Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সিলেটের অভিষেকে খালেদও ‘এমন ভাগ্য ক’জনের হয়!’

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ অক্টোবর, ২০১৮, ১:০২ এএম

২৫ অক্টোবর দিনটি সিলেটের পেসার খালেদ আহমেদের জন্য হতে পারে সোনায় মোড়ানো। জাতীয় লিগের ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করে সিলেটকে জিতিয়ে যখন উৎসব করছেন, তখনই এসেছে আরেক সুখবর। প্রথমবারের মতো জাতীয় দলের ডাক। তাও আবার টেস্ট স্কোয়াডে। খালেদের জন্য উপলক্ষ আছে আরও। নিজ শহর সিলেটের অভিষেক টেস্টেই থাকার সুযোগ হচ্ছে দীর্ঘদেহী এই পেসারের।

খালেদকে নেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন বলেছিলেন, গতিতে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকায় খালেদকে দলে নিয়েছেন তারা। প্রমাণটিও এসেছে হাতে হাতে। গত বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে তার বোলিং তোপেই সিলেটের কাছে ৩ রানে হেরেছে ঢাকা মেট্রো। প্রথম ইনিংসে ৮৫ রানে ৫ উইকেট নেওয়া খালেদ দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৫৪ রানে ৫ উইকেট। প্রথম শ্রেণীর ক্যারিয়ারে এটি খালেদের প্রথম ১০ উইকেট নেওয়ার ঘটনা। কেবল এই পারফরম্যান্সই না, খালেদকে মূলত দলে এনেছে শ্রীলঙ্কা-এ দলের বিপক্ষে তার নৈপুণ্য।

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার আলমপুরে শখের ক্রিকেট খেলতেন খালেদ। উচ্চতা ভালো ছিল, মতি ছিল জোরে বল করার প্রতি। পেস বোলার হিসেবে তাই তার কদর স্থানীয় পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ে। দরকার ছিল ঠিকঠাক গাইডলাইন ধরে এগুনো। এক বন্ধুই দেখালো সে পথ। সিলেটেরই একটি ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি হয়ে নেমে পড়লেন বিপুল উৎসাহে। পরে বেসরকারি মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে এখানকার সতীর্থ আবু জায়েদ চৌধুরী রাহিকেও পেয়ে যান। তারপর তো এগিয়ে যাওয়া হয় আরও বেগবান।
স্থানীয় গণ্ডী পেরিয়ে জাতীয় লিগ, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, এইচপি, এ দল ঘুরে তিনি আজ জাতীয় দলে। এমন দিনে স্মরণ করেছেন পেছনের কথা, ‘সিলেটে আমার এক বন্ধু ছিল, সেও ক্রিকেট খেলে। সে একদিন বলল তুই আয় একাডেমিতে, তুই পারবি। তখনই আমার উচ্চতা ভাল ছিল। ওই একাডেমি থেকে আসলে অনুশীলন করতে করতে জাতীয় লিগ পর্যন্ত যাই।’ সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটে পা রাখার প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন একুশ বছরের জীবনে এটাই সবচেয়ে খুশির দিন তার, ‘ম্যাচ জিতে সবাই মিলে যখন বাসে করে হোটেলে ফিরছিলাম তখন শুনতে পেলাম টেস্ট দলে ডাক পেয়েছি। এটা স্বপ্নের মতো ব্যাপার। আমি দারুণ খুশি। এটাই জীবনের সবচেয়ে খুশির ঘটনা। আমি এতদিন কষ্ট করে আসছি, অবশেষে কষ্টের একটা ফল পেয়েছি। দোয়া করবেন যেন ধরে রাখতে পারি।’

খালেদ এমন একটা সময় টেস্ট দলে ডাক পেয়েছেন যখন তার নিজ শহরেই হতে যাচ্ছে প্রথমবারের মতো টেস্ট। যদি একাদশেও সুযোগ পান তাহলে টেস্ট ভেন্যু হিসেবে সিলেটের শুরুর সঙ্গে মিলে যাবে তারও পথচলা। উপলক্ষটা বিশেষ বলেই খালেদের উচ্ছ¡াসটাও বেশি, ‘এই সুযোগ পাওয়া যায় না। নিজের ঘরের মাঠে খেলতে পারব। সিলেটে প্রথম টেস্ট খেলা হবে সেখানে থাকব। সবাই এমন সুযোগ পায় না।’

খালেদের টেস্ট দলে আসা অবশ্য হুট করে নয়। বেশ কিছু দিন থেকেই পারফরম্যান্স দিয়ে নিজেকে রেখেছেন নির্বাচকদের নজরে। গেল জুনে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের বিপক্ষে প্রথম আনঅফিসিয়াল টেস্টে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে এক ইনিংসে ৪ উইকেট পেয়েছিলেন। এর জোরেই ‘এ’ দলের হয়ে যান আয়ারল্যান্ড সফরেও। সেখানে ৫টি আনঅফিসিয়াল ওয়ানডেতে নেন ১০ উইকেট। ডানহাতি এই পেসার নিজের ছন্দ ধরে রেখেছেন চলমান জাতীয় লিগেও। এবার তার জন্য অপেক্ষা করছে বড় মঞ্চ।

৩ নভেম্বর সিলেটে শুরু হবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্ট। দেশের কন্ডিশনে একাদশে জায়গা পাওয়া অবশ্য খুব সহজ হবে না তার জন্য। চোট না থাকলে মুস্তাফিজুর রহমানের জায়গা নিয়ে কোন সংশয় নেই। দুই পেসার খেলালে একাদশে জায়গা পেতে খালেদকে লড়তে হবে সিলেটের আরেক পেসার আবু জায়েদ চৌধুরী রাহি ও শফিউল ইসলামের সঙ্গে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদ

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ