পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দেয়ার পরপরই বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঙ্গা ভাব ফিরে এসেছে। হামলা, মামলা, গ্রেফতারের পরও গুটিয়ে থাকা নেতাকর্মীরা যেন খোলস ছেড়ে বের হয়েছেন। মনোনয়ন ফরম উত্তোলন, জমা ও প্রার্থীতা পেতে সাক্ষাতকার প্রদানের সময় দেখা মিলেছে তেমন চিত্রই। ব্যান্ড পার্টি, হাতি, মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা, মিছিলের মাধ্যমে শত শত নেতাকর্মী, সমর্থক নিয়ে নয়াপল্টন ও গুলশানে উপস্থিত হয়েছিলেন তারা। মনোনয়ন ফরম উত্তোলন ও জমা দেয়ার পাঁচ দিন এবং সাক্ষাতকার প্রদানের চার দিন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়মুখী ছিল নেতাকর্মীদের স্রোত। সকাল থেকে রাতভর সরব উপস্থিতি ছিল তাদের। গুলশান কার্যালয়ে আসতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও উচ্ছ¡সিত নেতাকর্মীদের বাধ সাধতে পারেনি কোন কিছুই। যেন নির্বাচনে ঘিরে উজ্জীবিত বিএনপি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের লক্ষ্যে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষ হয়েছে গত বুধবার। মনোনয়ন ফরম তোলা ৪ হাজার ৫৮০ জন প্রার্থীর মধ্যে সাক্ষাতকার নেয়া হয়েছে ২ হাজার ৫৮৬ জনের। সাক্ষাতকার নেয়া শেষ হলেও এখনই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করছে না দলটি। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীর নাম ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে দলটির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের। সাক্ষাতকার অনুষ্ঠানে দলের মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সকলকেই দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে, দলের মনোনীত প্রার্থীর সাথে কাজ করতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
এসব নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে- মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নির্বাচনের মাঠ না ছাড়তে এবং দল থেকে মনোনীত প্রার্থীর হয়ে কাজ করার জন্য বার্তা দিয়েছে দল। এ ছাড়া কেউ যেন দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না নেন, সে বিষয়েও সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্বাচনকে আন্দোলনের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে দলের সব সিদ্ধান্ত মেনে নিতে এবং শেষ পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ থাকতে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নির্দেশনা দেন।
বিএনপির একাধিক নেতার সাথে আলাপকালে জানা গেছে, এবারের সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়টি অনেক আগে থেকে ঠিক করে রাখা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপি নির্বাচনে যাবে, এটাও বেশ আগের সিদ্ধান্ত। প্রায় এক দশক ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়, এ কারণেই জনপ্রিয়, কর্মঠ ও পরীক্ষিত নেতাদেরই মনোনয়ন দেবে বিএনপি। এ ছাড়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিশ দলীয় জোটের নেতাদের সাথে আসন ভাগাভাগির বিষয়টি নিশ্চিত করার পর বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে দলের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে। এ কারণেই মনোনয়ন প্রত্যাশীদেরকে আরো পক্ষকাল অপেক্ষা করতে হবে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারে বিএনপি। বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষ হলো। এখন চ‚ড়ান্ত মনোনয়ন পেতে অপেক্ষা করতে হবে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা ও দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। এখন প্রার্থী চ‚ড়ান্ত করবেন তিনি ও দলের হাইকমান্ড।
দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সাক্ষাতকার গ্রহণ শেষ হয়েছে। দল চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণায় একটু সময় নেবে। দল যাবে মনোনয়ন দেবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা মেনে তার পক্ষেই কাজ করবে।
দলীয় সূত্র জানায়, একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে দলটি। এজন্যই প্রার্থী চূড়ান্ত করতে সতর্কভাবে এগুচ্ছে বিএনপির হাইকমান্ড। বিশেষ করে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপি। যোগ্য ও ত্যাগী এবং দক্ষ নেতাদেরকেই দলের মনোনয়নপত্র তুলে দিতে চায় দলটি। প্রার্থী বাছাই ফাইনাল করা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের জটিলতা এড়াতে প্রতি আসনে দুই থেকে তিনজন মনোনয়ন প্রত্যাশী রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। এরপর দল যাকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিবেন তিনি ছাড়া অন্যরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন।
তৃণমূলকে ৫ নির্দেশনা: আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি ও ধানের শীষের প্রার্থী হতে আগ্রহীদের সাক্ষাতকার অনুষ্ঠানে ৫টি বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন দলের মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মাঠে শেষ পর্যন্ত অবস্থান করা: ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো এবার আওয়ামী লীগকে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছে বিএনপির হাই কমান্ড। এজন্য শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকতে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। খুলনা থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল বলেন, আমরা নির্বাচনে গেছি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার আন্দোলন হিসেবে। হাই-কমান্ড থেকে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগকে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেয়া যাবে না। যে কোনো মূল্যে নির্বাচনের মাঠে থাকতে হবে।
ভোট কেন্দ্র পাহারা: বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট বলছেন, এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। জনমত ধানের শীষের পক্ষে। সুতরাং ভোটের দিন হাল ছাড়া যাবে না। যে কোনো মূল্যে ভোট কেন্দ্র পাহারা দিতে হবে।
ধানের শীষের পক্ষে অবস্থান: নির্বাচনে প্রার্থী অনেক হলেও মনোনয়ন একজনই পাবেন। সেজন্য দল যাকে মনোনীত করবে, তার পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করার নির্দেশনা দিচ্ছে। হোক তিনি বিএনপি কিংবা জোটের প্রার্থী, সবাই তাকে জয়ী করার জন্য কাজ করতে হবে।
বিদ্রোহী হলে কঠোর ব্যবস্থা: দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা জানিয়ে দিয়েছেন। দল বা জোট যাকে যেখানে মনোনয়ন দেবে, তার হয়ে অন্যদের কাজ করতে
নির্দেশনা মেনে মনোনয়ন প্রত্যাহার: ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন প্রত্যাশীদের দলীয় প্যাডে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলম স্বাক্ষরিত প্রত্যয়ন দেয়া হচ্ছে। মনোনয়ন বোর্ডের সাক্ষাৎকারেই এটি দেয়া হচ্ছে, যাতে নির্বাচন কমিশন থেকে তারা মনোয়ন ফরম তুলতে ও জমা দিতে পারেন। পাশাপাশি লিখিত অঙ্গিকার নেয়া হচ্ছে, দল বলা মাত্র মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে হবে।
বিএনপির মনোনয়ন পেতে আগ্রহীদের সাক্ষাতকার শুরু হয় গত ১৮ নভেম্বর। চারদিনে মোট ২ হাজার ৫৮৬ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী সাক্ষাৎকার দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।