গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
মালেক মল্লিক : সাবেক প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেন ও সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের কাছে পূর্ণাঙ্গ রায় লেখার অপেক্ষায় থাকা ১৬৮ মামলার পুনঃশুনানি হবে। আগামী ৫ মে থেকে এসব মামলা আপিল বিভাগের দৈনন্দিন কজলিস্ট (কার্যতালিকায়) থাকবে। অবসরের পর রায় লেখাকে সংবিধানবহির্ভূত আখ্যা দিয়ে প্রধান বিচারপতির একটি মন্তব্যের তিন মাস পর নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়া এসব মামলা পুনঃশুনানির কার্যতালিকায় এলো। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিমকোর্ট রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, প্রধান বিচারপতি মামলাগুলো পুনঃশুনানি করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই আগামী ৫ মে থেকে আপিল বিভাগের এসব মামলা কার্যতালিকা থাকবে এবং পুনঃশুনানি শুরু হবে। এদিকে মামলা পুনঃশুনানি প্রধান বিচারপতির উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবীরা। তাদের মতে, গা বাঁচানোর জন্য কেউ দায়সারা রায় লিখে থাকলে তা অবশ্যই বাতিল করতে হবে। প্রধান বিচারপতি মামলাগুলো পুনঃশুনানিতে দিয়ে সঠিক কাজই করেছেন। কারণ অবসরের পরে রায় লেখার কোনো সুযোগ নেই।
সুপ্রিমকোর্ট রেজিস্ট্রার অফিস সূত্র জানা যায়, সদ্য অবসর নেয়া বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের কাছে রয়েছে ১৬১ মামলা। বাকি ৭টি মামলা আছে সাবেক প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনের কাছে। বেশিরভাগ মামলার রায় লেখার কাজ শেষ করেছিলেন ওই দুই বিচারপতি। কিন্তু তাদের লেখা রায় গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় প্রধান বিচারপতি মামলাগুলো পুনঃশুনানি করার নির্দেশ দিয়েছেন। এর পরপরই প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা অনুযায়ী প্রস্তুত করা হয়েছে এসব মামলার (পেপারবুক) নথিপত্র। গত মঙ্গলবার ২৬ এপ্রিল এসব মামলার পুনঃশুনানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালের পর থেকেই এসব মামলা আপিল বিভাগের ওয়েবসাইটের দৈনন্দিন কার্যতালিকায় দেখা যাবে বলে ওই সূত্র জানিয়েছে। একশত ৬৮টি মামলার মধ্যে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের এক নম্বর আদালতের কার্যতালিকায় ১০০টি এবং বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন দুই নম্বর আদালতের কার্যতালিকায় বাকি মামলাগুলো পুনঃশুনানির জন্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ২০১৫ সালের এক অক্টোবর আপিল বিভাগ থেকে অবসরে যান বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। অবসরে যাওয়ার সময় ১৬১টি মামলার রায় লেখার দায়িত্ব ছিল এই বিচারপতির। এসব মামলা তার অবসরে যাওয়ার আগেই আপিল বিভাগ বিভিন্ন সময়ে শুনানি গ্রহণ সম্পন্ন করেন। পাশাপাশি সংক্ষিপ্ত আদেশও জানিয়ে দেন। শুধু পূর্ণাঙ্গ রায় লেখার কাজ বাকি ছিল।
এদিকে গত ১৭ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে এক বাণীতে অবসরের পরে রায় লেখাকে সংবিধান পরিপন্থী হিসেবে উল্লেখ করেন। ওই বাণীতে তিনি বলেন, কোনো কোনো বিচারপতি রায় লিখতে অস্বাভাবিক বিলম্ব করেন। আবার কেউ কেউ অবসর গ্রহণের পর দীর্ঘদিন সময় ধরে রায় লেখা অব্যাহত রাখেন, যা আইন ও সংবিধানপরিপন্থী। এরপর তীব্র সমালোচনার মুখে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক গত ৮ ফেব্রুয়ারি ৬৫টি মামলার রায় ও আদেশের কপি হাতে লিখে জমা দেন। যেসব মামলা পুনঃশুনানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এগুলোর মধ্যে ২০১৩ সালে রায় ঘোষণা করা হয়েছে এমন মামলাও রয়েছে। এছাড়াও অবসরের পরে লেখা রায়ের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে এখন বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এসব দিক বিবেচনায় করে প্রধান বিচারপতি সবগুলো মামলারই পুনঃশুনানির আদেশ দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মহসিন রশিদ বলেন, আমার মনে হয় প্রধান বিচারপতি মামলাগুলো পুনঃশুনানিতে দিয়ে সঠিক কাজটিই করেছেন। কারণ অবসরের পরে রায় লেখার কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, গা বাঁচানোর জন্য কেউ দায়সারা রায় লিখে থাকলে তা অবশ্যই বাতিল করতে হবে। তবে একজন বিচারপতির গাফিলতির কারণে যদি রায় লেখা না হয় বা পুনঃশুনানি করতে হয় তার দুর্ভোগ কেন বিচারপ্রার্থীদের পোহাতে হবে? তাছাড়া পুনঃশুনানিতে তো একই রায় নাও হতে পারে। এটাকে আমি বিচার বিভাগের একটি অরাজকতা হিসেবে দেখি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।