পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পর্যাপ্ত লবণ মজুদ থাকার পরও কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে লবণ আমদানির পাঁয়তারা করছেন এক শ্রেণীর অসাধু মিল মালিক ও লবণ ব্যবসায়ী। জানা গেছে, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কাছে প্রকৃত তথ্য আড়ালে রেখে তারা নিজেদের সুবিধামত রিপোর্ট দিয়ে লবণ আমদানি করে থাকেন। লবন শিল্প রক্ষায় অসাধু মিল মালিক ও লবণ ব্যবসায়ীদের অশুভ তৎপরতা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন কক্সবাজারের মাঠ পর্যায়ের লবন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে গত ২৫ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারে বিসিকের এক কর্মশালায় শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু জানিয়েছিলেন, এই মুহূর্তে লবণের সঙ্কট নেই এবং অমদানি করা হবে না। তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন লবণ চাষি, মিল মালিক ও বিসিকের সমন্বয়ে মাঠ পর্যায়ে যাচাই-বাছাইয়ের পর সঙ্কট হলে সরকার লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত নেবে।
অভিযোগ উঠেছে, তড়িঘড়ি লবন আমদানির নেপথ্যে একটি সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে ওঠেছে। এরা প্রতি বছরি ভুল তথ্য দিয়ে লবণ আমদানির জন্য মন্ত্রণালয়ের উপর চাপ প্রয়োগ করে। গত কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সিন্ডিকেটের বেশ কয়েকজন তদবির করছেন বলে জানা গেছে। এরা দেশীয় শিল্প ধ্বংস করে লবণ আমদানির জন্য বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছে। প্রকৃত রিপোর্ট গোপন করে বিসিক বলছে, দেশে লবন মজুদের পরিমাণ হচ্ছে এক লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন।
অপরদিকে লবণ চাষিদের দাবি, বর্তমানে কোনো সঙ্কট নেই। উল্টো ৫ লাখ মেট্রিক টনের বেশি লবণ মাঠে অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে আছে। মিলারদের বড় অংশ লবণ আমদানির বিরুদ্ধে। বিসিক লবণের চাহিদা ও মজুদ নির্ধারণে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর মহাব্যবস্থাপক মো. মাজহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত কমিটিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও বিসিক কক্সবাজারের লবণ শিল্পের উন্নয়ন কর্মসূচির উপ-মহাব্যবস্থাপক দিলদার আহমদ চৌধুরীকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন, লবণ চাষি কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কায়ছার ইদ্রিস, কক্সবাজার লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি রইছ উদ্দিন ও ইসলামপুর লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি মো. শামসুল আলম আজাদ। তবে এদের মধ্যে একজনই আমদানির পক্ষে বলে জানিয়েছে লবণ মিল মালিক ও চাষিরা।
কক্সবাজার, চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলার আংশিকসহ ৬৪ হাজার ১৪৭ একর লবণ জমি রয়েছে। লবণ চাষির সংখ্যা ৫৫ হাজারের বেশি। কিন্তু দালাল, ফঁড়িয়া ও আমাদানিকারক চক্রের ফাঁদে পড়ে বার বার ন্যায্যমূল্য বঞ্চিত হয় চাষিরা। অথচ মাঠ পর্যায়ে চাষিদের কাছ থেকে স্বল্পমূল্যে লবণ কিনে বড় অঙ্কের মুনাফা করছে মধ্যস্বত্ত¡ভোগি ও মিল মালিকরা।
পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরও কাগজপত্রে কৃত্রিম সঙ্কট দেখিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলকে দিয়ে লবণ আমদানির পাঁয়তারা বন্ধ হয় না। অথচ আসছে নভেম্বর থেকেই পুরোদমে লবণ মৌসুম শুরু হচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে আপদকালীন সঙ্কটের কোন আশঙ্কা নেই। মহেশখালী, চকরিয়া, ইসলামপুর, টেকনাফ, পেকুয়ার অন্তত ১০টি এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রচুর পরিমাণ লবণ মজুদ রয়েছে। উৎপাদনমূল্য না পাওয়ায় চাষিরা লবণ বিক্রি করছেন না।
চাষিরা জানান, এক মাস আগে প্রতি বস্তা লবনের দাম ছিল ৭৮০ টাকা। বর্তমানে ৭০০ থেকে ৭২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাহিদার তুলনায় যোগান বেশি হওয়ায় চাষিরা লবণের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। বাজারে লবণের সরবরাহে ঘাটতি নেই। ইসলামপুর লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি মো. শামসুল আলম আজাদ বলেন, অধিকাংশ মিল ও মাঠে প্রচুর লবণ মজুদ আছে।
বিসিকের রিপোর্টে এক লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন লবণ মজুদ রয়েছে। এতেও সঙ্কটের আশঙ্কা নেই। বিসিক কক্সবাজারের লবণ শিল্প উন্নয়ন প্রকল্প কার্যালয় সূত্র জানায়, গত বছর লবণের চাহিদা ছিল ১৫ দশমিক ৭৬ লাখ মেট্রিক টন। এই মৌসুমে উৎপাদন হয়েছে ১৩ দশমিক ৬৪ লাখ মেট্রিক টন। চাহিদার বিপরীতে ঘাটতি ছিল দুই লাখ ১২ হাজার মেট্রিক টন। গত বছর পাঁচ লাখ মেট্রিক টন আমদানির পারও দুই লাখ ৮৮ মেট্রিক টন উদ্বৃত্ত থাকে। চলতি বছরের চাহিদা ধরা হয়েছে ১৬ লাখ ২১ হাজার মেট্রিক টন। আর উৎপাদন হয়েছে ১৪ লাখ ৯৩ হাজার মেট্রিক টন। ঘাটতি হচ্ছে এক লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন।
গত বছরের উদ্বৃত্ত দুই লাখ ৮৮ মেট্রিক টন বাদে বর্তমানে এক লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন চাহিদার তুলনায় বেশি রয়েছে। ইসলামপুরের লবণ চাষি ফরিদুল আলম বলেন, চাহিদা অনুযায়ী প্রচুর লবণ উৎপাদন হওয়ার পরও তারা কৃত্রিম সঙ্কট দেখিয়ে সিন্ডিকেট লবণ আমদানি করতে চাচ্ছে। মাঠে অবিক্রিত প্রচুর লবণ যা মৌসুম শুরু হয়েও বাঁচবে।
এদিকে গঠিত কমিটির সূত্র জানায়, মাঠের তথ্য যাচাই করে প্রতিবেদন দিতে বিসিককে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনের আলোকে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর দেশের ক্ষতি হয় এমন কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে না। বিসিক কক্সবাজারের লবণ শিল্পের উন্নয়ন কর্মসূচির উপ-মহাব্যবস্থাপক দিলদার আহমদ চৌধুরী বলেন, মিল ও মাঠের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। দ্রুতই প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।