পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সউদী যুবরাজ, উপ-প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আবদুল আজিজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের উচ্ছ¡সিত প্রশংসা করে বলেন, তিনিও এ উন্নয়নের অংশীদার হতে চান। গতকাল সন্ধ্যায় রাজকীয় প্রসাদ আরগায় বৈঠককালে যুবরাজ তার এ মনোভাব ব্যক্ত করেন। তারা দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন যুবরাজকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, তখন তিনি (যুবরাজ) অত্যন্ত উষ্ণতার সঙ্গে এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন এবং বলেন, ‘আমি শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করব।’
শেখ হাসিনা মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘আমরা আমাদের নিজেদের মধ্যে কোনো ঝগড়া-বিবাদ করব না, বরং আমরা আমাদের যে কোনো সমস্যা নিজেরাই সমাধান করব।’
প্রধানমন্ত্রী যখন জানান, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিনি ৬ বার সউদী আরব সফর করেছেন, তখন সউদী যুবরাজ তাকে (শেখ হাসিনা) ‘হাফ সউদী ’ বলে বর্ণনা করেন।
‘এটিও আপনার বাড়ি’ একথা উল্লেখ করে সউদী যুবরাজ বলেন, ‘আপনি অনেক বার সউদী আরব সফর করেছেন, তাই আপনি ‘হাফ সউদী ’ হয়ে গেছেন।’
মুসলিম উম্মাহর মধ্যে শান্তি বজায় রাখা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত পোষণ করে যুবরাজ বলেন, ‘আমরাও এটা চাই এবং আমরা সবাই একত্রে শান্তিতে বসবাস ও উন্নয়ন করতে চাই।’
যুবরাজ বলেন, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে সউদী আরবের চমৎকার সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে এবং ভবিষ্যতে আরো তা বৃদ্ধি পাবে।’
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মোহাম্মদ বিন সালমানের বৈঠকে মূলতঃ দুটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা হয়। এর একটি হচ্ছে- বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং অপরটি হচ্ছে- প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়।
হক বলেন, ‘আমরা আশা করছি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সউদীর একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল খুব শিগগির বাংলাদেশ সফর করবেন এবং দেশটি বাংলাদেশে বড় ধরনের বিনিয়োগ করবে।’
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সউদী আরব বাংলাদেশে আরো বিনিয়োগ করার জন্য খুবই উৎসাহী। শেখ হাসিনা সউদী বাদশাহ’র আমন্ত্রণে চারদিনের সরকারি সফরে গত মঙ্গলবার রিয়াদ পৌঁছেন।
এর আগে গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সউদী বাদশাহ ও দুই পবিত্র মসজিদুল হারামের খাদেম সালমান বিন আবদুল আজিজ আল-সউদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘তিনি বলেছেন, সা¤প্রতিকালে বাংলাদেশের যে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে, সে সম্পর্কে আমি অবগত আছি এবং এই উন্নয়নের বিকাশে আমিও তার অংশীদার হতে চাই।’
তিনি বলেন, বাদশাহ সালমান তার কর্মকর্তাদের বাংলাদেশকে দেখে আসা এবং বাংলাদেশে উন্নয়নের কী ঘটছে তা পর্যবেক্ষণে বিশেষজ্ঞ পাঠানোর কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেব কোন কোন ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিনিয়োগ প্রয়োজন।’
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, গত বুধবার রাতে রিয়াদের রয়্যাল প্যালেসে অত্যন্ত উষ্ণ ও আন্তরিক পরিবেশে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। হক বলেন, ‘প্রায় আধা ঘণ্টা স্থায়ী এই বৈঠকে তিনি (সালমান) খুবই উৎফুল্ল ছিলেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন সউদী বাদশাহ। তিনি বলেন, যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় থাকে তাহলে সউদী আরব ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরও উন্নত হবে এবং সকল ক্ষেত্রে উন্নতি সাধিত হবে।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সউদী বাদশাহ তিনবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার কথা উচ্চারণ করেন। বৈঠকটি উষ্ণ ও আন্তরিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাদশাহ নিজে রাজপ্রসাদের প্রবেশ দ্বারে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়েছেন। বাদশাহ প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, এটি আপনার ঘর এবং আপনাকে সবসময় এখানে স্বাগতম। বাংলাদেশ ও সউদী আরব দু’টি ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ এবং ধর্মের পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন বিষয়ে একই বন্ধনে বাঁধা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সউদী বাদশার আথিয়েতার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানালে সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সউদ বলেন, এটা তার দায়িত্ব। সউদী বাদশা বলেন, দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক অনেক উন্নত হয়েছে।
প্রশিক্ষণ নিয়ে বিদেশ যান : বিদেশে চাকরি প্রার্থীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
বিদেশে চাকরি প্রার্থীদের জন্য প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশ চাকরি প্রার্থীদের দেশের বাইরে যাওয়ার আগে সঠিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল বিকেলে সউদী আরবের জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে বলেন, এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, যারা চাকরি নিয়ে বিদেশে যেতে চান, তাদের প্রশিক্ষণ নেয়ার আগ্রহ কম। অল্প কিছু টাকা খরচ করে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে বিদেশ যাওয়ার পর তারা বিপদে পড়েন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা চাকরি নিয়ে বিদেশে যেতে ইচ্ছুক সরকার তাদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে। এই প্রশিক্ষণ তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যথায় বিদেশে অবস্থানকালে তারা অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হন। শেখ হাসিনা বলেন, অনেক মানুষ যথাযথ প্রশিক্ষণ না থাকায় বিপদের শিকার হন। এটা খুবই দুঃখজনক এবং যাতে কেউ এ কাজ না করে সে ব্যাপারে মনোযোগ দেয়া দরকার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশে চাকরি প্রার্থী অনেক লোক দালালের খপ্পরে পড়ে জায়গা-জমি বিক্রি করে বিপদে পড়ে। তাদেরকে ভুল সিদ্ধান্তের জন্য দিনের পর দিন জেলে কাটাতে হয়। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের তথ্য প্রদানের মাধ্যমে প্রবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।