Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কেরানীগঞ্জের ৪ গ্রামের মানুষ ভুমিদস্যুদের কাছে জিম্মি

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ঢাকার কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া, বেয়ারা, হাসনাবাদ ও আড়াকুল এই চার গ্রামের নিরীহ মানুষ ভ‚মিদস্যু কালা জরিফ বাহিনীর হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। এই বাহিনীর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে অনেকে পড়েছে চরম বিপদে আবার অনেকে তাদের হাতে মারধর খেয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। ইতোমধ্যে এই জরিফ বাহিনীর প্রধান কালা জরিফ স্থানীয় এক ইউপি মেম্বররের করা একটি চাঁদাবাজির মামলায় জেলহাজতে থাকলেও তার বাহিনীর অন্যান্য সদস্যদের কর্মকাণ্ড থেমে নেই। জরিফ বাহিনীর সদস্যরা এই চাঁদাবাজির মামলা প্রত্যাহার করার জন্য মামলার বাদীকে এখন নানা ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এই ঘটনায় ওই ইউপি মেম্বর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি জিডি করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিন গেলে মামলার বাদী শুভাঢ্যা ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ইকুরিয়া জমিদার বাড়ির হাজী মো. ওহেদুজ্জামন জানান, জরিফ তার বাহিনী নিয়ে ইকুরিয়া মুসলিম নগর, হাসনাবাদ হাউজিং বেয়ারা, আড়াকুল, পূর্বদী এলাকায় আধিপত্য গড়ে তোলে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দীর্ঘদিন যাবত চালিয়ে আসছে। এসব এলাকার নিরীহ মানুষের জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কেটে এনে অন্যত্র বিক্রি করে প্রতিদিন সে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। সে বেয়ারা এলাকার জৈনক খালেক সাহেবের মেয়ের প্রায় কোটি টাকা মূল্যের জমি জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে। এ ছাড়া ইকুরিয়া মুসলিম নগর পাগলা বাড়ির এক মহিলার জমি, পূর্বদীর এক হিন্দু পরিবারের জমি জোরপূর্বক দখল করে নেয়।

অন্যদিকে হাসনাবাদ সুপার মার্কেটের জমি জাল দলিল করে মার্কেটসহ ওই জমি অন্য লোকের কাছে বিক্রি করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে মার্কেটের মালিক পক্ষে করা মামলার তদন্তে জরিফের জাল-জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশ পায়।
সর্বশেষ জরিফ তার বাহিনী নিয়ে ইকুরিয়া মৌজায় আমার মেয়ের জমি খরিদ করার কারণ দেখিয়ে আমার কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। গত মাসের ৬ তারিখে জরিফ তার বাহিনী নিয়ে ওই জমিতে যায়। এসময় আমি খবর পেয়ে সেখানে গেলে জরিফ ও তার বাহিনীর সদস্যরা আমার কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা চাইলে আমি ভয়ে তাদেরকে ১০ লাখ টাকা দেই। কিন্তু তারা বাকি ৪০ লাখ টাকা নেয়ার জন্য আমাকে মারধর করে। আমার ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে তাদের কাছ থেকে আমাকে উদ্ধার করে। এই ঘটনায় আমি ওইদিন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় জরিফসহ ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজি মামলা করলে পুলিশ তাকে ওই দিনই গ্রেফতার করে। জরিফ এখন জেলহাজতে আছে। তার বাহিনীর সদস্যরা এখন মামলা প্রত্যাহার করার জন্য আমাকে নানা ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এই ঘটনায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, র‌্যাাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত কেরানীগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী ল্যাংড়া আমির ও পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত আনসার বাহিনীর সদস্যরা এখন জরিফ বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি শাহ জামান বলেন, একটি চাঁদাবাজি মামলায় জরিফকে গ্রেফতার করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ