Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দাবদাহে পুড়ছে পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ভারতে সাড়ে তিন শ’ মানুষের মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক: মডারেট রেজল্যুশন ইমেজিং স্পেকট্রোরেডিওমিটার (এমোডিস) নামের কৃত্রিম উপগ্রহের ডেটা ব্যবহার করে তৈরি ছবিটি উন্মুক্ত করেছে নাসার আর্থ অবজারভেটরি টিম, যাতে গত ১৫ থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত এশিয়া অঞ্চলের ভূমির তাপমাত্রা দেখানো হয়েছে। হলুদ রং সবচেয়ে উষ্ণ তাপমাত্রা বোঝায়। তীব্র দাবদাহে পুড়ছে পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে যে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা এযাবৎকালের রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে। প্রাণঘাতী এ তাপপ্রবাহে ইতিমধ্যে ১৫০ জন মারা গেছে। থাইল্যান্ডে সাধারণত এপ্রিল মাসে তীব্র গরম পড়ে। গত ৬৫ বছরের মধ্যে দেশটিতে সবচেয়ে দীর্ঘ তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা দেশটির জন্য একটি রেকর্ড। গত ১২ এপ্রিল থাইল্যান্ডের সুখোথাইয়ে তাপমাত্রা ৪৪ দশমিক ৩ ডিগ্রিতে পৌঁছায়, যা দেশটির সর্বকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ডের কাছাকাছি। শুধু থাইল্যান্ড নয়, আশপাশের দেশগুলোতেও এপ্রিল তাপপ্রবাহের দিক থেকে অন্যান্য সব মাসের চেয়ে রেকর্ড করে ফেলেছে। কম্বোডিয়ার আবহাওয়াবিদ ক্রিস বার্ট বলেন, কম্বোডিয়া ও লাওসে এপ্রিলের তাপমাত্রা এ বছরের অন্য যেকোনো দিনের তুলনায় রেকর্ড গড়েছে। এপ্রিল মাস আবহাওয়ার দিক দিয়ে ভারতের জন্য নিদারুণ। বৃষ্টিবাদলের দেখা না মেলায় পুরোটা মাস দাবদাহের মধ্য দিয়ে কেটেছে। বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলে সাধারণত এক থেকে দুটি তাপপ্রবাহ বয়ে যায়, যা সর্বসাকুল্যে ছয় থেকে সাত দিন স্থায়ী হয়। এর আগে ১৯৯৫ সালে দেশের ১২টি জেলায় ঘুরেফিরে আট দিন দাবদাহ ছিল। এরপর ২০০৭ সালে সাতটি জেলায়, ১৯৯৯ ও ২০০৯ সালে ছয়টি জেলায় পাঁচ থেকে ছয় দিন দাবদাহ বয়ে গেছে। কিন্তু টানা ২৪ দিন দাবদাহ চলতে দেখা যায়নি। এবারের বৈশাখকে গত ৩০ বছরের মধ্যে বিশেষ ব্যতিক্রম হিসেবেই বলছেন আবহাওয়াবিদেরা। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সৃষ্ট এল নিনোর প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ভারতে তাপমাত্রা বেড়েছে। গবেষকেরা বলছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যেতে পারে। অপর এক খবরে বলা হয়, তীব্র তাপদাহে ভারতে গত তিনদিনে অন্তত সাড়ে তিনশ’ লোক মারা গেছেন। দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্র ও তেলেঙ্গানা রাজ্যে এই দাবদাহ ভয়াবহ আকার নিয়েছে। শুধু শনিবারেই এই দুই রাজ্যে অন্তত ১৩৫ জন মারা গেছেন। গত শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মানুষকে রোদে না-বেরোনোর পরামর্শও দিয়েছে সরকার। আবহাওয়া বিভাগ বলছে, গত দু-তিনদিনে স্বাধীনতা লাভের পর গত সত্তর বছরেও কোন কোন জায়গায় এত তাপমাত্রা লক্ষ্য করা যায়নি। শুধু তেলেঙ্গানার খাম্মাম জেলায় তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি। দিল্লির কাছে পালামে তাপমাত্রা এর মধ্যেই ৪৬ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেছে। এমনকী হিমালয়ের কোলে সাড়ে ছ’হাজার ফিট উচ্চতায় শৈলশহর মুসৌরিতেও পারদ ৩৬ ডিগ্রি ছুঁয়েছে, যা প্রায় গত সত্তর বছরের মধ্যে রেকর্ড। কিন্তু অবস্থা সবচেয়ে দুর্বিষহ অন্ধ্র ও তেলেঙ্গানায় যেখানে প্রচ- গরমে রোজ বহু লোক মারা যাচ্ছেন। পরিস্থিতি সামলাতে সরকার জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা নিচ্ছে, ক্ষতিপূরণও ঘোষণা করা হয়েছে নিহতদের জন্য।
অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গত তিনদিনে শুধু আমাদের রাজ্যেই গরমে শতাধিক মৃত্যুর খবর পেয়েছি, তবে এই সংখ্যা আরও বাড়বে। নিহতদের জন্য আমরা এক লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিচ্ছি, এবং মৃত্যুর সংখ্যা যত কম করা যায় সেটাই আমাদের লক্ষ্য। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে গ্রামীণ এলাকায় একশ’ দিন কাজের যে নিশ্চয়তা প্রকল্প আছে, তা কিন্তু এই গরমেও থেমে নেই। এই প্রকল্পে মাটি কোপানো বা রাস্তা বানানোর মতো অনেক কাজই করতে হয় ঠা ঠা রোদের মধ্যে আর তারপর অন্ধ্র ও তেলেঙ্গানাতে বেশ কয়েকজন শ্রমিক সানস্ট্রোকে মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই সব মৃত্যুর পর এখন দুই রাজ্যের সরকারই তাদের একশো দিন কাজের নিশ্চয়তা প্রকল্পে রদবদল করেছে যাতে শ্রমিকদের দুপুররোদে কাজ করতে না-হয়। বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দাবদাহে পুড়ছে পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ভারতে সাড়ে তিন শ’ মানুষের মৃত্যু
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ