পাহাড়ি আঞ্চলিক সংগঠনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতার প্রশ্নটি আওয়ামী লীগের জন্য বড় ধরনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জনসংহতি এবং ইউপিডিএফ’র উল্লেখযোগ্য ভোট ব্যাংক আওয়ামী লীগের। বিশেষ করে পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এবং খাগড়াছড়িতে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) বেশ সংগঠিত। উভয় সংগঠন চলতি ২০১৮ সালে বিভিন্ন সশস্ত্র সহিংস ঘটনায় পাহাড়ে শক্তি প্রদর্শন করেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে পাহাড়ে ভোট রাজনীতি নিয়ে বাঙালি-উপজাতি জনসাধারণের মাঝে চলছে নানামুখী হিসাব-নিকাশ।
চট্টগ্রাম মহানগরী ও জেলায় আওয়ামী লীগের সাথে মহাজোটের শরিকদের মধ্যকার আসন ভাগাভাগির বিষয়টি নিয়ে দলে আর জোটে চলছে প্রবল আলোচনা এবং দর কষাকষি। বন্দরনগরীর তিনটিসহ চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে ৬টিই ভাগে পেতে চায় এরশাদের জাতীয় পার্টিসহ মহাজোটের ছোট শরিকেরা। এ অবস্থায় মহাজোটের একক প্রার্থিতা নির্ধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে।
মহানগরীর চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া), চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) ও চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে জাতীয় পার্টি, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনটিতে তরিকত ফেডারেশন, চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে ইসলামী ঐক্যজোট একাংশ, চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে জাসদের একাংশ মহাজোটের প্রার্থিতা নিশ্চিত করার প্রশ্নে অনড় অবস্থানে রয়েছে। আবার এসব আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী বা মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও অনড় রয়েছেন।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে আসন ভাগাভাগি প্রশ্নে বিএনপির সাথে ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক কয়েকটি দলের দর কষাকষির চাপ কমে আসছে। বর্তমানে চট্টগ্রামের ১৬ আসনের মধ্যে ৪টি নিয়ে চলছে হিসাব-নিকাশ। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসনে এলডিপি, চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) স্বতন্ত্র পরিচয়ে জামায়াতে ইসলামী এবং চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে ইসলামী ঐক্যজোট একাংশ। তবে এসব আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও তৎপর আছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ