নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিশেষ সংবাদদাতা : শেষ বলে তাইজুলের ছক্কায় অবিশ্বাস্য ‘টাই’ এর ঘটনা এখনো বাসি হয়নি। মাত্র ২ দিন আগে বিকেএসপির সেই ছবিটিই যেনো গতকাল মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ফিরিয়ে আনলেন গতকাল মোক্তার আলী! শেষ বলে টাই এর জন্য চাই বাউন্ডারি, জয়ের জন্য ছক্কা। তাসকিনের ওই ওভারের প্রথম বলে পেরেরা রান আউট, শ্লগে শেখ জামালকে স্বপ্ন দেখানো নাজমুস সাদত পরের বলে বোল্ড! শেষ ওভারে ৭ রানের সহজ টার্গেট পাড়ি দিতে যেয়ে উল্টো ব্যাকফুটে শেখ জামাল। পরের ডেলিভারীটি বীমার হয়েও ‘নো’ তে গণ্য না হওয়ায় এবং পরের ২ বলে ১ রানের বেশি নিতে না পারায় আবাহনী সমর্থকরা আগাম উৎসব শুরু করে দিয়েছে। ‘টাই’ করতে হলে মারতে হবে বাউন্ডারি, আর জয়ের জন্য ছক্কা! এটা দুঃসাধ্য ধরে নিয়েই ঝুঁকিটা নিয়েছিলেন মোক্তার আলী। তাসকিনের ফুলটস ডেলিভারিকে লং অনের উপর দিয়ে ছক্কায় ৩০ বছর আগে সারজায় চেতন শর্মাকে জাভেদ মিয়াঁদাদের সেই ছক্কার কথাই যেনো মনে করিয়ে দিলেন মোক্তার আলী ! রোমাঞ্চকর ম্যাচে ওই ছক্কাতেই হৃদস্পন্দন থেমে গেলো কাগজে কলমে সেরা দল আবাহনীর। আর ওই ছক্কায় ৪ উইকেটের নাটকীয় জয়ে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে উঠে এলো শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব (২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট)।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ২৮৭/৪ স্কোর কম নয়। তামীমের ফর্মে ফেরা ৯০ রানের ইনিংস (৯১ বওে ১১ চার) এবং তিন ইনফর্ম ব্যাটসম্যান উদয় কাউল (৬৩), নাজমুল হোসেন শান্ত (৫২) ও মোসাদ্দেক সৈকতের (২৯ বলে ৪৬) ঝড়ো ব্যাটিংয়ে প্রত্যাশিত পুঁজিই পেয়েছে আবাহনী। অথচ কি জানেন, এই স্কোর তাড়া করতে এসে মাহাবুবুল করিম মিঠুর ব্যাটিংয়ের দর্শক আবাহনী। কিছুই মানেননি এই টপ অর্ডার। ৮ বছর আগে ভারতের বিদ্রোহী ক্রিকেট লীগে ঢাকা ওরিয়র্সের হয়ে খেলে নিজেকে হারিয়ে ফেলা মিঠুর ব্যাটিংয়ের দর্শক পার্টনার ব্যাটসম্যানরাও। বাধ্যতামূলক পাওয়ার প্লে’র প্রথম ১০ ওভারেই ম্যাচে এগিয়ে যাওয়ার দায়িত্বটা নিয়েছেন (১০ ওভার শেষে আবাহনীর ৪৩/০’র বিপরীতে শেখ জামালের ৭১/১)। মাত্র ৩০ বলে ফিফটি, আবুল হাসান রাজুকে স্কোয়ার কাটে বাউন্ডারি শটে ৮১তম বলে সেঞ্চুরি ! ৬৫রান থেকেই মাসল পুল করেছে, সিঙ্গল,ডাবলসের জন্য দৌড়ানো কঠিন হয়ে পড়েছে মিঠুর। তারপরও অবিচল। ১৫ চার ৫ ছক্কায় ১১০ বলে ১৩০ রানের ম্যাচ উইনিং ইনিংসে মাতিয়েছেন মিরপুর। প্রিমিয়ার ডিভিশনে সর্বশেষ সেঞ্চুরি করেছিলেন মাহাবুবুল ২০০৪-৫ মওশুমে,ভিক্টোরিয়ার হয়ে, ১১ বছর পর দেখা পেলেন পরবর্তী সেঞ্চুরির।
আবাহনীর লেগ স্পিনার জুবায়েরকে এক্সট্রা কভারের উপর দিয়ে যেভাবে ছক্কা মেরেছেন, তা দেখে মাথায় হাত না দিয়ে উপায় কি বলুন? প্রথম জুটিতে ৬৭,দ্বিতীয় জুটিতে ১৩১ রানে নেতৃত্বটা তারই। যখন ফিরে এসেছেন, তখন জয়ের জন্য শেখ জামালের টার্গেট ৭৩ বলে ৭২। অথচ কি জানেন, সুবিধাজনক অবস্থায় দলকে রেখে এসে লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটি ¤øান হওয়ার শংকাই বাসা বেধেছিল এই ওপেনারের। শেষ ২ ওভারে ২১ রানের টার্গেটের মুখে শেখ জামালকে ফেলে দিয়ে জয়ের স্বপ্নই বরং দেখেছে আবাহনী। ৪৯তম ওভারে আবুল হাসান রাজুকে বাগে পেয়ে নাজমুস সাদতের চার-ছক্কায় ১৪ রানে ম্যাচ জয়ের সম্ভাবনা দেয় উঁকি। বাকি কাজটুকুর জন্য শেষ বল থ্রিলারে মোক্তার আলীর ছক্কা উপহার! এই বাজে ফিল্ডিং,একটি ওভার থ্রোতে বাউন্ডারি, ২টি সহজ ক্যাচ ড্রপের মাশুলও দিতে হয়েছে আবাহনীকে।
১১ বছর পর প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে সেঞ্চুরি। তবে এই সেঞ্চুরির পথে অধিনায়ক মাহামুদুল্লাহ’র অনুপ্রেরনাকেই বড় করে দেখছেন মাহাবুবুল করিম মিঠুÑ ‘অধিনায়কের কথা ছিল, ওভার প্রতি পাঁচ ছয় করে নাও। আর অধিনায়ক আমাকে সাপোর্ট করে বলেছে, তুমি তোমার মত ফ্রি খেল।’ জাতীয় দলের দরজায় যখন নাড়ছেন কড়া, তখন ঢাকা ওরিয়র্সের ব্যানারে ভারতের বিদ্রোহী ক্রিকেট লীগ আইসিএলএ খেলে যে প্রকান্তরে নিজের ক্ষতিটা ডেকে এনেছেন, সে অপরাধ এখনো তাড়িয়ে বেড়ায় মাহাবুবুল করিম মিঠুকে। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার ২৯ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের। নিজেকে তাই অপরাধী ভাবেন মিঠুÑ‘আইসিএল না খেললে হয়তো হতেও পারতো। আমার স্বপ্ন ছিল লিজেন্ড খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলবো। এজন্যই এখনো অপরাধী মনে হয়।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।