নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : খেলি খেলি করেও শেষ পর্যন্ত খেলা হল না ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর। বিরতির পর ছিলেন না করিম বেনজেমাও। পরশু ইতিহাদে রিয়াল মাদ্রিদকেও তাই পাওয়া গেল না সেই চিরচেনা রূপে। ২০১৩ সালে টটেনহ্যাম থেকে স্পেনে পাড়ি দেওয়ার পর ইংল্যান্ডে প্রত্যাবর্তনটাও স্মরণীয় করে রাখতে পারলেন না গ্যারেথ বেলও। আসলে বার্নাব্যুর দলকে এদিন তেমন সুযোগই দেয়নি ম্যানচেস্টার সিটি। আবার সুযোগ যে নিজেরা তৈরী করতে পেরেছিল সেটাও বলা যাবে না। সব মিলে একরকম উত্তেজনাহীন গোলশূন্য ম্যাচই দেখল ইতিহাদ।
ম্যাচের উত্তেজনা বলতে শেষ ২০ মিনিট। এর মধ্যে গোল করার মত সুযোগ রিয়াল তৈরী করেছিল চারবার ও সিটি একবার। রিয়ালকে এসময় রুখে দিয়েছেন সিটি গোলরক্ষক জো হার্টে। আর শেষ মুহূর্তে কেভিনো ডি ব্রুইনের বাঁকানো ফ্রি-কিক জালে ঢোকার ঠিক আগ মুহূর্তে দুর্দান্ত দক্ষতায় প্রতিহত করেন কেইলর নাভাস। ইতিহাসের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমি-ফাইনালে তাই ইতিহাদের দর্শকদরা কোন গোলেই সাক্ষী হতে পারলেন না। তবে রেকর্ড দশ বারের চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে গোলবার অক্ষত রেখে ফাইনালের আশা জিইয়ে রেখাটাও সিটির জন্য কম কিসে।
জিদান অবশ্য বলেছিলেন রোনালদো-বেনজেমা দু’জনেই একাদশে থাকবেন। কিন্তু ম্যাচ শুরুর ঘন্টা দেড়েক আগে তাকে মাঠে না নামানোর সিদ্ধান্ত নেন জিদান। সিটিরও অক্রমন ভাগের বেশ ক’জন ছিলেন দলের বাইরে। ইয়াইয়া তোরে ও সামির নাসরি মাঠেই নামতে পারেননি, হ্যামিস্ট্রিং চোট নিয়ে প্রথমার্ধের আগেই মাঠ ছাড়তে হয় মিডফিল্ডার ডেভিড সিলভাকে। দ্বিতীয় লেগের ম্যাচেও পাওয়া যাবে না তাকে। সব মিলে জয় হয়েছে এদিন দু’দলের রক্ষনেরই। প্রথমার্ধে তো কোন দলই গোলের মুখ বরাবর শটই নিতে পারল না। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটাও ছিল একই রকম। বেনজেমাকে বসিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে জেসে রদ্রিগুয়েজকে নামায় রিয়াল। এই ফরোয়ার্ডের হেডেই প্রথম সুযোগ পায় সফরকারীরা। কিন্তু বারে লেগে তা প্রতিহত হয়। এরপর কাসিমিরোর হেডও পা দিয়ে ঠেকিয়ে দেন হার্ট। তবে মাদ্রিদের দলের হয়ে সবচেয়ে সহজ সুযোগটি পেয়েছিলেন পেপে। কিন্তু খুব কাছ থেকে তিনিও প্রতিহত করতে পারেননি ম্যাচের নায়ক সিটি গোলরক্ষক জো হার্টকে। পুরো ম্যাচেই লক্ষ্যে এই তিনটি শটই ছিল রিয়ালের। পক্ষান্তরে ম্যাচের যোগ করা সময়ে ডি ব্রুইনের ঐ ফ্রি-কিক শটটিই ছিল রিয়ালের গোল মুখে সিটির একমাত্র শট। তবে ঐ একটি শটেই শেষ হাসি হাসতে পারত সিটি। কিন্তু রিয়ালের কোস্টা রিকা গোলরক্ষক কেইলর নাভাসের দৃড়তায় তা আর হয়ে ওঠেনি।
এমন ফলে স্বভাবতই খুশি সিটি কোচ ম্যানুয়েল পেল্লেগিনিÑ ‘আমরা তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটা ম্যাচ খেলেছি এবং ভালো রক্ষণ করেছি। যদি আপানি জিততে না পারেন তাহলে ০-০ ড্র ভালোই।’ একই ধরনের সুর দলের অধিনায়ক ভিনসেন্ট কোম্পানির কন্ঠেওÑ ‘এমন একটা আক্রমণাত্মক দলের বিপক্ষে গোলবার অক্ষতা রাখতে পারাটাও বড় কিছু। প্রথম লেগে এটি করতে পেরে আমরা খুশি।’ ম্যাচের আগেই মানসিকভাবে শিষ্যদের দৃঢ় থাকতে বলেছিলেন সিটির কোচ ম্যানুয়েল পেল্লেগ্রিনি। শেষ চারে অভিষিক্ত দল হিসেবে ২৭ বার এই পর্বে খেলা দলকে গোল বঞ্চিত রেখে তারই যেন প্রমাণ দিলেন আকাশি-নীল বাহিনী। তবে দ্বিতীয় লেগের খেলাটা যে তাদের জন্য এতটা সহজ হবে না সেটা জানেন তিনি নিজেও। তা সত্ত্বেও মনোবল হারাচ্ছেন না এই চিলিয়ানÑ ‘আমি মনে করি না রিয়াল ফেভারিট। অ্যাওয়ে ম্যাচে বার্নাব্যুতে যেতে আমাদের কোন ভয় নেই। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে তারা ঘরের মাঠের সুবিধা পাবে। কিন্তু আমরাও এ্যাওয়ে ম্যাচে আমরাও সেভিয়া, ডায়নামো কিয়েভ ও পিএসজির সাথে ভালো খেলেছি।’
সিটি খুশি বলে অখুশি হওয়ার অবশ্য কারণ নেই রিয়ালের। ভুল্ফসবুর্গের কাছে ২ গোলে পিছিয়ে থেকেও ঘরের মাঠে ৩-০ গোলে জিতে শেষ চারে পা রাখে রিয়াল। ওই ম্যাচের হ্যাটট্রিকম্যান রোনালদো ডান উরুর চোটের কারনে এদিন ছিলেন না ঠিকই, তবে ঘরের মাঠে তাকে পাওয়া অনেকটাই নিশ্চিত। রোনালদোর মত একজন গোলস্করারকে ছাড়া খেলাটাও যে কঠিন সেটা জানালেন দলের মিডফিল্ডার টনি ক্রসÑ ‘রোনালদো আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সে ম্যাচের ফল নির্ধারক এবং সে গোল করে। নিশ্চয় তাকে ছাড়া খেলাটা বেশ কঠিন।’ দ্বিতীয় লেগে রিয়ালের জন্য ভালো সুযোগ থাকছে এতে কোন সন্দেহ নেই, তবে সিটির জন্যেও সুযোগটা একবারে মন্দ না। আগামী বুধবারের এই লড়াইয়ে ১-১ গোলের ড্র করতে পালেই ফাইনালে পা রাখবে সিটি।
গোলের উদ্দেশ্যে এদিন প্রথম শট নেন সিটি ডিফেন্ডার নিকোলাস ওটোমেন্ডি, ম্যাচে ততক্ষণ কেটে গেছে ২৭ মিনিট। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চলতি মৌসুমে যা ছিল সবচেয়ে বেশি সময় পর গোলমুখী কোনো শট।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের ২২৩ ম্যাচে নবম বারের মত গোলশূন্য ড্র করল রিয়াল মাদ্রিদ।
২০০৯-১০ মৌসুম থেকে এ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রোনালদো বিহীন রিয়ালের
জয়ের রেকর্ড ৪৩ শতাংশ। তার উপস্থিতিতে ৭১ শতাংশ ম্যাচেই জিতেছে
রিয়াল।
মৌসুমের চতুর্থ ম্যাচ এটি, যার প্রথমার্ধে লক্ষ্য বরাবর শট ছিল না একটিও।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের শেষ তিন ম্যাচে মাত্র তিন বার লক্ষ্য বরাবর শট
নিতে পেরেছে সিটি। প্রতি ম্যাচে একটি করে।
গোল তো দূরের কথা, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা ৪৩২ মিনিট লক্ষ্যেই শট নিতে পারেননি আগুয়েরো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।