পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আর মাত্র কয়দিন। নৌকার মাঝি হয়ে যারা একাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করবেন তাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ২০ থেকে ২২ নভেম্বরের মধ্যে প্রকাশ করা হবে এ তালিকা। ৩০০ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা চার হাজার ২৩ জন। এর মধ্যে চূড়ান্ত তালিকায় নিজের নাম থাকবে কিনা তা নিয়ে হাইপারটেনশনে রয়েছে প্রার্থীরা।
মাত্র কয়েকদিনের ব্যাপার হলেও টেনশনে ঘুম হচ্ছে না আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের। কারণ দলের ইতিহাস থেকে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের আগ থেকে এ পর্যন্ত একটি নির্বাচন থেকে আরেকটি জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকা থেকে এমপিসহ ৫০ থেকে ৭০ জন দলের মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েছেন। এ হিসেবে এবারও কমপক্ষে ৫০ থেকে ৭০ জন দলের মনোনয়ন পাবেন না যারা গত নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। এর মধ্যে বর্তমান এমপির সংখ্যা প্রায় ৫০ জন হতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এজন্য যারা এমপি তারা কি আবারও দলের মনোনয়ন পাবেন কিনা? বা বিতর্কিত কিংবা প্রবীণ নেতা হিসেবে মনোনয়ন থেকে বাদ পড়ছেন কিনা? দীর্ঘদিন ধরে যারা দলের হাল ধরে রেখেছেন, প্রচারণা চালিয়েছেন, কোটি কোটি টাকা নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন সময় খরচ করে নিজের মাঠ শক্ত-মজবুত করেছেন, তারা মনোনয়ন পাবেন কিনা এ নিয়ে হাইপার টেনশনে রয়েছেন। ঠিক মতো রাতের ঘুমও হচ্ছে না তাদের। বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করছেন এবার দলের টিকেট পাচ্ছেন কিনা। দলের নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটু আশ্বস্ত হবার চেষ্টা করছেন। এছাড়া গণভবনের বিভিন্ন কর্মকর্তা, কর্মচারী, পিয়ন, কেন্দ্রীয় অফিসের ছোট-খাট নেতা, পিয়নদের কাছ থেকে খবর নেয়ার চেষ্টা করছেন তালিকাতে তার নাম আছে কিনা।
সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে ৩০০ আসনের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা তা মনোনয়ন বোর্ডের সামনেও এখন পর্যন্ত প্রকাশ করেননি। বৃহস্পতিবার দলের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় তিন’শ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সম্পর্কে জরিপের বিস্তারিত রিপোর্ট বোর্ড সদস্যদের হাতে তুলে দিয়েছেন স্টাডি করার জন্য। প্রার্থীদের বিষয়টি অনুমোদন হতে কমপক্ষে আরো দুটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ হিসেবে ২০ থেকে ২২ নভেম্বর তালিকা প্রকাশ হতে পারে। আর শরিকদের বিষয়ে সবকিছু নির্ধারিত হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের আসন বণ্টন নিয়ে ফায়সালা হতে পারে ২৫ নভেম্বর। তাদের ৭০টি আসন ছেড়ে দিয়ে বাকি ২৩০টি আসন নিজেদের জন্য রাখবে আওয়ামী লীগ। এই ৭০টি আসনে আওয়ামী লীগের অনেক প্রার্থীর নিশ্চিতভাবে কপাল পুড়ছে বলে আগাম টেনশনে আছেন তারা।
এদিকে শতাধিক প্রার্থীর টেনশন দলের মনোনয়ন পেলেও হয়তো তা শরিক প্রার্থীদের জন্য ছেড়ে দেয়া লাগতে পারে। তাই জোর লবিং চালাচ্ছেন তাদের সেই আসনটিতে যেন শরিকদের ছাড় দেয়া না হয়। এ জন্য বিভিন্নভাবে মেসেজ দেয়ার চেষ্টা করছেন যে, শরিক কাউকে জোটের মনোনয়ন দিলে তারা পাস করতে পারবে না কারণ তাদের অবস্থান নেই এবং দলের কর্মীরা তাদের জন্য কাজ করবে না।
এদিকে শত টেনশনের মধ্যেও কিছুটা আশাবাদি দলের তরুণ মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। কারণ মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তরুণদের বেশি মনোনয়ন দেয়া হবে, তাদের ভবিষ্যত গড়ার দায়িত্ব আমার। আর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভা মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান মনোনয়ন পাবেন না তাই ওইসব আসনের অন্য প্রার্থীরা অনেকটুকু স্বস্তিতে রয়েছে মনোনয়ন পাবার বিষয়ে। কারণ স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধিরা প্রত্যেক আসনেই মনোনয়নে শক্ত প্রতিদ্ব›দ্বী ছিল।
তাই নিজ নিজ এলাকাতে আলোড়ন সৃষ্টিকারী তরুণ প্রার্থী বেশ আশাবাদি। যেসব আসনের এমপিরা বার্ধক্যে ও নানা কাজে বিতর্কিত জোর প্রচারণা চালিয়েন তারা। কুমিল্লা-১ এ মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সালমা ইসলাম। নিজের টাকায় এলাকার স্কুল, কলেজ, মক্তব, মসজিদ, মাদরাসা, মন্দিরের উন্নয়নে কাজ করেছেন। ওয়ান ইলেভেনে শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনে রাজপথে ভূমিকা রেখেছেন। মনোনয়ন পাবার বিষয়ে আশাবাদি তিনি।
লক্ষীপুর-২ আসনে প্রচারণা চালাচ্ছেন কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল। ইতোমধ্যে কয়েক কোটি টাকা এলাকার উন্নয়নে খরচ করেছেন। প্রতিটি ইউনিয়নে দলের জন্য অফিস করে দিয়েছেন। তবে জাতীয় পার্টিকে আবারও ছাড় দেয়া হতে পারে বলে টেনশনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। এ নিয়ে স্থানীয় নেতারা অনেকদিন ধরে কেন্দ্রকে বার্তা দিতে চাচ্ছেন শরিকদের ছাড় দিলে কর্মীরা কাজ করবে না এবং ভোটও দেবে না।
চাঁদপুর-৩ আসনে দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মণি এমপি হলেও আলোচনায় রয়েছেন মৎসজীবি লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেদওয়ান খান বোরহান। তার শক্ত অবস্থানের কারণে টেনশনে অন্য প্রার্থীরা।
দলের মনোনয়ন পেতে আশাবাদি তরুণ প্রার্থী ময়মনসিংহ-৭ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী নুরুল আলম পাঠান মিলন। আওয়ামী লীগের গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর রিচার্স এন্ড ইনফরমেশনে দীর্ঘদিন কাজ করছেন তিনি। দলের এমপি মানবতাবিরোধী মামলায় জেলে থাকায় নিজ এলাকায় আলোচনার শীর্ষে তিনি। পিরোজপুর-১ আসনে সেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সাবেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ সাকিব বাদশা। বেশ আশাবাদি শরীয়তপুর-২ আসনের প্রার্থী দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম। কারণ বর্তমান এমপি কর্ণেল (অব.) শওকত আলী বার্ধক্যজনিত অসুস্থ। সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের প্রার্থী রাজধানীর বনানী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর মোশারফ হোসেন। আসনের বর্তমান এমপি বার্ধক্যের কারণে দলের মনোনয়ন সংগ্রহ করেননি, তার ছেলে মনোনয়ন চান। এ সুযোগে মাঠ গুছিয়ে নিয়েছেন। চট্টগ্রাম-১৫ থেকে ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ও আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, মাগুরা-১ এ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুজ্জামান শিখর, গাইবান্ধা-৫ থেকে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন, বাগেরহাট-৩ থেকে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ, রাজবাড়ি-২ এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সোহেল রানা টিপু মনোনয়ন পাবার বিষয়ে আশাবাদি।
এ বিষয়ে দলের মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ও সভাপতিমন্ডলীর সদস্য লে. কর্ণেল (অব.) ফারুক খান বলেন, প্রতিবারই মনোনয়নের তালিকায় ৫০ থেকে ৭০ জন পরিবর্তন হয়। নানা কারণে অনেকে বাদ। তাদের স্থানে মনোনয়নে তরুণদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়।
গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, দু-একদিনের মধ্যে দলের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত শেষ হবে। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।