নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : দিন যতই গড়াচ্ছে ততই যেন জমে উঠেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) নির্বাচন। প্রতিদিনই কোন না কোন নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে এই নির্বাচনকে ঘিরে। আগের দিন অনুষ্ঠানস্থল বরাদ্দ না পাওয়ায় ঢাকায় প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠান করতে পারেনি কাজী সালাউদ্দিনের নেতৃত্বধীন সম্মিলিত পরিষদ। কিন্তু গতকাল ঠিকই নিজেদের প্রার্থী ও কাউন্সিলরদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেছে কামরুল আশরাফ খান পোটন এমপি’র নেতৃত্বাধীন ‘বাঁচাও ফুটবল’ পরিষদ। বড় ধরনের শো-ডাউনে এই অনুষ্ঠানটি করেছে তারা। বাফুফে নির্বাচনকে সামনে রেখে কাল গুলশানস্থ ওয়েস্টিন হোটেলে সারা দেশ থেকে কাউন্সিলদের জড়ো করে জমকালো নির্বাচনী প্রচারণা করলো বাঁচাও ফুটবল পরিষদ। আয়োজকদের দাবি জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠনের ৬৭ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৫৫ জনই যোগ দিয়েছিলেন এ অনুষ্ঠানে। শুধু জেলার ভোটাররাই নন, ঢাকার ক্লাব এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাবোর্ডের কাউন্সিলররা এসেছিলেন অনুষ্ঠানে। পবিত্র কোরআন তেলোয়াতের পর জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। শুরুতেই ভোটারদের কাছে হাত জোর করে নিজেদের প্যানেলের পক্ষে ভোট চান শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের সভাপতি ও ‘বাঁচাও ফুটবল’ পরিষদের আহŸায়ক মনজুর কাদের। নির্বাচিত হলে ফুটবল উন্নয়নে কাজ করার প্রতিশ্রæতি দেন সভাপতি পদপ্রার্থী নরসিংদী-২ আসনের সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খান পোটন। আর ব্যর্থ হলে এক বছরের মধ্যে পদত্যাগ করে চলে যাওয়ার ঘোষণাও দেন তিনি।
পোটন বলেন, ‘জেলার ফুটবল উন্নয়ন- এটা ‘বাঁচাও ফুটবল’ প্যানেলের নির্বাচনী ইশতেহার। এর সঙ্গে পৃষ্ঠপোষকতা যোগ হলে সারাদেশে ফুটবল উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যাবে। আমি নির্বাচিত হলে এক বছরের মধ্যে ফুটবলের বর্তমান রুগ্ন দশা পাল্টে দেবো ইনশাল্লাহ। শক্তিশালী জাতীয় দল গঠন, প্রতিটি ক্লাবে খেলোয়াড়দের থাকা- খাওয়ার সুব্যবস্থা, প্রতি তিন মাস অন্তর ১৩৪ জন কাউন্সিলদের নিয়ে সভার আয়োজন করা, কাউন্সিলরদের পরিচয়পত্র দেয়া (যা আগে ছিল না), জেলার ফুটবল উন্নয়নে ফিক্সড ডিপোজিটের ব্যবস্থা করা হবে। আমি নির্বাচনে হেরে গেলেও অসুস্থ ও অসচ্ছ¡ল ফুটবলারদের আর্থিক সহযোগিতা করবো।’
মতবিনিময় সভায় কাউন্সিলরদের মনের কথা, তাদের ক্ষোভ, দাবি-দাওয়ার বিষয়টিও মনোযোগ দিয়ে শুনেন কামরুল আশরাফ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি ওয়াদার বরখেলাপ করব না। আপনারা আমাকে একটি বার সুযোগ দেন। আমি যদি ব্যর্থ হই, তাহলে আপনাদের বলতে হবে না নিজেই পদ ছেড়ে চলে যাব।’
আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুল বলেন, ‹আমরা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) পরিবর্তন চাই। গত আট বছরে সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে ব্যর্থতা ছাড়া কিছুই দেখিনি। যারা আট বছরে কিছু দিতে পারেনি, তারা ভবিষ্যতে কী দেবে তা স্পষ্ট। এই আট বছরেই সাফের তিন আসরে গ্রæপ পর্ব পার হতে পারেনি বাংলাদেশ। বর্তমানে সর্বকালের সর্বনিম্ন ফিফা র্যাংকিংয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। তাই বাফুফেতে পরিবর্তন আবশ্যক। আমরা চাই স্বচ্ছ দুর্নীতি মুক্ত বাফুফে। যে ব্যক্তি দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থেকেও ফুটবলের উন্নতি করতে পারেননি, তিনি আবার আগামী চার বছরের জন্য ক্ষমতায় যেতে ভোট চাইছেন।’ ঢাকা মোহামোনের ডাইরেক্টও ইনচার্জ লোকমান ভ‚ঁইয়া বলেন, ‘চট্টগ্রামে এক মন্ত্রীর উপস্থিতিতে প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠান করে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে সালাউদ্দিনের প্যানেল। এছাড়া নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ এবং এর প্রেক্ষিতে ফিফা- এএফসির কাছে যে নালিশের বিষয়টি এসেছে এই ধরনের কাজ থেকে প্রতিপক্ষ প্যানেলকে বিরত থাকারও আহŸান জানাই আমি।’
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত থাকার কথা ছিল শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, শেখ হেলাল এমপি, বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমপিরও। কিন্তু তাদের অনুপস্থিতি সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়ে পোটন বলেন, ‘আমি উনাদের অনুরোধ করেছি অনুষ্ঠানে না আসার জন্য। কারণ উনারা আসলে প্রতিপক্ষ বন্ধুরা বলবেন নির্বাচনে সরকারের প্রচ্ছন্ন প্রভাব রয়েছে। বিতর্ক এড়াতেই এটা করা হয়েছে। প্রভাব খাটানোর ধুয়া তুলে ফুটবলাঙ্গণে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য দায়ী থাকবেন কাজী সালাউদ্দিন ও তার প্যানেল। কেননা, তারাই চট্টগ্রামে সরকারী লোক ও মন্ত্রীকে তাদের প্যানেল পরিচিতি সভার মঞ্চে উঠিয়েছেন।’
বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকট আবু কাওছার মোল্লা বলেন, ‘ ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আমরা ফুটবলের জন্য যাবতীয় সুযোগ সুবিধা বাড়াতে আবেদন করব। এই প্যানেল নির্বাচিত হবে বলে আমরা আশাবাদী।’ অনুষ্ঠানে প্রার্থীরা ছাড়াও আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা মোজাফফর হোসেন পল্টু, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু, শামসুল আলম মঞ্জু, খুলনার সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান, বিসিবির পরিচালক শেখ সোহেল, ইসমাইল হায়দার মল্লিক, জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, টঙ্গী ক্রীড়া চক্রের নুরুল ইসলাম নুরুসহ সাবেক তারকা ফুটবলার ও সংগঠকরা উপস্থিত ছিলেন। তারা সকলেই ‘বাঁচাও ফুটবল’ প্যানেলের পক্ষে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।