পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এবার ঢাকা থেকে ট্রেন যাবে পঞ্চগড়। বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘতম এই রেলপথের দৈর্ঘ্য ৫৮৬ কিলোমিটার। আগামী ১০ ই নভেম্বর ঢাকা- দিনাজপুর রেলপথে চলাচলকারী একতা ও দ্রæতযান এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি পঞ্চগড় পর্যন্ত চলবে। এজন্য সার্বিক প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত। আন্তঃনগর ট্রেন দুটি চালুর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গত ২৪ অক্টোবর পঞ্চগড় রেল স্টেশন পরিদর্শন করেন। রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল রাজশাহীর প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী (সিএমই) মৃণাল কান্তি বণিক প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দেন। গত বছরের জুন মাসে রেলমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুর পর্যন্ত দুটি শাটল ট্রেন উদ্বোধন করেন। সে সময় মন্ত্রী শিগগিরই পঞ্চগড় থেকে আন্তঃনগর ট্রেন চালুর ঘোষণা দিয়েছিলেন। রেলমন্ত্রীর সেই ঘোষণাই শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হতে চলেছে। এ প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা রেলওয়েকে জনগণের বাহনে পরিণত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছেন। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় রেলওয়ে ইতোমধ্যে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধন করেছে। যার প্রমান দেশের মানুষ পেয়েছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে রেলওয়ে আরও অনেকদূর এগিয়ে যাবে।
এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গোপালগঞ্জ-রাজশাহী রেলপথে ‘টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেস’ নামে নতুন ট্রেনের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ফরিদপুর অংশ থেকে পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ চালু হলো।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ব্রিটিশ শাসনামলে নির্মিত রাজবাড়ির কালুখালী থেকে গোপালগঞ্জের ভাটিয়াপাড়া পর্যন্ত রেলপথে ১৯৯৭ সালের ১৯ আগস্ট ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০১১ সালে কাশিয়ানী-গোপালগঞ্জ-টুঙ্গীপাড়া নতুন রেললাইন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০১৩ সালের ২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া রেলপথে ৩২০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে রেলপথ উদ্বোধন করেন।
পরে কাশিয়ানী থেকে গোবরা পর্যন্ত রেললাইনে ২০১৫ সালের নভেম্বরে নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে এর কাজ শেষ হয়। ২৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থেকে গোবরা পর্যন্ত ৪৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এ রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে। গতকাল উদ্বোধনের পর রাজশাহী-কাশিয়ানী-গোবরা রুটে নিয়মিত ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ।
এদিকে, আগামী ১০ নভেম্বর থেকে একতা ও দ্রæতযান আন্তঃনগর ট্রেন দুটি ঢাকা থেকে যাত্রা করে পঞ্চগড় পর্যন্ত যাবে। বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘতম (৫৮৬ কি.মি.) রেলপথ পাড়ি দেয়ার জন্য ট্রেন দুটি যাতে সময় মেনে চলতে পারে সেজন্যও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তিনটি রেকে (১৩ কোচ সমন্বয়ে এক রেক) ট্রেন দুটি চলবে। দুটি থাকবে চলাচলরত অবস্থায় বাকী একটি প্রস্তুত রাখা হবে। এতে করে ঢাকা থেকে কোন ট্রেন বিলম্বে পঞ্চগড় পৌঁছালেও পঞ্চগড় থেকে ঢাকামুখি ট্রেন সঠিক সময়ে ছাড়তে পারবে। বাড়তি এই রেক নেয়া হচ্ছে নীলসাগর থেকে। আর নীলসাগরে যুক্ত হচ্ছে ভারত থেকে আমদানীকৃত এলএইচবি কোচ। অর্থাৎ একতা ও দ্রæতযান ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানীকৃত পিটি ইনকা কোচে চলবে।
সূত্র জানায়, দ্রæতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটি পঞ্চগড় স্টেশন থেকে ছাড়বে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে। ট্রেনটি ঢাকা এসে পৌঁছাবে সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে। একতা এক্সপ্রেস পঞ্চগড় থেকে রাত ৯টায় ছেড়ে ঢাকায় আসবে সকাল ৮টা ১০ মিনিটে।
পক্ষান্তরে, দ্রæতযান এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে ছাড়বে রাত ৮টায়। পঞ্চগড়ে পৌঁছাবে ভোর ৬টা ৪৫ মিনিটে। একতা এক্সপ্রেস সকাল ১০টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে পঞ্চগড় পৌঁছাবে রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত ১৫০ কিলোমিটার মিটারগেজ লাইন ব্রডগেজে রূপান্তরসহ রেললাইন ও স্টেশন আধুনিকায়নে ৯৮২ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০১৩ সালে পঞ্চগড় চিনিকল মাঠে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেললাইন আধুনিকায়নের কাজের উদ্বোধন করেন। শুরুর ৩ বছরের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এটি শেষ হয় ২০১৭ সালে।
ঢাকা-পঞ্চগড় রেলপথে নতুন দুই ট্রেন চালু হলে উত্তরের অবহেলিত জনপদ ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ের মানুষের বহুদিনের দাবি পূরণ হবে। ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড় জেলা শহর ছাড়াও আরও কমপক্ষে দুটি উপজেলাবাসী সরাসরি ঢাকার ট্রেনের সুবিধা পাবে। বর্তমানে ট্রেন দুটি দিনাজপুর পর্যন্ত যায়। এতে করে ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ের যাত্রীদেরকে দিনাজপুর থেকে শাটল ট্রেনে করে গন্তব্যে যেতে হয়। আগামী ১০ নভেম্বর থেকে শাটলের যন্ত্রণা আর থাকবে না বলে সর্ব উত্তরের জনপদের মানুষ বেজায় খুশি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।