নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী : ক্রিকেট বিশ্বে সবচেয়ে ধনাঢ্য বোর্ডের স্বীকৃতি অনেক আগেই পেয়ে গেছে বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)। আশ্চর্য হলেও সত্য, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এই বোর্ডের আগেই কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কেন্দ্রিয় চুক্তির আওতায় এনে ক্রিকেটারদের বেতন ভাতা প্রবর্তন করেছে। ২০০১ সালে কেন্দ্রিয় চুক্তির আওতায় ক্রিকেটারদের এনে জ্যামিতিক হারে ক্রিকেটারদের বেতন বর্ধিত করেছে বিসিবি। ২০০১ সালে বুলবুল, আকরাম, দুর্জয়দের মাসিক বেতনের অংক যেখানে ছিল ৩৩ হাজার টাকা, ১৫ বছরের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় ক্রিকেটারদের বেতন সেখানে বেড়েছে ৯ গুণ। শুধু বেতন খাত থেকেই মুশফিকুরের আয় এখন স্পর্শ করেছে মাসে ৩ লাখ টাকা! তামীম, সাকিবের অংক সেখানে ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা, মাশরাফির ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা, মাহামুদুল্লাহ’র বেতন দাঁড়াচ্ছে মাসে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
শুধু শীর্ষ এই ৫ ক্রিকেটারের বেতনই নয়, গত ১৫ বছরে কেন্দ্রিয় চুক্তির সকল গ্রেডে বেতনের অংক বেড়েছে হু হু করে। ২০০১ সালে ‘বি’ গ্রেডের যে ক্রিকেটার মাসে ২২ হাজার টাকা বেতন পেতেন, এখন সেই গ্রেডের ক্রিকেটার নাসির, ইমরুল পাচ্ছেন ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে। ‘সি’ গ্রেডের বেতন গত ১৫ বছরে ১৫ হাজার টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার টাকা। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এ তথ্য।
বেতন বৃদ্ধির পরিমাণটা গত তিন বছরে পূর্বের সকল অনুপাতকে গেছে ছাড়িয়ে। অর্থ সংকটে এক বছর (২০০৩ সাল) কম বেতন নিয়ে সন্তুস্ট থাকতে হয়েছে ক্রিকেটারদের। এমন ঘটনাও আছে বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে। আবার এক সময়ে বছরে ১০ শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধিকে যেখানে যথেষ্ট মনে করতো ক্রিকেটাররা, সেখানে বছর প্রতি ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেতন বেড়েছে গত তিন বছরে। ক’ বছর আগেও ক্রিকেটারদের চেয়ে নির্বাচকদের বেতনের অংক ছিল বেশি। স্থানীয় কম্পিউটার এনালিস্টের বেতনের অংকও ছাড়িয়ে গিয়েছিল কেন্দ্রিয় চুক্তিতে থাকা শীর্ষস্থানীয় ক্রিকেটারের বেতনকে। এখন সেখানে প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদের মাসিক বেতন (১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা) ‘কেন্দ্রিয় চুক্তিতে থাকা ‘বি’ গ্রেডের ক্রিকেটারদের বেতনের (১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) চেয়েও কম! অন্য ২ নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু এবং হাবিবুল বাশার সুমনের বেতন (১ লাখ ১৫ হাজার টাকা) বর্তমানে ‘সি’ গ্রেডের ক্রিকেটারদের বেতনের (১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা) কাছাকাছি।
বিসিবি’র আয় বেড়েছে, বেড়েছে ক্রিকেটারদের বেতন। গত বছরের চেয়ে ক্রিকেটারদের বেতন ২৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত বছরে যেখানে ১৪ ক্রিকেটারের বার্ষিক বেতন খাতে বিসিবিকে গুনতে হয়েছে ২ কোটি ২৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা, সেখানে এ বছর ৪ গ্রেডে চুক্তিবদ্ধ ১৪ ক্রিকেটারের পেছনে গুণতে হবে বিসিবিকে ২ কোটি ৭৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
ভাগ্যটা ভাল মাহামুদুল্লাহ’র। গত বছর যেখানে ৬৮ পয়েন্ট কম থাকায় ‘ এ’ প্লাস গ্রেডে বেতনভুক্ত হননি এই মিডল অর্ডার, মাসে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা বেতনে থাকতে হয়েছে সন্তুষ্ট। ২০১৫ বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফরমেন্সে সেই মাহামুদুল্লাহ’র বেতন এ বছর বেড়েছে মাসে ৮০ হাজার টাকা ! বেতন বৃদ্ধিতে এটাই রেকর্ড এবার। সাকিব, তামীমের বেতন সেখানে বেড়েছে মাসে ৭০ হাজার টাকা, টেস্ট খেলছেন না বলে বর্ধিত বেতনের অংকটা সেখানে একটু কম মাশরাফিরÑ বেড়েছে বেতন তার ৬৫ হাজার টাকা। টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-২০ ম্যাচের উপর গ্রেডিং পয়েন্ট নির্ধারন করে ধার্য করা হয়েছে ক্রিকেটারদের বেতন। যেখানে সর্বাধিক ৯৯৪ পয়েন্ট এর কারনে মাসে ৩০ হাজার টাকা বোনাস পাচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। টেস্ট ক্যাপ্টেনসির জন্য বাড়তি ২০ হাজার টাকা বোনাস যুক্ত হয়েছে তার বেতনের সঙ্গে। ‘এ’ প্লাস গ্রেডের বেতন ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারিত হয়েও তাই বাড়তি ৫০ হাজার টাকা মাসে পাচ্ছেন তিনি। ৯২৭ পয়েন্ট এবং টেস্টে সহ-অধিনায়কত্ব করায় তামীমের বোনাসের অংক সেখানে ৪০ হাজার টাকা, ৯০৩ পয়েন্টের সঙ্গে ওয়ানডের সহ-অধিনায়ক সাকিবের বোনাসের পরিমানও একই। টেস্ট না খেলায় বোনাসের অংক ১৫ হাজারে সন্তুস্ট থাকতে হচ্ছে মাশরাফিকে, তবে ওয়ানডে এবং টি-২০’র ক্যাপ্টেনসিতে ২০ হাজার টাকা ভাতা যুক্ত হচ্ছে তার বেতনের সঙ্গে।
নুতন চুক্তিতে রুকি গ্রেড না রাখায় লাভ হয়েছে মুস্তাফিজুরের। মাত্র ৮ মাসের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ২ টেস্ট,৯ ওয়ানডে এবং ৫ টি-২০ ম্যাচের অভিজ্ঞতায় রুকি চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা তার। ২০০১ সাল থেকে প্রবর্তিত ক্রিকেটারদের বেতন কাঠামোয় নুতন ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে রুকি গ্রেডটাই ছিল নিয়ম। মুস্তাফিজুরের অনন্য প্রতিভায় সেই নিয়ম ভেঙ্গেছে বিসিবি। সরাসরি তাকে ‘সি’ গ্রেডে বেতনের আওতায় আনা হয়েছে। প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে আইকন গ্রেডের ক্রিকেটার সাব্বির রহমান রুম্মান, কিংবা তাইজুল, আল আমিন, সৌম্য, আরাফাত সানিদের মতো মাসে তার বেতন ৭৫ হাজার টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।