Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশে মৃত্যু হারে দ্বিতীয় দ্রুত চিকিৎসার তাগিদ

বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ২৯ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

আজ সোমবার ২৯ অক্টোবর বিশ্ব স্ট্রোক দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘স্ট্রোক আমাদের থামাতে পারেনি’। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ জানান, বাংলাদেশে রোগ-ব্যাধিতে মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ স্ট্রোক। যা বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি। সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাধীন রোগীর ২০ শতাংশ মারা যান স্ট্রোকে। দেশে বর্তমানে স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠিকে অক্ষম করে দেয় স্ট্রোক। এতে করে মানবসম্পদের উন্নয়ন এবং উৎপাদনশীলতায় পড়ছে বিরূপ প্রভাব।
দিবসটি পালন উপলক্ষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে আজ সকাল ৮টায় সেমিনার এবং গণসচেতনতায় র‌্যালির আয়োজন করা হয়েছে। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করবেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারী বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. এস এম নোমান খালেদ চৌধুরী এবং নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. হাসানুজ্জামান। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ এতে আলোচনায় অংশ নেবেন।
প্রফেসর ডা. এস এম নোমান খালেদ চৌধুরী গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, স্ট্রোক মস্তিষ্কের এক ধরনের ভয়াবহ রোগ। যার ফলে সারা বিশ্বে মৃত্যুহার হারে এটি দ্বিতীয়। মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ কোনো কারণে বিঘ্নিত হলে মস্তিষ্কের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এটিকে স্ট্রোক বলে। স্ট্রোক ২ ধরনের হতে পারে। রক্তনালীর ভেতরে রক্ত জমাট বেঁধে রক্ত সরবররাহে বিঘ্ন ঘটলে তাকে ইশকেমিক স্ট্রোক বলে।
অন্যদিকে মস্তিষ্কের ভেতরে রক্তনালী ছিঁড়ে গেলে এতে ঘটে হেমোরহেজিক স্ট্রোক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, সারা বিশ্বে প্রতি ৬ জনে ১ জন প্রতি বছর স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। প্রতি বছর ১ কোটি ৫০ লাখ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। যার মধ্যে ৬০ লাখ মারা যায়। বিশ্বে শারিরীক অক্ষমতার তৃতীয় কারণ হলো স্ট্রোক। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিকস স্ট্রোকের মূল কারণ। এছাড়া ধুমপান, মদ্যপান, শারীরিক পরিশ্রমে অনীহার কারণে স্ট্রোক হতে পারে।
স্ট্রোকের লক্ষণসমূহ হচ্ছে- শরীরের এক দিক দুর্বল বা অবশ হয়ে যাওয়া। মুখ একদিকে বেঁকে যাওয়া। কথা বন্ধ হয়ে যাওয়া বা জড়িয়ে যাওয়া। দেখতে অসুবিধা হওয়া অথবা দুইটি জিনিস দেখা। অত্যধিক মাথাব্যাথা ও বমি হওয়া। অজ্ঞান হয়ে যাওয়া। স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ স্ট্রোক সেন্টার বা হাসপাতালে স্থানান্তর করা প্রয়োজন। লক্ষণ দ্বারাই স্ট্রোক রোগ চেনা গেলেও কোন্ ধরনের স্ট্রোক তা জানার জন্য মস্তিষ্কের সিটি স্ক্যান করা প্রয়োজন।
প্রফেসর ডা. নোমান খালেদ চৌধুরী জানান, দ্রুত লক্ষণসমূহ চিনে সঠিক সময়ে সঠিক রোগীকে স্ট্রোক সেন্টারে আনা গেলে সুচিকিৎসার মাধ্যমে ৩০ শতাংশ রোগীর সম্পুর্ণ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেক্ষেত্রে রোগী, রোগীর পরিবার এবং সমগ্র জাতি শারীরিক অক্ষমতার বোঝা থেকে মুক্তি পেতে পারে। একমাত্র শিক্ষা, জীবযাপনে সচেতনতা এবং আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমেই আমরা স্ট্রোকের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে পারি। স্ট্রোকের সুচিকিৎসার ক্ষেত্রে সময়োচিত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশে সাধারণ মানুষ অনেকেই হার্টের রোগী বা হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের রোগীকে একাকার করে দেখে থাকেন। এতে সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় ও সঠিক চিকিৎসা ব্যাহত বা বিলম্বিত হয়। এছাড়া ভ্রান্ত ধারণাও রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্ট্রোক

২৯ অক্টোবর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ