নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : দিন যতই গড়াচ্ছে ততই যেন জমে উঠেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) নির্বাচন। প্রতিদিনই কোনো না কোনো নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে এই নির্বাচনকে ঘিরে। গতকাল দুটি ঘটনায় উত্তাপ ছড়িয়েছে দেশের ফুটবলাঙ্গনে। এদিন নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত পরিষদ প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠান করতে পারেনি। মূলত অনুষ্ঠানস্থল বরাদ্দ না পাওয়ায় তাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠান করা। অন্যদিকে কাজী সালাউদ্দিনকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন সাবেক তারকা ফুটবলার ও বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রব্বানী হেলাল। বেশ ক’দিন ধরেই গুঞ্জন ছিল, হেলাল শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকছেন না। তিনি সালাউদ্দিনকেই সমর্থন দেবেন। গুঞ্জনের সত্যতা মিললো গতকাল। এদিন সকালে সালাউদ্দিনের গুলশানস্থ বাসভবনে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন হেলাল। বিকেলে বাফুফে ভবনে এসে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে সমর্থন জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।
হেলাল নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ায় এখন সভাপতি পদে দ্বি-মুখী লড়াই হবে। সম্মিলিত পরিষদ থেকে লড়বেন কাজী সালাউদ্দিন এবং ‘বাঁচাও ফুটবল’ পরিষদ থেকে কামরুল আশরাফ খান পোটন এমপি। হেলালের সমর্থন পেয়ে সালাউদ্দিন তাৎক্ষনিক মিডিয়াকে বলেন, ‘হেলাল আমার ছোট ভাই। সে এসেছে বাফুফে নির্বাচনে আমাকে সমর্থন জানাতে। আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই। ছোট ও বড় ভাইয়ের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি হতেই পারে। তবে এটা দীর্ঘস্থায়ী হয়না। এক সময় শেষ হয়। আমার এবং হেলালের মধ্যে এতদিন যে দ্বন্দ্ব ছিল, তার অবসান ঘটেছে আজ। বাফুফে নির্বাচনে হেলাল আমাকে সমর্থন দিয়ে প্রমাণ করলো ভালো-মন্দ যাচাই করার যোগ্যতা তার রয়েছে।’
সালাউদ্দিন আরো বলেন, ‘নির্বাচনকে নিয়ে কাঁদা ছোড়াছুড়ি শুরু হয়ে গেছে। আজ (গতকাল) সন্ধ্যায় আমাদের প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠানটি করতে দেয়া হয়নি। আমি অবাক হয়েছি, নিরাপত্তার অযুহাত দেখিয়ে হোটেল পূর্বাণী কর্তৃপক্ষ আমাকে প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠানটি করতে দেয়নি। নির্বাচনকে সামনে রেখে গত দু’দিন ধরে যা হচ্ছে, তা আমি মুখে বলতে চাই না। রাজধানীর বাইরের কাউন্সিলররা ঢাকায় আসতে ভয় পাচ্ছেন। ঢাকার কাউন্সিলররা ভয়ে আমার সঙ্গে লুকিয়ে দেখা করছেন। এসব কিসের আলামত? কাউন্সিলরদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে আমার কাছে খবর আছে। যদিও ১৫/২০ দিন আগে বিরোধী পক্ষ আমাকে ফোনে ভয়ভীতি দেখিয়েছিল। কিন্তু গত ক’দিনে কেউ ফোন করেনি। এমনকি সরকারের উপর মহল থেকেও আমার কাছে কোন ফোন আসেনি। অন্য কারো কাছে এসেছে কিনা আমি জানি না। বাফুফের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যা হচ্ছে, তার সবকিছুই এএফসি ও ফিফার নজরে আছে। হোটেলে ৬০ জনকে দাওয়াত দিয়ে অনুষ্ঠান করতে পারিনি। এরচেয়ে বড় দুঃখের কথা আর কী হতে পারে। অথচ এই পূর্বাণী হোটেলের সঙ্গে বাফুফের দীর্ঘদিনের সু-সম্পর্ক। একটা কথা আমি জোর দিয়ে বলতে পারি, আজ থেকে ১০ দিন আগের নির্বাচনী পরিবেশ আর এখনকার পরিবেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন। তবে আমার ইচ্ছা সঠিক সময়েই নির্বাচন হোক। এবং আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবো না। বাদ বাকি ডেলিগেট ও নির্বাচন কমিশন বলতে পারবে। নির্বাচনী পরিবেশ ঘোলাটে হওয়ায় আমি সরকারের কাছে নিরাপত্তা চাইবো।’
এদিকে সালাউদ্দিনকে সমর্থন জানিয়ে গোলাম রব্বানী হেলাল সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মুখোমুখী হন। তিনি বলেন, ‘আমার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোটাকে পিছু টান বলা যাবে না। প্রথমত, এখন টাকার ছড়াছড়ি হচ্ছে, নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। দ্বিতীয়ত, ‘বাঁচাও ফুটবল’ প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী কামরুল আশরাফ খান পোটন ফুটবলের লোক নন। এক্ষেত্রে সালাউদ্দিন ভাইকেই যোগ্য মনে করেছি আমি। উনার সঙ্গে আমার দ্বন্দ্ব ছিল জেলা ফুটবলের উন্নয়ন নিয়ে। কিন্তু এবার উনার নির্বাচনী ইশতেহারে দেখেছি জেলা ফুটবলকে তিনি প্রাধান্য দিয়েছেন। দেশের ফুটবলের এখন যা অবস্থা তাতে সালাউদ্দিনকে প্রয়োজন। উনি আমাকে কথা দিয়েছেন, জেলা ফুটবলের উন্নয়ন করবেন। উনার কথা আমি বিশ্বাস করেছি। ১৯৭৪ সাল থেকে উনাকে আমি বিশ্বাস করি। তখন থেকেই উনার সঙ্গে আছি। অন্য প্রার্থীর চেয়ে সালাউদ্দিনের পার্থক্য অনেক। দেশ স্বাধীনের সময় উনার অবদান অনস্বীকার্য। এখানে আমরা যারা রয়েছি, তাদের কেউই সরকার বিরোধী লোক নই। সবাই সরকারের পক্ষের লোকই। ১৯৭৫ সালের পর থেকে আবাহনীর প্রতিষ্ঠাতা শহীদ শেখ কামালের কবরে আমার আগে কেউ ফুল দিতে পারেননি। আমি যতদিন বাঁচবো, এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখবো ইনশাল্লাহ। আমরা সবাই বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যের মতো। আমি ১৩৪ জন কাউন্সিলরকে অনুরোধ করবো সালাউদ্দিনকে ভোট দিতে।’ হেলাল আরো বলেন, ‘২০০৮ সালে তত্বাবধায়ক সরকার থাকলেও বাফুফের নির্বাচনে কোন হুমকি ছিল না। কিন্তু এবার কি হচ্ছে। হোটেল পূর্বানী কর্তৃপক্ষ সম্মিলিত পরিষদকে প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠান করতে জায়গা দেয়নি। তারা যে জায়গা দিচ্ছে না, এজন্য কোন লিখিতও দেয়নি। আমি যতটুকু জানি, এএফসি বা ফিফা প্রতিনিধি ২৮ এপ্রিল ঢাকায় চলে আসবে। কোন কিছু হলে তারা হস্তক্ষেপ করবে। নির্বাচন হতেই হবে। যদি তা না হয়, তাহলে ফিফার অ্যাফিলিয়েশন বাতিল হয়ে যাবে বাংলাদেশের। আমি মনে করি স্বাধীনতা যুদ্ধে যেমন সালাউদ্দিন ভাইয়ের দরদ ছিল, তেমনি বাফুফের প্রতি দরদ দেখিয়ে তিনি নির্বাচন করবেন। আমার ধারণা সরকারের পক্ষ থেকে কোন চাপ নেই সালাউদ্দিন ভাইয়ের নির্বাচন করার ক্ষেত্রে। সব কথার শেষ কথা, ফুটবল বাঁচাতে হলে সালাউদ্দিন ভাইকেই জয়ী করতে হবে।’
এদিকে সালাউদ্দিনকে সমর্থন জানানোর কিছুক্ষণ পর ‘বাঁচাও ফুটবল’ প্যানেলের আহ্বায়ক মনজুর কাদের মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেন। তিনি মনে করেন, সালাউদ্দিনকে সমর্থন দিয়ে হেলালের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোতে খুব একটা সুবিধা পবে না সম্মিলিত পরিষদ। কাদের বলেন, ‘কাউন্সিলররা কেন সালাউদ্দিনের কথা শুনবেন। তিনি কি কোন ক্লাব তৈরীর পেছনে ভূমিকা রেখেছেন। দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিতে সালাউদ্দিন কতটা কাজ করেছেন তা সবাই জানেন।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।