Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ধর্মঘটে পণ্য পরিবহন-মালিক শ্রমিক ভোগান্তিতে মানুষ

ট্রাক ধর্মঘটে বাস চলাচলও কমেছে

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

সদ্য পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইনের সংশোধনসহ ৭ দফা দাবিতে বাংলাদেশ পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ঢাকা বিভাগসহ সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করছে। এ ধর্মঘটের কারনে রাজধানীতে যাত্রীবাহী বাসও কম চলাচল করে। আর এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
সড়কে ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে প্রাণহানি ঘটালে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে গত ১৯ সেপ্টেম্বর সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ জাতীয় সংসদে পাস হয়। আইনে কোনো ব্যক্তির বেপরোয়া ও অবহেলাজনিত গাড়ি চালানোর কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে এবং সেই দুর্ঘটনায় কেউ আহত বা নিহত হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদন্ড বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এ আইনটি শিথিলের দাবি জানিয়ে আসছেন চালক-শ্রমিকরা। এ ধারাবাহিকতায় গতকাল সকাল থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় একযোগে আন্দোলন শুরু করে পন্যপরিবাহী ট্রাকচালকরা। আর এতে যোগ দিয়েছেন রাজধানীর গণপরিবহণ শ্রমিকরাও।
জানা গেছে, আন্দোলনের মুখে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বাসস্টান্ড থেকে সকালে ছেড়ে যায়নি বনশ্রীগামী স্বাধীন পরিবহণের কোনো বাস। একইভাবে বন্ধ রয়েছে মেশকাত, মৈত্রী, দীপন ট্্রান্সপোর্ট, এটিসিএল, এফটিসিএল, প্রজাপতি পরিবহণের বিভিন্ন রুটের বাস। সকাল থেকে মোহাম্মদপুর বিআরটিসি ডিপো থেকে বাস চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও বেলা ১০টা নাগাদ তাও বন্ধ হয়ে যায়। তবে বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ পুনরায় চালু হয় বিআরটিসির বাস চলাচল। বাসের অপেক্ষায় বাসস্ট্যান্ডগুলোতে দেখা গেছে সাধারণ যাত্রীদের ভিড়। বাস না পেয়ে অনেকেই খুজছেন বিকল্প। রিক্সা, অটোরিকশা ও রাইড শেয়ারিং সার্ভিসে গুনছেন বাড়তি ভাড়া।
এদিকে রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বর, ২ নম্বর ও ১০ নম্বর এলাকাজুড়ে গণপরিবহন স্বাভাবিকের তুলনায় কম। একইভাবে গণপরিবহন সংখ্যা কম দেখা গেছে বাংলামোটর, শাহবাগ, মগবাজার ও মিরপুর রোডে। তবে গণপরিবহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল রাজধানীর সায়েদাবাদ, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী অংশে।
বাংলাদেশ পণ্য পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক মুকবুল আহমদ বলেন, গত ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে সড়ক পরিবহন আইন নামে যে আইন পাশ করা হয়েছে তাতে বাংলাদেশের পণ্য পরিবহনসহ সকল পরিবহন মালিক-শ্রমিক এমনকি এই সেক্টরের সকল জনগৌষ্ঠীকে হত্যা মামলার আসামী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পণ্য পরিবহন সেক্টর স্বাধীনতা পরবর্তী অদ্য পর্যন্ত একটি সেবামূলক খাত হিসেবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এই খাতে বর্তমানে কম বেশী প্রায় আড়াই কোটি জনগোষ্ঠী প্রত্যেক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। এই বিশাল জনগৌষ্ঠীর মতামত না নিয়ে সরকার একতরফাভাবে কিছু মহলের চাপে আইনটি জাতীয় সংসদে পাশ করে।
তিনি আরো বলেন, এই আইন দিয়ে একটি বিশাল জনগৌষ্ঠীকে আসামী করে সড়ক দূর্ঘটনা ঠেকানো যাবে না। প্রয়োজনে আমাদের মতামতসহ গবেষনার মাধ্যমে সঠিক কারন চিহ্নিত করতে হবে। সড়ক মহাসড়কের টেকসই ও দীর্ঘ মেয়াদী সংস্কার করতে হবে। মহাসড়কের পাশে কোন প্রকার বাজার দোকানপাট রাখা যাবে না। মহাসড়কে পথচারী চলাচল নিয়ন্ত্রন করতে হবে।
সদস্য সচিব মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, নসিমন ও করিমনসহ তিন চাকার সকল যান এবং ধীর গতির যান বাহন মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী জনবহুল এলাকায় ফুটওভার ব্রীজ নির্মান করতে হবে। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে- সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধন করা; সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০২ ধারায় মামলা গ্রহণ না করা; ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান বাতিল ও জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করা; টাঙ্গাইল জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সদস্য হাসমত আলীসহ মালিক ও শ্রমিক মুক্তি, পুলিশের হয়রানি বন্ধ করা, গাড়ির কাগজপত্র চেকিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধাসংবলিত ট্্রাক টার্মিনাল বা স্ট্যান্ড নির্মাণ করা, গাড়ির মডেল বাতিল করতে হলে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেয়া, সহজ শর্তে ভারী যানবাহন চালককে ভারী লাইসেন্স দেয়া ও এর আগপর্যন্ত হালকা বা মধ্যম লাইসেন্স দিয়ে ভারী যানবাহন চালানোর সুযোগ দেয়া, সারা দেশে গাড়ির ওভারলোডিং বন্ধ করা এবং ফুটপাত, ওভারব্রিজ, আন্ডারপাস ও জেব্রাক্রসিং ব্যবহার নিশ্চিত করা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্মঘট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ