পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে বেশি করে ডিম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে দেশের অপুষ্টির চিত্র আমূল পাল্টে যাবে। জনগণের মাঝে সচেতনতা গড়তে সরকারি ও বেসরকারি গণমাধ্যমকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। গতকাল বিশ্ব ডিম দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিল বৈঠকে পোল্ট্রির নানাবিধ উপকারিতার কথা তুলে ধরা হয়। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এ বৈঠকের আয়োজন করে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক বলেন, ডিম খাওয়ার কোন বয়স নেই। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই ডিম খেতে পারেন। তিনি বলেন, প্রান্তিক খামারিদের জন্য সিঙ্গেল ডিজিটে ক্ষুদ্র ঋণ এবং কৃষি রেটে বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা ভাবছে সরকার। ডা. হীরেশ ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশনের আদলে বাংলাদেশেও একটি এগ কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন। নকল ডিম উৎপাদন বিষয়ে বলেন, এটি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন সম্ভব নয়।
বিপিআইসিসি’র সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, চাল, চিনি, দুধ, আটা এমনকি লবনের বিজ্ঞাপনও গণমাধ্যমে প্রচারিত হয় কিন্তু সাধারনত ডিমের কোন বিজ্ঞাপন দেখা যায়না আমাদের দেশে। ডিম বিক্রি থেকে যে লাভ পাওয়া যায় তা দিয়ে বিজ্ঞাপন প্রচারের খরচ বহন করা সম্ভব নয়। তাই একাজে তথ্য মন্ত্রণালয়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাচ্চারা যেন সপ্তাহে অন্তত দু’টি ডিম খায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে সরকারিভাবে উদ্যোগ নিতে হবে।
ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, ডিমের চাহিদা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। বিপিআইসিসি’র হিসাব মতে দেশে বর্তমানে ডিমের বাণিজ্যিক উৎপাদন দৈনিক প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে বাণিজ্যিক উৎপাদন এবং গৃহপালিত মুরগি, হাঁস ও কোয়েল পাখির ডিম হিসাব করলে দৈনিক গড় উৎপাদন ৪ কোটি ৭১ লাখের ওপরে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ডিম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৬৬৫ কোটি পিস। এর মধ্যে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর -এই তিন মাসে ডিমের মোট উৎপাদন হয়েছে ৪৩৩ দশমিক ৫৩ কোটি পিস। চলতি অর্থবছরে প্রায় ১১ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকারও অধিক ডিম কেন্দ্রিক বাণিজ্য হবে বলে আশাকরা হয়।
কীনোট স্পীকার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোল্ট্রি সায়েন্স বিভাগের প্রফেসর ড. মো. শওকত আলী এবং বারডেম হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন নাহার নাহিদ বলেন, ডিম নিয়ে আমাদের সমাজে অনেক ভুল ধারনা প্রচলিত আছে কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞান বলছে ডিম হার্টের জন্য উপকারি, ডিম খেয়ে ওজন কমানো যায়, ব্রেন ডেভেলপমেন্ট এবং হাড় মজবুত করতে ডিম অত্যন্ত কার্যকর। ডায়াবেটিসের রোগিরাও ডিম খেতে পারবেন। অনেকে ডিমের কুসুম না খেয়ে সাদা অংশ খান এতে তাঁরা ডিমের পরিপূর্ণ পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এছাড়াও গতকাল রাজধানীর পল্টন টাওয়ারে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) হল রুমে দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ এনিমেল এগ্রিকালচার সোসাইটিসহ এ খাতের কয়েকটি সংগঠন সেমিনারের আয়োজন করে। এতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ এনিম্যাল এগ্রিকালচার সোসাইটির (বিএএএস) সভাপতি এবং এক্সেল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ মো. মোরশেদ আলম, রেনেটা এগ্রো ইন্ড্রাস্টিজ রিমিটেডের ব্যবস্থাপক খালিদ দীন আহমেদ, পুর্ণভা’র মার্কেটিং ম্যানেজার ড. লাবনি আহসান প্রমুখ। সেমিনারে বলা হয়, গত ১০ বছরে ডিমের উৎপাদন বেড়েছে তিনগুণের বেশি। বাংলাদেশে ডিম উৎপাদনে বেশি সফলতা দেখিয়েছে সম্প্রতি সময়ে।
অনুষ্ঠানে হঠাৎ করে ডিমের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে মো. মোরশেদ আলম জানান, বছর ব্যবধানে ডিমের দাম বেড়েছে ঠিকই কিন্তু এতে খামারারী লাভের মুখ দেখতে পারছে না। কারণ এক বছর ধরে এখাতের কাঁচামালের দাম বেশি ছিল। যা এখনো বিদ্যমান। এরসঙ্গে ডিমের ভালো দাম পায়নি খামারিরা। ফলে অনেক খামারি উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। তবে বর্তমানে কোরবানির মাংসের মজুদ কমায় এবং ইলিশ বিক্রি বন্ধ থাকায় আবার ডিমের চাহিদা বেড়েছে। আর এই চাপের কারণেই চাহিদার সঙ্গে সরবরাহের বড় ঘাটতি তৈরি হয়েছে। তাই এখন বাড়তি দাম দিয়ে ডিম কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। তিনি বলেন, ডিমের ভালো দাম পেয়ে অনেকে খামারে নতুন করে মুরগি ওঠাচ্ছেন। ফলে ধীরে ধীরে দাম আবার স্বাভাবিক হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।