Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

যমুনায় ‘চর’ পণ্য পরিবহনে সঙ্কট

সৈয়দ শামীম শিরাজী, সিরাজগঞ্জ থেকে : | প্রকাশের সময় : ১২ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের একমাত্র নৌবন্দর সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে মালামাল খালাসের জন্য জাহাজ কার্গোগুলোতে কুলি ভিড়তে পাচ্ছে না। ফলে মাঝ নদীতে মালামাল খালাস করায় খরচ বাড়ছে। বলাবাহুল্য উত্তর জনপদের এই অন্যতম নৌবন্দর দিয়েই ১৬ জেলায় সার, তেলসহ অন্যান্য মালামাল পরিবহন করা হয়ে থাকে। শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে, তাতে আসন্ন ইরি-বোরো মৌসুমে সার ডিজেল পেট্রোল পরিবহনে সমস্যা সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেগে ওঠা ডুবোচরে পেঁচাকোলা, মালদহপাড়ার বিভিন্ন স্থানে এবং বাঘাবাড়িগামী ও বাঘাবাড়ি থেকে ছেড়ে আসা পনেরোটি জাহাজ ডুবোচরে আটকে আছে। প্রতিদিন আটকে পড়া জাহাজের সংখ্যা বাড়ছে। গত তিনদিনে এসব জাহাজের মধ্যে এম ভি ফয়সাল-৮, ৮৫০ টন গম, এম ভি ইব্রাহিম খলিল ৬১০ টন সার, এম ভি ফয়সালে আরো দুইটি জাহাজ, এম ভি সুমাইয়া, এম ভি সুলতানা সানজারসহ কয়েকটি জাহাজ আটকা পড়ে আছে। এম ভি ফয়সাল-৮ এর মাস্টার জাহাঙ্গীর জানান, তারা চট্টগ্রাম থেকে গম নিয়ে বাঘাবাড়ি বন্দরে যাচ্ছিলেন। দুইদিন আগে তারা এই স্থানে ডুবোচরে আটকে যান। এখন লাইটার জাহাজে এসব পণ্য ধীরে ধীরে খালাস করে তারপর জাহাজ সরাতে হবে। এ নৌপথে জ্বালানি তেলবাহী ট্যাংকার, রাসায়নিক সার ও বিভিন্ন পণ্যবাহী কার্গো জাহাজ চলাচল করে। বাঘাবাড়ি বন্দর থেকে উত্তরাঞ্চলে চাহিদার ৯০ ভাগ জ্বালানি তেল ও রাসায়নিক সার সরবরাহ করা হয়। আবার বাঘাবাড়ি থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে চাল, গমসহ অন্যান্য পণ্যসামগ্রী পাঠানো হয়।

বিসিআইসি’র বাঘাবাড়ি ট্রানজিট বাফার গুদাম সূত্রে জানা গেছে, যমুনা নদীর নাব্য সঙ্কটে বাফার গুদামগুলোতে আপদকালীন সারের মজুদ গড়ে তোলার কাজ চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএ আরিচা অফিসের একটি সূত্রে জানা যায়, রাসায়নিক সার ও পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের জন্য ১০ থেকে ১১ ফুট পানির গভীরতা প্রয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমানে এ নৌপথে কোথাও কোথাও ৮ থেকে ৯ ফুট গভীরতা রয়েছে। আগামী দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে পানির স্তর কমে সাত-আট ফুট পর্যন্ত নেমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা।
বাঘাবাড়ি বন্দর থেকে দৌলতদিয়া পর্যন্ত মোহনগঞ্জ, নাকালিয়া, হরিরামপুর, পেঁচাকোলা, নগরবাড়িসহ প্রায় ডজনখানেক স্থানে জেগে উঠছে ডুবোচর। ফলে নাব্য সংকট ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যেই মোহনগঞ্জ, হরিরামপুর ও নাকালিয়া পয়েন্টে ডুবোচরে জাহাজ প্রায়ই আটকা পড়ছে। বাঘাবাড়ি নৌবন্দর কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএ এর ড্রেজিং বিভাগকে চিঠি দিয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে সিরাজগঞ্জের যমুনা সেতুর উভয় পাশে চর জেগে উঠায় সেখানে চলছে চাষাবাদ এবং গড়ে উঠছে বসতভিটা। শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে আসন্ন পুরো শুষ্ক মৌসুমে এ অবস্থা আরও ঘনীভ‚ত হবে বলে বিশেষজ্ঞরা তাদের আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পরিবহন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ