বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
রাজবাড়ীতে তিনটি রেল পথের ৮৮ টি রেলক্রসিংয়ের মধ্যে বেরিয়ার ও গেটম্যান রয়েছে শুধুমাত্র ২০টিতে। অন্তত ৬৮টি রেলক্রসিংয়ে কোনো বেরিয়ার ও গেটম্যান নেই। ফলে প্রায়ই দুঘর্টনার শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। দিন দিন বেড়েই চলেছে মৃত্যুর মিছিল। চলতি মাসের ১৯ তারিখে কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া রেলপথের জামালপুর ইউনিয়নের শোলাকুড়া রেলক্রসিংয়ে তিনজন নিহত হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজবাড়ীর সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রাজবাড়ীতে মোট রেলপথ ৮৮কিলোমিটার। এরমধ্যে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট থেকে মাছপাড়া পর্যন্ত ৫৩ কিলোমিটার, পাঁচুরিয়া থেকে বসন্তপুর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার এবং কালুখালী থেকে নলিয়াগ্রাম পর্যন্ত রেলপথের পরিমান ২৫ কিলোমিটার। এসব রেলপথে তিন ধরনের ক্রসিং রয়েছে। প্রথমত, ক্রসিংয়ে বেরিয়ার ও গেটম্যান রয়েছে, বেরিয়ার নেই কিন্তু গেটম্যান রয়েছে এবং বেরিয়ার গেটম্যান কোনোটাই নেই। যেসব গেটে বেরিয়ার ও গেটম্যান কোনোটাই নেই সেখানে পথচারীরা নিজ দায়িত্বে রাস্তা পারাপার হয়।
গোয়ালন্দ ঘাট থেকে পাংশা উপজেলার মাছপাড়া রেলপথে বৈধ রেলগেট রয়েছে ১৪টি। এখানে ১১টি ক্রসিংয়ে গেটম্যান রয়েছে এবং বাকী তিনটিতে কোনো গেটম্যান নেই। অপরদিকে পাঁচুরিয়া-বসন্তপুর রেলপথে ছয়টি বৈধ রেলক্রসিং থাকলেও একটিতে কোনো গেটম্যান নেই। অপরদিকে কালুখালী ভাটিয়াপাড়া রেলপথের রাজবাড়ীর অংশে বৈধ রেলক্রসিং রয়েছে ১৮টি। এরমধ্যে শুধুমাত্র চারটিতে বেরিয়ার ও গেটম্যান রয়েছে। এখানে ১৪টিতে বেরিয়ার ও গেটম্যান নেই। এছাড়া এসব রেলপথে রাজবাড়ীর অংশে কমপক্ষে ৫০ টি অবৈধ রেলক্রসিং রয়েছে। যেখানে কোনো গেটম্যান বা বেরিয়ার নেই।এসব স্থানে নিজ দায়িত্বে রাস্তা পারাপার হতে হয়।
রাজবাড়ী শহরের ইজিবাইক চালক মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, রাজবাড়ী শহরের রেলস্টেশন থেকে প্রায় একশ মিটার দূরে একটি রেলগেট। এখানে রয়েছে ফ্লাইওভার। কিন্তু এই গেটের পূর্ব দিকে প্রায় একশ মিটার দুরে আরেকটি অবৈধ রেলক্রসিং করা হয়েছে। যা দুই নম্বর রেলগেট নামে পরিচিত। সেখানে কোনো বেরিয়ার নেই। এই গেটের দক্ষিণ পাশেই রয়েছে একটি বিদ্যালয় ও দুই রাস্তার সমাহার। অপরদিকে উত্তর দিকে তিন রাস্তার সমাহার। শহরের একে বারে ব্যস্ততম এলাকায় এখান দিয়ে অনেক যানবাহন ও সাধারণ মানুষ যাতায়াত করে। আর বেরিয়ার না থাকায় তাড়া হুড়ো করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।
শহরের দুই নম্বর রেলগেট দিয়ে পার হওয়ার সময় রাজবাড়ী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী তুলিকা বলেন, এখানে একটি বেরিয়ার খুব দরকার। প্রায় সময়ই রিক্সাওয়ালা ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে যায়। কিন্তু রেললাইন পাকা রাস্তা থেকে একটি বেশি উঁচু। এতে করে দুর্ঘটনা ঘটে। জরুরিভাবে এখানে বেরিয়ারের ব্যবস্থা করা না হলে অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা লিটন শেখ বলেন, রাজবাড়ী রেলস্টেশনের পশ্চিম দিকে ড্রাই আইস ফ্যাক্টরী থেকে গঙ্গাপ্রসাদপুর রেলসেতুর দূরত্ব প্রায় এক কিলোমিটারের কম। কিন্তু এখানে চারটি রেলক্রসিং রয়েছে। ক্রসিংয়ের রাস্তা বাকা হওয়ায় দুর থেকে ট্রেন দেখা যায় না। এতে করে মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাতে হয়।
সরেজমিনে সোমবার সকালে শহরের ব্যস্ততম দুই নম্বর রেলগেটে দেখা যায়, ট্রাক, মাহিন্দ্র, ইজি বাইক, নছিমন, মোটর সাইকেল, রিক্সা, বাই সাইকেলসহ পায়ে হেটে মানুষ যাতায়াত করছে। গেটের ভেতরে ছোট একটি এক তলা ঘর। যা ঘন্টিঘর নামে পরিচিত। ট্রেন আসার ১০ মিনিট আগে তিনি গেটম্যান নাহিদ হাসান বের হলেন। হাতে লাল ও নীল দুটি নিশান। ট্রেন কিছুদূর থাকতে তিনি নিশান উঁচিয়ে দুইপাশের যানবাহন দাঁড়ানোর জন্য সংকেত দিচ্ছেন। কিন্তু সংকেত অমান্য করেও কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন।
রাজবাড়ী জিআরপি থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সলেমান মোল্যা জানান, রেল সড়কে চলাফেরার জন্য সকলকে আরো বেশি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। গত দশ মাসে রাজবাড়ী সিমানার মধ্যে ১১ টি দুর্ঘটনা ঘটেছে আর এতে সরকারি হিসেব মতে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজবাড়ীর রেলওয়ে বিভাগের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল হানিফ বলেন, এ বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে তারাই ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মো. শওকত আলী বলেন, রেলওয়ে বিভাগ একটি আইসোলেটেড ডিপার্টমেন্ট। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।