শ্রীলংকার নতুন সরকার থেকে একজন উপমন্ত্রী পদত্যাগের পর দেশটির রাজনৈতিক সংকট আরো তীব্র হয়েছে। গত মাসে প্রেসিডেন্ট মৈত্রিপালা সিরিসেনা প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্গেকে বরখাস্ত করে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসাকে নিয়োগ দেয়ার পর থেকে দেশটিতে সংকট চলছে।
রাজাপাকসা পার্লামেন্টে নিজের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের আগ পর্যন্ত তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মানা হবে না বলে পার্লামেন্টের স্পিকার কারু জয়সুরিয়া ঘোষণা দেয়ার একদিন পর শ্রম ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপমন্ত্রী মানুষা নানায়াকারা পদত্যাগ করেন। তার পদত্যাগ পার্লামেন্টে রাজাপাকসার সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণকে কঠিক করে তুলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ক্ষমতাচ্যুত হলেও বিক্রমসিঙ্গে তার সরকারি বাসভবনেই অবস্থান করছেন এবং নিজেকে দেশের বৈধ নেতা হিসেবে দাবি করছেন।
রাজাপাকসা ও বিক্রমসিঙ্গে দুজনেই পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে বলে দাবি করছেন। ১৯ দিন স্থগিত থাকার পর আগামী বুধবার অধিবেশন বসলে ২২৫ আসনের পার্লামেন্টে দু’জনকেই শক্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হবে।
গত সপ্তাহে এক সাক্ষাতকারে বিক্রমসিঙ্গে দাবি করেন যে রাজাপাকসার দল এমপিদের কিনে নেয়ার চেষ্টা করছে বলে তার কাছে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে। তবে রাজাপাকসা দলের এমপি’রা এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। বিক্রমসিঙ্গের দল ইউপিএফ থেকে সাত এমপি ইতোমধ্যে রাজাপাকসার পক্ষে যোগ দিয়েছে। তামিল দল তামিল ন্যাশনাল এলায়েন্সের একজন এমপি রাজাপাকসার দলে যোগ দেয়ার পর দলটি ঘোষণা করে যে তারা অনাস্থা প্রস্তাবে রাজাপাকসার বিরুদ্ধে ভোট দেবে। তামিল দলটির ১৫টি ভোট বিক্রমসিঙ্গের পক্ষে গেলে তা রায় নির্ধারণকারী হতে পারে।
এদিকে, গত মঙ্গলবার শত শত বৌদ্ধ ভিক্ষু কলম্বোতে বিক্রমসিঙ্গের সমর্থনে বিক্ষোভ করে। তারা রাজনৈতিক সংকটের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠা করতে সিরিসেনার প্রতি আহ্বান জানায়।
সিরিসেনা দাবি করছেন যে তাকে হত্যা ষড়যন্ত্রের পেছনে বিক্রমসিঙ্গে ও মন্ত্রিসভায় তার দলের সদস্যের হাত থাকায় বিক্রমসিঙ্গেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিযোগের বিস্তারিতও প্রকাশ করা হয়নি এবং বিক্রমসিঙ্গে বারবার অভিযোগটি অস্বীকার করে আসছেন। সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।