পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৪ অক্টোবর যাত্রা শুরু করবে শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওইদিন সকালে ইনস্টিটিউট ভবনের উদ্বোধন করবেন। ভবনের কাজ একেবারে শেষ পর্যায়ে। এখন চলছে শেষ সময়ের ঘষা-মাজার কাজ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন- উদ্বোধন শেষে দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা ও প্রশিক্ষণে এটিই হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান।
ইনস্টিটিউটের চিফ কো-অর্ডিনেটর ডা. সামন্ত লাল সেন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ইনস্টিটিউটের কাজ প্রায় শেষ। এখন সীমানা প্রাচীর নির্মাণের পাশাপাশি ভবনের শেষ সময়ের ঘষা-মাজার কাজ চলছে। তিনি বলেন, কাজ শেষ বললেই চলে। ভবনের কিছু অংশে আস্তর ও রংয়ের কাজ চলছে। কয়েকদিনের মধ্যে বাকী কাজ শেষ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, ২৪ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভবনটির উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধন শেষে এটিই হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট। সব ধরণের দগ্ধ রোগীর চিকিৎসা ছাড়াও এখানে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিষয়ক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। তিনি আরও বলেন, এটি দেশে ও বিদেশে আধুনিক ও উন্নত চিকিৎসার একটি অনন্য প্রতিষ্ঠান হবে। উদ্বোধনের ৬ মাসের মধ্যে তথা আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে এখানে চিকিৎসা সেবা দেওয়া শুরু হবে।
ঢামেক সূত্রে জানা গেছে, বার্ন ইউনিট, প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট ও একাডেমিক উইং এই তিনটি ব্লক থাকবে ইনস্টিটিউটটিতে। এতে পোড়া রোগীদের জন্য থাকছে ৫০০টি শয্যা, ১০০টি কেবিন। ৫৪ ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট, ৬০ শয্যাবিশিষ্ট হাইডেফিসিয়েন্সি ইউনিট, ১০টি মডিউলার অপারেশন থিয়েটার এবং অত্যানুধিক পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জরুরিভাবে রোগী নিয়ে আসার জন্য ভবনের ছাদে হেলিপ্যাড সুবিধা থাকছে। সোলার প্যানেল ও বৃষ্টির পানি সঞ্চয়েরও ব্যবস্থা থাকবে। পার্কিংয়ে একসাথে ১৮০টি গাড়ি রাখা যাবে। ঢামেক হাসপাতালের পুরাতন ভবনের সঙ্গে একটি ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে ইনস্টিটিউট ভবনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা হবে।
বার্ন ইউনিট সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার চিকিৎসা সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম কেনার কাজ শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ যন্ত্রপাতি জার্মানি থেকে, এ ছাড়া ইংল্যান্ড, আমেরিকা ও কানাডা থেকে কিছু সরঞ্জাম আনা হবে। ইতোমধ্যে ৪৫ থেকে ৫০ কোটি টাকার সরঞ্জাম আনা হয়েছে।
গতকাল সরেজমিনকালে দেখা গেছে, ইনন্সিটিউট ভবনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। সীমানা প্রাচীরে আস্তর ও ভবনের কিছু অংশে ঘষামাজা ও রংয়ের কাজ চলছে। এ ছাড়া ভবনের ভেতরে টাইলস ও ফ্যান, লাইট ও এসিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম লাগানোর কাজ চলছে। পুরো ভবনের সামনের অংশে সৌন্দর্য্যবর্ধক স্টিলের ইস্পাত লাগানোর কাজ শেষের দিকে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, এখানে চিকিৎসা সেবা ও শিক্ষা কার্যক্রম একসঙ্গে চলবে। একটি সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার থাকবে। ইতিমধ্যে গ্রন্থাগারের জন্য ৬ কোটি টাকার বই কেনা হয়েছে।
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে মাত্র পাঁচটি শয্যা দিয়ে আমি চাকরি জীবন শুরু করেছিলাম। সময়ের পরিক্রমায় সেই বার্ন ইউনিট এখন একটি পূর্ণাঙ্গ ইনস্টিটিউট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদন করা হয়। ২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল ১৮ তলা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৭ এপ্রিল সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর প্রাথমধাপে নির্মাণ কাজ শুরু করে। নির্মাণ কাজ এ বছর ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। এর প্রকল্প ধরা হয়েছে ৫২২ কোটি টাকা। এ ছাড়া জনবল নিয়োগের জন্য প্রায় ২ হাজার ২০০ পদের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাকিল আহমেদ বলেন, ভবন নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি কেনাসহ পুরো প্রকল্পের জন্য প্রায় ৯১২ কোটি টাকা বাজেট ধরা হয়েছে। এর মধ্যে নির্মাণ কাজে ৫০০ কোটি টাকা, চিকিৎসা সংক্রান্ত যন্ত্রপাতিতে ৩০০ কোটি ও অন্যান্য কাজে ১০০ কোটি খরচ ধরা হয়েছে। এছাড়া ৬টা অ্যাম্বুলেন্স, ১টা জিপ, ১টি কার ও বাসসহ মোট ১২টি গাড়ি কেনা হবে। এর মধ্যে কাজের শুরুতে একটি মাইক্রোবাস কেনা হয়েছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আন্তরিকতা ও দক্ষতায় নির্ধারিত সময়ের আগেই নির্মাণ কাজ শেষের দিকে। ২৪ অক্টোবর প্রমানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। এর আগেই অবশিষ্ট কাজ শেষ হয়ে যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।