Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খরার কারণে আত্মহনন করতে যাওয়া বাবাকে ফেরালো ছেলে

ভারতে চার কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক সিন্ধের ঋণ ১৫ লাখে গিয়ে ঠেকলেও সাহস হারাননি

প্রকাশের সময় : ২৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ঋণের দায়ে জর্জরিত ৪৫ বছর বয়সী ধনরাজ সিন্ধে প্রায় আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তার ১৪ বছর বয়সী ছেলে পৃথ্বীরাজ আত্মহত্যার পথ থেকে ফিরিয়ে এনেছে বাবাকে। ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের খরাপীড়িত লাতুর জেলায় গত শনিবার এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম। পৃথ্বীরাজ ওইদিন বাবাকে নিজের মোবাইল ফোন ও যন্ত্রপাতির ব্যাগ ছাড়াই তড়িঘড়ি করে মাঠের দিকে যেতে দেখে। এ সময় বাবাকে অনুসরণ করে সে দেখতে পায় বাবা ধনরাজ গলায় একটি দড়ি বাঁধছেন। তখন বাবাকে সে থামানোর চেষ্টা করে। পৃথ্বীরাজ বলে, আমি তাকে শান্ত করার চেষ্টা করি, বলি তিনি যদি আত্মহত্যা করেন তাহলে আমাদের দেখার কেউ থাকবে না। তার বাবা খুব চাপের মধ্যে ছিলেন বলে জানায় পৃথ্বীরাজ। লাতুরের শিরুর অন্তপাল গ্রামের কৃষক সিন্ধের তিন একর জমি আছে। কিন্তু তিন বছর ধরে ফসলে মার খাচ্ছেন তিনি। প্রথম বছর ঘরে তোলার অপেক্ষায় থাকা ফসল এক রাতের শিলাবৃষ্টিতে শেষ হয়ে যায়। এরপর দুই বছর ধরে চলা খরার কারণে ফসল ফলাতে পারছেন না। চার কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক সিন্ধে ঋণ ১৫ লাখে গিয়ে ঠেকলেও সাহস হারাননি। কিন্তু ওয়্যারলেস অপারেটর হিসেবে নিজের কন্যা সোনালির চাকরিতে যোগদানের কাগজপত্র নিয়ে স্থানীয় এক সরকারি কর্মকর্তা টালবাহনা শুরু করলে তিনি ভেঙে পড়েন। সিন্ধে বলেন, আমরা সন্তানদের অনেক স্বপ্ন। তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। কিন্তু প্রকৃতি আমাকে সমর্থন না দিলে আমার ভয় আমার কারণে তাদের স্বপ্ন তছনছ হয়ে যাবে। স্কুলে পড়াকালে তার কন্যা অর্চনা (২৬) সংস্কৃত বিষয়ে প্রেসিডেন্ট মেডেল অর্জন করেন। আইএএস কর্মকর্তা হতে চাওয়া পৃথ্বীরাজ সায়েন্স অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করেছে। অন্য দুই কন্যাও পড়াশোনায় ভালো করছে, যেখানে গ্রামের অন্যরা স্কুল থেকে ছিটকে পড়েছে। এখন সিন্ধে যখন ভাবেন তার ছেলে তাকে না থামালে কী ঘটতো, গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে তার। তার কন্যা সোনালি (২২) বলেন, আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা পড়াশোনা। কৃষিতে অনিশ্চয়তা অনেক বেশি আর উৎপাদনও তেমন হয় না। তাই কোনো একদিন আমি প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হতে চাই। সিন্ধে জানান, নিজের ঋণ শোধ করার জন্য তার শুধু একটি ভালো বৃষ্টিপাত দরকার। কিন্তু তার আগ পর্যন্ত সন্তানদের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তাকে প্রতিটি দিন যুদ্ধ করে যেতে হবে। এনডিটিভি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খরার কারণে আত্মহনন করতে যাওয়া বাবাকে ফেরালো ছেলে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ