Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সন্ত্রাসীদের ভয়ে আতঙ্কিত মুক্তিযোদ্ধা বাছেদ মাস্টারের পরিবার

নরসিংদী থেকে সরকার আদম আলী | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

সন্ত্রাসী হামলা ও প্রাণনাশের ভয়ে সার্বক্ষনিক আতংকের মধ্যে দিনাতিপাত করছে একাত্তুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা বাছেদ মাস্টার ও তার পরিবারের সদস্যরা। প্রথম দফা হমলা চালিয়ে সন্ত্রসীরা মুক্তিযোদ্ধা বাছেদ মাস্টার ও তার কন্য শিরিনকে কুপিয়ে আহত করেছে। বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেছে। দুই কোটি ২১ লাখ টাকার সম্পদ বিনাশ করেছে।

এসব ঘটনায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার না করায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশি ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে এসব সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং মুক্তিযোদ্ধা বাছেদ মাস্টার ও তার পরিবারের সদস্যদেরকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। গত ২৭ আগস্ট কাউসার নামে মুক্তিযোদ্ধার এক সন্তানকে হত্যা করতে গিয়ে নিজের ছুরির পাল্টা আঘাতে নজরুল ইসলাম নামে এক সন্ত্রাসী নিহত হওয়ার ঘটনায় সন্ত্রাসীরা পাল্টা খুনের নেশায় মেতে উঠেছে।

সরেজমিন জানা যায়, শিবপুর উপজেলার লাগোয়া গ্রাম শানখলা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা বাছেদ মাস্টার একজন কৃষিজীবী। বাড়ির পাশে তার রয়েছে ছোট পুকুর। ওই পুকুর থেকে লাগোয়াগ্রাম আলিয়াবাদের মৃত সালাম মাস্টারের পুত্র নজরুল গংরা প্রায়ই মাছ চুরি করে নিয়ে যায়। ঘটনার কয়েকদিন আগে নজরুল মাছ চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে যায়। এতে মুক্তিযোদ্ধা বাছেদ মাস্টারের পুত্র কাউসার তাকে চড় থাপ্পড় মেরে ছেড়ে দেয়। গত ২৭ আগস্ট কাউসার আলিয়াবাদ গ্রামে তাদের জমিতে হালচাষ করতে গেলে নজরুল মোবাইল ফোনে কাউসারের ছোট ভাই মুরাদকে জানায় যে, তোর ভাইকে এখন মেরে ফেলব। পারলে তোরা তোর ভাইকে বাঁচা। এই কথা শুনে মুরাদ হোসেন তার আত্মীয় স্বজন দৌড়ে ঘটনাস্থলে যেতে যেতে নজরুলও তার সহযোগিরা ছুরি নিয়ে কাউসার কে হত্যা করতে ছুটে আসে এবং কাউসারকে লাখ্য করে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় কাউসার কায়দা করে সরে পড়লে নজরুলের ছুরিকাঘাত লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এ সময় আত্মরক্ষার্থে প্রতিপক্ষের লোকজন নজরুলের পতিত ছুরিটি হাতে নিয়ে তাকে প্রতিরোধ করতে গেলে পাল্টা ছুরিকাঘাতে নজরুল মারা যায়।

এই ঘটনার পর একই দিন সন্ধ্যায় আলিয়াবাদ, বংশিরদিয়া এলাকা থেকে নজরুলের আত্মীয় বুলবুল, স্বপন, জহির, সাদ্দাম, মজিবুর ও রমজান এর নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক বে-আইনি জনতা মুক্তিযোদ্ধা বাছেদ মাস্টারের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা বাছেদ মাস্টার ও তার কন্যা শিরিনকে কুপিয়ে ও লাঠিপেটা করে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে বাড়িঘরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ অবস্থায় বাছেদ মাস্টার ও তার বাড়ির লোকজনকে একটি ঘরে বন্দী করে হামলাকারীরা অবাধে লুটপাট করে বিনা বাধায় চলে যায়। যাওয়ার সময় দুটি মাহেন্দ্র ট্রাক্টর, খড়ের গাদা, গোশালা, রান্নাঘর, ঘরের আসবাবপত্র, তৈজসপত্র আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। লুটপাট করে নিয়ে যায় নগদ টাকা স্বর্ণালঙ্কার ও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী। হামলাকারীরা ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে দুই কোটি ২১ লাখ টাকার মালামালের ক্ষতি সাধন করে তারা মুক্তিযোদ্ধা বাছেদ মাস্টারের বাড়িটি ধ্বংসস্ত‚পে পরিণত করে। মামলা দায়েরের পর দীর্ঘ প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হলেও পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করছে না। এ সুযোগে আসামিরা অবাধে ঘুরাফেরা করছে। আসামিদের ভয়ে এলাকায় ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুক্তিযোদ্ধা


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ