Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

‘সেন্টমার্টিন’ মিয়ানমারের!!

ঢাকার কড়া প্রতিবাদ : রাষ্ট্রদূতকে তলব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৫ এএম

রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুর সুরাহা না হতেই নতুন করে ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছে মিয়ানমার। বাংলাদেশের সমুদ্র সৈকত সেন্টমার্টিনকে মিয়ানমার নিজেদের বলে দাবি করার চেষ্টা করছে। এ নিয়ে প্রচারণাও চালাচ্ছে। বিষয়টি জানতে পেরে ঢাকায় কর্মরত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও’কে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে একটি কূটনৈতিক চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল মন্ত্রণালয়ের সচিব (সমুদ্র বিষয়ক) অবসরপ্রাপ্ত নৌ কর্মকর্তা মোঃ খুরশেদ আলমের দফতরে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও’কে তলব করা হয়। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও’কে ডেকে এনে বলা হয়েছে, মিয়ানমার সরকার গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে চাচ্ছে। মিয়ানমার ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশের সেন্টমার্টিনের কিছু অংশ বৈশ্বিক অঙ্গণ নিজেদের বলে প্রচার করছে, যা খুবই আপত্তিজনক। মিয়ানমার যদি এমন আপত্তিজনক কাজ চালিয়ে যেতে থাকে তবে এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। এ সময় রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও’র হাতে একটি কূটনৈতিক চিঠি ধরিয়ে দেওয়া হয়। যাতে সেন্টমার্টিন যে বাংলাদেশের অংশ তার পুঙ্খানুপুঙ্খ প্রমাণ রয়েছে। পাশাপাশি ওই চিঠিতে মিয়ানমারের এমন আপত্তিকর কাজের জবাবও চাওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমার ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের ২০১৫-২০১৮ সালের ম্যাপে আমাদের সেন্টমার্টিন দ্বীপকে তাদের সীমানার অংশ দেখানো হচ্ছে। বিষয়টা বাইরের ম্যাপটা দেখলে বোঝা যায় না। কিন্তু ভেতরে ঢুকলে বিষয়টা স্পষ্ট হয়। আমরা মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে এর কড়া প্রতিবাদ করেছি। বলেছি, এটা ঠিক নয়, তোমরা এটা ঠিক করো।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়, সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের অংশ। তার পুঙ্খানুপুঙ্খ প্রমাণও রয়েছে। পাশাপাশি ওই চিঠিতে মিয়ানমারের এমন আপত্তিকর কাজের জবাবও চাওয়া হয়। সেন্টমার্টিন দ্বীপের কিছু অংশ নিজেদের দাবি করে নতুন করে বিতর্কে জড়ালো মিয়ানমার। এর আগে গত বছর আগস্টে রাখাইনের বেশ কয়েকটি পুলিশ ও সেনাপোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিরীহ রোহিঙ্গাদের উপর নির্মম অভিযান চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। অভিযানের নামে সেখানে হত্যা, ধর্ষণ ও নিপীড়ন চালায় সেনা সদস্যরা। মিয়ানমারের নিপীড়ন থেকে বাঁচতে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে চুক্ত হলেও গত এক বছরেও একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি মিয়ানমার। আন্তর্জাতিক মহল মিয়ানমারের ওপর চাপ দিয়েই যাচ্ছে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মিয়ানমার মুখে সব কথা রাখে কিন্তু কাজের বেলায় কোনো কিছুই করে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারকে নিরাপত্তা দিয়েই ফিরিয়ে নিতে হবে।
এদিকে, রোহিঙ্গা ইস্যু যথাযথ সমাধান না করায় মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচির সম্মানসূচক নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়েছে কানাডা। আন্তর্জাতিক মহলের কাছে কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন নোবেল জয়ী অং সান সুচি।
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে না নেয়ায় বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের তিক্ততা চলছে। এখন বাংলাদেশের অংশ সেন্টমার্টিন দ্বীপ নিয়ে মিয়ানমারের এমন হঠকারী আবদার দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্কের তিক্ততা আরও বাড়িয়ে দেবে। যা আন্তর্জাতিক মহলও ভালভাবে নেবে না।



 

Show all comments
  • Sirajul Islam Salim ৭ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৬ পিএম says : 0
    মিয়ানমান ভাবছে, ভারত প্রতিবেশী হয়ে বন্দর নিলো, টানজিট নিলো, পানি নিলো, তালপট্টি দ্বীপ নিলো। মিয়ানমার প্রতিবেশী হয়ে শুধু সেন্টমার্টিন দাবিও করতে পারবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Masum Paloan ৭ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:১৩ পিএম says : 0
    নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে এই অবস্থা , মিয়ানমারের মত দেশ ও আজকে ফাল পাড়ে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সেন্টমার্টিন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ