নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : কাজী মোঃ সালাউদ্দিন। বাংলাদেশ ফুটবলের উজ্জ্বল এক নক্ষত্রের নাম। খেলোয়াড় হিসেবে যেমন ছিলেন তুখোড়, ঠিক তেমনি সংগঠক হিসেবেও সফল। যদি তাই না হতেন তবে তৃতীয়বার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি নির্বাচিত হতেন না। সদ্য সমাপ্ত বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি পদে বিশাল জয়ের পর এখন ফুলেল শুভেচ্ছায় ভাসছেন সালাউদ্দিন। তার কন্ঠে দৃঢ়তা,‘এবার কঠোর হবো।’ ৩০ এপ্রিল নির্বাচন জয়লাভের পর গতকালই সালাউদ্দিন প্রথম আসলেন বাফুফে ভবনে। মুখোমুখী হলেন মিডিয়ার। তবে এর আগে তিনি কাল সকালে বাফুফের নব-নির্বাচিত কার্য-নির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে গেলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসায় জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর গেলেন বনানী গোরস্থানে। সেখানে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেলসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের অন্য সদস্যদের মাজার জিয়ারত করতে। এরপর দুপুরে সালাউদ্দিন আসেন বাফুফে ভবনে। কথা বলেন মিডিয়াকর্মীদের সঙ্গে। সালাউদ্দিন বলেন,‘তৃতীয় মেয়াদে বাফুফে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেলো। আগামী চার বছর আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বাফুফেতে এমন একটা ভিত্তি রেখে যেতে চাই, যাতে আগামীতে যারা ফুটবলের দায়িত্ব নেবে তাদের কাজ অনেক সহজ করে দেয়। এবার আমি নিয়ম-শৃঙ্খলাসহ সব ব্যাপারেই অনেক কঠোর থাকবো। দিন শেষে যেহেতু সব দায়-দায়িত্ব আমাকেই নিতে হয়, তাই প্রতিটি সাব-কমিটিতে যোগ্য লোক আছে কিনা তা যাচাই-বাছাই করবো নিজেই। আগেরবার সাব-কমিটিগুলোর চেয়ারম্যান বানিয়ে তাদের উপর দায়িত্ব দিয়েছিলাম কমিটি বানাতে। কিন্তু এবার তা করবো না। নিজেই পুরো কমিটি বানাবো। কেউ কাজে ব্যর্থ হলে তাদের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন করা হবে। এবার রিলাক্স করার সুযোগ থাকবে না। এটা আমার শেষ টার্ম, তাই আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে কাজ করব।’
সালাউদ্দিন আরো বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার ছিলো ২৫ দফা। সবগুলো নিয়েই কাজ করবো। তবে কিছু বিষয়ে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমি ব্যাক্তিগতভাবে এবার তিনিটি বিষয়কে বেশী প্রাধান্য দেবো। যার একটি জেলা পর্যায়ে ফুটবলের উন্নয়ন করা। এটি নিয়ে ব্যাপকভাবে কাজ করতে চাই। অন্যটি হচ্ছে, ক্লাবগুলোকে আধুনিক ফুটবলের ধারায় আনা। আর তৃতীয়টি হলো জাতীয় দল নিয়ে ব্যাপকভাবে কাজ করা। আমার আশা জাতীয় দল এবার প্রত্যাশিত সাফল্য বয়ে আনবে। তবে এর মানে এই নয় যে একাডেমি, মহিলা ফুটবল আর স্কুল ফুটবল ও অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে কাজ হবে না। সব বিষয় নিয়েই কাজ করবে আমার কমিটি।’
পরপর দু’টি আন্তর্জাতিক শিরোপা জয়ী বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৪ বালিকা ফুটবল দলের সাফল্য প্রসঙ্গে বাফুফে সভাপতি বলেন,‘ আসলে এটি বিগত বছরগুলোতে মেয়েদের নিয়ে আমাদের কাজের ফসল। সীমিত সামর্থ্যরে মধ্যে তাদের আমরা ফুটবলে রাখতে চেয়েছি এবং পেরেছি।’
দেশের ফুটবল উন্নয়ন সহজ কাজ নয় বলে উল্লেখ করেন কাজী সালাউদ্দিন। এ প্রসঙ্গে তার কথা, ‘বিশ্বের ২০৯ টি দেশ ফুটবল খেলে। এর মধ্যে ২০৪ টি দেশ ফুটবল খেলে আর উন্নতির চেষ্টা করে। আমরাও চেষ্টা করি। ফুটবল উন্নয়নে আমরা কাজ করছি। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের ফুটবল আরও অনেকদূর এগিয়ে যাবে।’
জাতীয় দল নিয়ে সালাউদ্দিন বলেন, ‘শক্তিশালী জাতীয় দল গঠনের জন্য বিদেশি কোচ নিয়ে এখন চিন্তা-ভাবনা শুরু করবো। নির্বাচনের কারণে এ কয়দিন তা পারিনি। নির্বাচনের আগে যে পরিস্থিতি হয়েছিল তাতে আবার সভাপতি হবো কিনা তার কোনও নিশ্চয়তাও ছিল না। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ সহায় ছিলেন বলে তৃতীয়বার নির্বাচিত হলাম। আমার ইচ্ছা নতুন করে ঢেলে সাজাবো জাতীয় দলের সবকিছু। নতুন কিছু পরিকল্পনাও আছে।’
এবার জেলা ফুটবলের দিকে বেশি নজর দেবেন সালাউদ্দিন। এ নিয়ে বাংলাদেশের কিংবদন্তী ফুটবলার বলেন, ‘আমি মনে করি না আমাদের বিগত মেয়াদেও জেলা ফুটবলকে উপেক্ষা করা হয়েছে। প্রায় ৪৭টি জেলায় লীগ হয়েছে। তবে আমাদের আরেকটু বেশি উদ্যোগী হতে হবে।’
সালাউদ্দিন যোগ করেন, ‘আমি দেখতে চাই আগামী চার বছরের মধ্যে বাংলাদেশ এশিয়ার সর্বোচ্চ লেভেলে ফুটবল খেলছে। আমার ইচ্ছা জাতীয় দলকে এশিয়ান কাপ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া। সে লক্ষ্যে নিরলস কাজ করবে আমার কমিটি। আগের চেয়ে আরো বেশী জবাবদিহীতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে কাজ করলে সাফল্য আসবেই।’ এ সময় নির্বাচনে সহযোগীতা করার জন্য মিডিয়াসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানান কাজী সালাউদ্দিন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।